ফেব্রিক ফার্নিচারের যত্ন নেওয়ার পাঁচটি উপায়

আমাদের রোজকার জীবনের সব কটি অধ্যায়ের সাথে যে একটি আসবাব সব সময় জড়িয়ে থাকে সেটি হলো সোফা। যেমন বাড়িতে আসা অতিথিদের বসতে দিতে সোফা প্রয়োজন, পারিবারিক জমায়েতে জম্পেশ আড্ডার জন্যও সোফা, একসাথে বাসার সবাই বসে আড্ডা দিতেই হোক বা আলোচনাই হোক কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের খাতিরে আবার একত্র হতেই পারি সবাই মিলে নাটক বা সিনেমা দেখতেসব কটিতেই সোফা হচ্ছে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় আসবাব৷ আবার ম্যাগাজিন হাতে এক কাপ চা নিয়ে সোফাতেই গা এলিয়ে দিয়ে বসে পড়ি আমরা। এ জন্যই বলছিলাম সবগুলো অধ্যায়ের সাথে সোফা জড়িয়ে আছে। 

এই সোফাকাউচ বা ডিভান আমাদের রোজকার জীবনে যেমন প্রয়োজনীয় একই সাথে আমাদের রুচির পরিচয়ও বহন করে। ঘর বা অফিসের সাজের ধরনটা পুরোটাই নির্ভর করে কী ধরনের সোফা নির্বাচন করছি তার ওপর। আধুনিকতা, আভিজাত্য, আরামদায়কতা, রুচিশীলতা সব কটি দিক বিবেচনা করে জনপ্রিয়তা বেড়েছে ফেব্রিক ফার্নিচারের। তারপরও অনেকেই ভেবে থাকি হয়তো ফেব্রিক ফার্নিচারের যত্ন নেওয়াটা খুব সহজ হবে না। এই ভীতি থেকে অনেক সময়ই ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও পছন্দের আসবাবটি কেনা হয় না। যেমন হাতিলের Cardiff-253, Flare -320, Angelina-179, Apostrophe 316 এই সোফাগুলো একবার দেখলেই যে কারো কিনতে ইচ্ছে করবে। কিন্তু তারপরও সন্দিহান হয়ে যাই আমরা,” কিনব নাকি মেইনটেইন করতে হিমশিম খাব?” কিন্তু কয়েকটা সাধারণ বিষয় নিয়ে সচেতন সবার পক্ষেই সম্ভব ফেব্রিক ফার্নিচারের যত্ন নেওয়া। 

কথা যেন আর ফুরোবার নয় 

 

রোদ-বৃষ্টি থেকে দূরে

ফেব্রিকের ফার্নিচার কখনো সরাসরি সূর্যের আলো আসে বা বৃষ্টির পানিতে ভিজে যেতে পারে, এমন জায়গায় রাখা যাবে না। সরাসরি সূর্যের আনফিল্টারড অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে অল্প দিনেই ফেব্রিকের রং চটে যাবে। তাই জানালার পাশে বা বারান্দায় আসবাবটি রাখা হলে দিনের বেলায় পর্দা দিয়ে রাখতে হবে, যেন সূর্যের আলো সরাসরি সোফায় বা কাউচে না লাগে। আবার বৃষ্টির পানি ছিটে আসতে পারে এমন জানালার পাশে আসবাবটি রাখা হলে বৃষ্টির দিনে খুব সতর্ক থাকতে হবে জানালা বন্ধ করা নিয়ে। তার মানে কিন্তু একদমই এমন নয় যে আসবাবটি আলো-বাতাসহীন বদ্ধ ঘরে রেখে দেবেন। আসবাবের যত্নে আলো-বাতাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । পর্যাপ্ত আলো-বাতাস চলাচল না করলে বা ঘর স্যাঁতসেঁতে থাকলে ঘরের সব আসবাবই নষ্ট হয়ে যাবে। কারণ, আসবাব ভালো থাকার জন্য ঘরের তাপমাত্রা,আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। 

মিলনমেলা তো এমনই হয় 

 

নিয়মিত পরিচর্যা 

আসবাবপত্রের যত্নে নিয়মিত পরিচর্যা ভীষণ জরুরি। নিয়মিত পরিচর্যা বলতে বোঝায় নিয়মিত পরিষ্কার করা। সপ্তাহে অন্তত একবার ভ্যাকিউম ক্লিনার দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। নরম কাপড় দিয়ে মুছতে হবে। ঘরে পোকামাকড় হলে সেটা দ্রুত নিধন করতে হবে। বেশি দিনের জন্য বাড়ির বাইরে গেলে ন্যাপথলিন বা সিলিকা জেল রাখা যেতে পারে সোফায়, এতে পোকামাকড় বা অণুজীবের সংক্রমণ ঘটবে না।  কখনোই সোফার হাতলে বসা যাবে না, সোফায় ভারী কিছু রাখা যাবে না। এতে ফেব্রিকে টান পড়বে, এবং কাপড় আগের মতো থাকবে না, ঢিলা হয়ে যাবে। এতে সোফা বা ডিভানের আকারে বিকৃতি ঘটবে। তাই বসার ক্ষেত্রে অন্তত এইটুকু মানতে হবে।  

 

দাগ থেকে সাবধান 

ফেব্রিকের আসবাবে কোনোভাবেই দাগ পড়তে দেওয়া যাবে না। এর জন্য সবচেয়ে বেশি জরুরি হলো মনোযোগ।  কখনোই নিজের হাত থেকে কিছু ফেলা যাবে না সোফায়, কখনোই সোফায় বসে খাওয়ার অভ্যাস করা যাবে না। চা, কফি বা অন্য পানীয় হাতে নিয়ে সোফায় বসার ক্ষেত্রে সব সময় সতর্ক থাকতে হবে।  দুর্ঘটনাবশত ছিটকে পড়তেই পারে কখনো কখনো, সে ক্ষেত্রে খুব দ্রুত মুছে ফেলতে হবে।  খুব সাবধানে পরিষ্কার করতে হবে, কোনো অবস্থাতেই ঘষে দাগ তোলার চেষ্টা করা যাবে না। আলতোভাবে সুতি, নরম কাপড় দিয়ে মুছতে হবে, মোছার জন্য পুরোনো কাপড় ব্যবহার করাই ভালো। পানি দিলে সতর্ক থাকতে হবে, কাপড় দিয়ে আলতোভাবে পানি শুষিয়ে নিতে হবে। কোনো অবস্থাতেই সাবানপানি ব্যবহার করা যাবে না। আর কাপড় ব্যবহারের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যেন কাপড়ের রং উঠে সোফা বা কাউচের গায়ে বসে না যায়, আর কাপড় থেকে লিন্ট বা শণ উঠলে সে কাপড়ও ব্যবহার করা যাবে না। ফেব্রিক ফার্নিচারের কাছে নেলপলিশ, নেলপলিশ রিমুভার, স্পিরিট, গ্লাস ক্লিনার, ভিনেগার বা এ-জাতীয় তরল পদার্থ ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। জরুরি প্রয়োজনে হাতিলের কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করে সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। হাতিলের হেল্পলাইনে যোগাযোগ করতে কল করতে হবে 09678777777 নম্বরে। 

হোক না সময়টা কেবল নিজের 

 

ধুলাবালি থেকে সাবধান

ধুলাবালি থেকে সাবধান থাকাটা ভীষণ জরুরি। কারণ ফেব্রিক অনেকখানি ধুলা আটকে রাখে। এ কারণেই সপ্তাহে অন্তত একবার ভ্যাকিউম ক্লিনার দিয়ে পরিষ্কার করা জরুরি। তবে আরও কিছু বিষয় খেয়াল রাখা প্রয়োজন। ঘরের সিলিং বা দেয়াল পরিষ্কার করতে গেলে অবশ্যই বড় কাপড় দিয়ে সব আসবাব ঢেকে রাখতে হবে। ঘর ঝাড়ু দেওয়ার সময়ও খুব সাবধানে ঝাড়ু দিতে হবে যেন ধুলা না উড়ে। এ জন্য ফ্যান বন্ধ রাখতে হবে। কখনো দীর্ঘ সময়ের জন্য বাড়ির বাইরে গেলে অবশ্যই বড় কাপড় দিয়ে সব আসবাব ঢেকে রাখতে হবে।  বছরে বা দুই বছরে একবার হাতিলের প্রফেশনাল ক্লিনিং সেবা নেওয়াটা প্রয়োজন। এ জন্য যোগাযোগ করতে হবে 09678777777 নম্বরে। 

 

আর যা যা মাথায় রাখব

ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ কখনোই সরাসরি ফেব্রিক ফার্নিচারের ওপর রাখা যাবে না। 

সোফা বা ডিভানে বসে ল্যাপটপ ব্যবহার করতে হলে প্রোটেক্টিভ প্যাডিং ব্যবহার করতে হবে। ধারালো খেলনা , গহনা, শোপিস, প্লেট এগুলো ব্যবহারের ক্ষেত্রে খুবই সাবধান থাকতে হবে। 

আসবাবটি স্থানান্তর করার সময় অবশ্যই তুলে সরাতে হবে। কখনোই ঠেলে সরানো যাবে না। 

কুশনে কভারগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। এবং কুশন ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ব্যবহার করলে ভালো।  ফেব্রিক ফার্নিচারের যত্নের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ এই কুশনের যত্ন।  

কেন করব এত যত্ন?

যেকোনো আসবাব কিনলেই আমরা ভেবে নিই এটা দীর্ঘ সময়ের সাথি হবে। কিছুদিন পরপর আসবাব পাল্টে ফেলা আমাদের লক্ষ্য না আসলে, এটা সাশ্রয়ীও নয়। সবকিছু টিকিয়ে রাখতে যত্নের প্রয়োজন। ব্যতিক্রমী নয় ঘরের আসবাবও। একটু খেয়াল রাখলেই আমরা দীর্ঘদিন সাথে রাখতে পারি আমাদের এই শখের আর প্রয়োজনের আসবাবগুলো। ফেব্রিকের আসবাবগুলোর যত্ন যেমন একদিকে সৌন্দর্য বা পরিচ্ছন্নতার জন্য প্রয়োজন একই সাথে সুস্থতার জন্যও প্রয়োজন। আর তাই সবার উচিত এই ছোট ছোট জিনিসগুলো মাথায় রাখা।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।