হোস্টেলের ঘর সাজানোর ৫টি সহজ উপায়

দীর্ঘদিন ছুটির পর ধীরে ধীরে খুলছে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বাড়ি থেকে দূরে পড়াশোনা করা শিক্ষার্থীদের ফিরতে হচ্ছে নিজেদের হোস্টেল বা ছাত্রাবাসে। এ ছাড়া নতুন বছরে নতুন শিক্ষার্থীরাও একে একে বাড়ি ছেড়ে থাকবে কোনো না কোনো ডরমিটরিতে। নিজের বাড়ি, পরিবার-পরিজন ছেড়ে হলে বা হোস্টেলে অনেকেই মানিয়ে নিতে হিমশিম খায়। এখানে দ্রুত মানিয়ে নেওয়ার একটি সহজ উপায় হলো হোস্টেলের রুমকে নিজের মতো করে সাজিয়ে নেওয়া। একটি সাজানো-গোছানো ঘর যেমন আপন আবহ সৃষ্টি করবে তেমনই হবে পড়াশোনার জন্য উপযুক্ত। হলে বা হোস্টেলে যেহেতু অনেক বিধিনিষেধ থাকে তাই সেসব মেনেই রুমের সাজসজ্জা করতে হবে। চলুন, জেনে নিই হোস্টেলের ঘর সাজানোর এমন ৫টি সহজ উপায়।

ফটোফ্রেমে দেয়াল

হোস্টেলে এসে অনেকেরই বাড়ির কথা, মা-বাবা, ভাই-বোনের কথা মনে পড়তে থাকে খুব বেশি। ফেলে আসা স্মৃতি মনে পড়তে থাকে। হোস্টেলের রুম সাজাতে ব্যবহার করতে পারেন পরিবারের সাথে প্রিয় মুহূর্তগুলো। পুরোনো ছবি ফ্রেম করে টাঙাতে পারেন একটি দেয়ালজুড়ে। ফ্রেম করে লাগানোর সুবিধা না থাকলে ছবিগুলো প্রিন্ট করে বিভিন্ন প্যাটার্নে দেয়ালে লাগাতে পারেন। আবার সুতোয় বেঁধেও ঝুলিয়ে দিতে পারেন ছবিগুলো। এতে প্রিয়জনের সাথে স্মৃতিগুলো চোখের সামনে থাকবে। রুমের ফাঁকা দেয়ালও সাজানো হবে সুন্দর করে।

আরামদায়ক হোস্টেল রুম

মেঝেকে আরামদায়ক করে তুলতে পেতে দিতে পারেন একটি নরম কার্পেট

বাসা ছেড়ে হোস্টেলে গিয়ে অনেকেরই মন টেকে না। অনেকে নিজের ঘরের মতো সুবিধা পান না। অনেকে আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন বিভিন্ন কারণে। এ জন্য নিজের হোস্টেল রুমটিকে প্রথমেই আরামদায়ক করে সাজানোটা খুব প্রয়োজন। শরীর ও মন সুস্থ রাখতে দরকার পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম। দিনের ধকল শেষে বিছানায় আরাম করে শোয়ার জন্য প্রয়োজন একটি আরামদায়ক ম্যাট্রেস। ম্যাট্রেসের পাশাপাশি বিছানার চাদর, কাঁথা, কম্বল, বালিশ এগুলোও রাখতে হবে আরামদায়ক। রুমকে আরামদায়ক করতে খেয়াল রাখতে হবে রঙের ব্যাপারটাও। পর্দা, বিছানা-বালিশের কভার ইত্যাদিতে ক্যাটক্যাটে কোনো রং ব্যবহার না করে হালকা নকশা ও হালকা রং ব্যবহার করাই ভালো। স্নিগ্ধ রংগুলো চোখে প্রশান্তি দেবে। আরামের জন্য মেঝেতেও পেতে দিতে পারেন নরম একটা কার্পেট। এতে মেঝেটাও ফুটে উঠবে দারুণভাবে। 

স্মার্টফিট ও মাল্টিফাংশনাল আসবাব

ড্রেসিং টেবিলের অভাব দূর করতে ব্যবহার করা যেতে পারে আয়নাযুক্ত মাল্টিফাংশনাল ওয়ার্ডরোব

হোস্টেল রুমের মতো ছোট জায়গায় স্মার্টফিট আসবাব ব্যবহারের জুড়ি নেই। অনেক সময় রুমে আগে থেকেই কিছু আসবাব থাকে। আবার কোথাও নিজেরই সব ব্যবস্থা করতে হয়। এ ক্ষেত্রে মাল্টিফাংশনাল আসবাব ব্যবহার করাই বেশি উপযোগী। সে ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে সহজে বহনযোগ্য হোস্টেল উপযোগী ফোল্ডিং খাট। রুমের কাঠামোতে অনেক সময় আলাদা একটি ড্রেসিং টেবিল রাখার জায়গা হয় না। তাই এমন একটি ওয়ার্ডরোব ব্যবহার করতে হবে, যেটির সামনে একটি আয়না আছে। এতে একটি আসবাবেই দুটির কাজ হবে। হাতিলের মডিউলার ওয়ার্ডরোবগুলো হোস্টেল রুমের জন্য বেশ উপযোগী। এ ছাড়া ফোল্ডিং পড়ার টেবিলচেয়ার ব্যবহারেও রুমটা হবে খোলামেলা। হোস্টেলে বড় ও ভারী আসবাব ব্যবহারের চেয়ে এ ধরনের ছোটখাটো আসবাব ব্যবহার করলে ঘরকে এলোমেলো ও ঘিঞ্জি দেখায় না।

হোস্টেলে স্টোরেজ সিস্টেম

হোস্টেলে গেলে স্বল্প ব্যবহৃত জিনিসপত্র নিয়ে বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়। হোস্টেল রুমে আলাদা স্টোরেজের ব্যবস্থা না থাকায় সেগুলোর কারণে রুম এলোমেলো হয়ে যায় সহজে। সে ক্ষেত্রে কিছু জিনিস গুছিয়ে রাখা যেতে পারে খালি সুটকেসগুলোকে। স্টোরেজসহ খাট থাকলে বাড়তি বালিশ, কাঁথা কিংবা শীতের পোশাক, কম্বল রাখা যেতে পারে খাটের স্টোরেজে। তা ছাড়া স্টোরেজ সিস্টেম না থাকলে খাটের নিচের খালি জায়গাটাকেও ব্যবহার করা যায় সহজে। আবার, পড়ার টেবিলের নিচে কিংবা আলমারির ওপরটাতেও বিভিন্ন জিনিস রাখা যেতে পারে ছোট ছোট বাক্সে ভরে। ছোট ছোট জায়গাগুলোকে স্টোরেজ হিসেবে ঠিকমতো ব্যবহার করতে পারলে রুম দেখাবে বেশ খোলামেলা।

হোস্টেলে ইনডোর প্ল্যান্ট

ইনডোর প্ল্যান্টের টবগুলো রাখা যেতে পারে বুকশেলফেও

সবুজের কাছাকাছি থাকলে শরীর ও মন সব সময় সতেজ থাকে। আর হোস্টেলে সুস্থ থাকাটা খুবই প্রয়োজন। তাই রুমে রাখা যেতে পারে ইনডোর প্ল্যান্ট। এমন ইনডোর প্ল্যান্ট রাখতে হবে, যেগুলোর দেখভাল করা সহজ। মাটির টব ছাড়াও সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে সিরামিকের টব। রুমে বারান্দা থাকলে সেখানে রাখা যেতে পারে টবগুলো। তা ছাড়া জানালার কার্নিশে, বেডসাইড টেবিলে, পড়ার টেবিলের এক কোণে বা বুকশেলফে শোভা পেতে পারে ছোট্ট ইনডোর প্ল্যান্টের টব। আবার ছোট আকারের টবগুলো আংটার সাহায্যে ঝুলিয়ে দেওয়া যেতে পারে সিলিংয়ে বা দেয়ালে। রুমের ভেতর সবুজ যেমন রুমের শোভা বাড়াবে, তেমনি আনবে স্নিগ্ধতা। 

হোস্টেলের রুমে যদি একাধিক রুমমেট থাকে তাহলে তাদের সাথে বোঝাপড়া করে রুম সাজানোটাই ভালো। পুরো রুম নিজের হলে রুমটাকে নিজের মতো করে সাজিয়ে তোলা যায়। ডর্ম রুম সাজানোর এই উপায়গুলো আপনাদের জন্য কতটুকু কার্যকর, তা জানাতে পারেন কমেন্টে।

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।