কাঠের ফার্নিচার পরিষ্কার করার উপায় কাঠের ফার্নিচার পরিষ্কার করার উপায়

কাঠের ফার্নিচার পরিষ্কার করার উপায়

কাঠের ফার্নিচার অন্য সবকিছুর চেয়ে বেশি করে বাড়ির সৌন্দর্য বাড়ায়। কাঠ এমনিতে বেশ টেকসই হলেও নিয়মিত পরিষ্কার না করলে অল্পতে রঙ চটে বার্ণিশ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এছাড়া কাঠের পোকা ও জলীয় বাষ্পের প্রভাব তো আছেই। তাই এই ব্লগে আমরা কাঠের ফার্নিচার পরিষ্কারের বিভিন্ন উপায় এবং প্রয়োজনীয় উপকরণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

কাঠের ফার্নিচার ঘন ঘন পরিষ্কার করা লাগে কেন?

কাঠের ফার্নিচারে ধূলা জমে যাওয়া স্বাভাবিক। এই ধূলা ফার্নিচারের চকচকে ভাব নষ্ট করে এবং এর আয়ু কমিয়ে দেয়। এর সাথে যখন খাবার, পানি বা অন্যান্য লিকুইড পদার্থের দাগ পড়ে কাঠের ফার্নিচারকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। শুধু তাই নয়, ধূলায় বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণু থাকে যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এসব কারণে নিয়মিত পরিষ্কার করে কাঠের উপর ধুলো ও পোকামাকড় বসতে দেওয়া যাবে না।

কাঠের ফার্নিচার পরিষ্কার করতে কি কি উপকরণ প্রয়োজন?

খুব সহজে নিয়মিত পরিষ্কারের মাধ্যমে আপনি কাঠের ফার্নিচারের আয়ু অনেক বছর বাড়াতে পারবেন। এতে তেমন খরচ নেই। একমাত্র লিকুইড ক্লিনার ছাড়া বাকি সবকিছুই নিজের বাড়িতে পাবেন। মূল উপকরণগুলো হলো—

  • নরম কাপড়: মাইক্রোফাইবার কাপড় সবচেয়ে কোমল হয়।
  • ভ্যাকুয়াম ক্লিনার: কোনো ঘষামাজা ছাড়া ধূলা দূর করতে পারে।
  • কাঠ পরিষ্কারের লিকুইড: বাজারে বিভিন্ন ধরনের কাঠের পরিষ্কারের লিকুইড পাওয়া যায়।
  • লেবুর রস: কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বিহীন প্রাকৃতিক পরিষ্কারক।
  • অলিভ অয়েল: কাঠের চকচকে ভাব ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।
  • বেকিং সোডা: বাজেভাবে পড়া দাগ দূর করতে সাহায্য করে।

খুব সতর্কভাবে উপরের জিনিসগুলো দিয়ে কাঠের উপরে পড়ে থাকা দাগ ও আস্তরণ মুছে নিতে পারবেন। কিভাবে করলে ফার্নিচারের কোনো ক্ষতি হবেনা সেটা নিয়ে পরের সেকশনে থাকছে আলোচনা!

কিভাবে সঠিকভাবে কাঠের ফার্নিচার পরিষ্কার করবেন?

কাঠের ফার্নিচার পরিষ্কারে খুব বেশি সরঞ্জাম লাগে না। ভ্যাকিউম, কাপড়, লেবু, ভিনেগার, বেকিং সোডা এসবের মত ঘরোয়া জিনিসপত্র দিয়েই পছন্দের ফার্নিচারকে নতুনের মত চতচকে রাখা যায়। আর একটু বেশি প্রফেশনাল টাচ চাইলে তো উড ক্লিনার লিকুইড আছেই! চলুন বিস্তারিত জেনে নিই কিভাবে এসব ব্যবহার করবেন— 

১. ভ্যাকিউম দিয়ে ধূলা দূর করুন

প্রথমে ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দিয়ে ফার্নিচারের উপর থেকে ধূলা দূর করুন। তবে খেয়াল রাখবেন ভ্যাকিউমের নোজল যেন খুব জোরে ফার্নিচারের দূর্বল অংশের সাথে না লাগে। এভাবে সবদিক থেকে ধূলা পরিষ্কার করার চেষ্টা করুন। বিশেষ করে ফার্নিচারের নিচে ও ভিতরের পাশে বেশি ধুলো বা মাকড়সার জালের মত ময়লা দেখতে পাবেন।

২. নরম কাপড় দিয়ে মুছুন

এবারে আপনার বাসায় থাকা সবচেয়ে নরম সূতি কাপড় দিয়ে ফার্নিচার মুছুন। সবচেয়ে ভাল হয় চশমা মোছা কাপড়ের মত মাইক্রোফাইবার ব্যবহার করলে। শক্ত সারফেসের উপর থেকে ধুলোর স্তর না গেলে কাপড় হালকা পানিতে ভিজিয়ে নিতে পারেন। কিন্তু এভাবে পরিষ্কার করলে সাথে সাথেই কাপড়ের শুকনো অংশ দিয়ে কাঠের ভেজা অংশ মুছে নিবেন।

৩. কাঠ পরিষ্কারের লিকুইড ব্যবহার করুন

বাজারে কাঠ পরিষ্কার করার জন্য বিভিন্ন রকম লিবুইড পাওয়া যায়। একটি নরম কাপড়ে কাঠের পরিষ্কারের লিকুইড নিয়ে ফার্নিচার মুছুন। তবে অবশ্যই নির্দেশাবলী মেনে লিকুইড ব্যবহার করুন। কিছু লিকুইড মুছে ফেলতে হয় আবার কিছু লিকুইড শুকিয়ে যায়। যা মুছে ফেলা লাগে তা খালি হাতে স্পর্শ না করে পলিথিনের গ্লাভস ব্যবহার করুন।

৪. লেবু  ব্যবহার করুন

ফার্নিচারের কোথাও মরিচা, তরকারির ঝোল বা কোনো পোকামাকড়ের অবশিষ্টাংশ লেগে থাকলে লেবু দিয়ে মুছতে পারেন। প্রথমে দাগসহ জায়গার উপর কয়েক ফোটা লেবু ফেলবেন। এরপর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করবেন। বিক্রিয়া হয়েছে বুঝতে পারলে পানি বা শুকনো কাপড় দিয়ে লেবুর রস মুছে ফেলুন।

৫. কাঠে অলিভ অয়েল লাগান

অনেক সময় ময়লা জমে ফার্নিচারের চকচকে ভাব চলে যায়। তখন আবারও আগের মত ঔজ্জ্বল্য ফিরিয়ে আনতে অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। অলিভ অয়েল সরিষা, নারিকেল বা পাম অয়েলের মত তেল চিটচিটে হয়ে ফার্নিচারে লেগে থাকবে না। অলিভ অয়েল থেকে বাজে কোনো গন্ধও বের হয়না।

৬. বেকিং সোডা দিয়ে দাগ তোলা

খুব বেশি ও স্থায়ী দাগের জন্য বেকিং সোডা পেস্ট ব্যবহার করুন। আক্রান্ত স্থানে অল্প করে বেকিং সোডার পেস্ট লাগিয়ে রাখুন। এরপর সময়মত ধুয়ে ফেলুন।

৭. নিয়মিত ধুলো পরিষ্কার করুন

এমন না যে প্রতিবারই আপনাকে এসমস্ত উপকরণ ব্যবহার করতে হবে। যখন খুব বেশি দাগ হয় তখন বেকিং সোডা বা লিকুইড প্রয়োজন হয়। কিন্তু আপনি প্রতি সপ্তাহে ধুলো ঝেড়ে রাখলে ফার্নিচারে কোনো দাগ পড়ারই সুযোগ পাবে না। আবার খাবার সময় ফার্নিচাররের উপর কিছু পড়লে সাথে সাথে মুছে নিন, এতে বার্ণিশের উপর রঙ পড়বে না।

কাঠের ফার্নিচার পরিষ্কারের সময় যা করা যাবেনা

বর্তমানে আধুনিক ফার্নিচারগুলো ইঞ্জিনিয়ারড উড বা প্লাইউডে তৈরি হয়। তাই পরিষ্কার করার সময় একটু বেশি সাবধান না হলে উল্টো আরো বেশি ক্ষতি হতে পারে। সবধরনের ক্ষতি থেকে দূরে থাকতে নিচের এই কাজগুলো করা থেকে বিরত থাকুন—

  • কখনোই কাঠের ফার্নিচারে গরম বা ঠান্ডা পানি সরাসরি স্প্রে করবেন না।
  • কাঠের ফার্নিচারকে সরাসরি সূর্যের আলো থেকে দূরে রাখুন।
  • নিয়মিতভাবে কাঠের ফার্নিচারে ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
  • আপনার কাঠের ফার্নিচারকে ভালোবাসুন এবং এর যত্ন নিন!

পরিশেষ

আশা করি আমাদের টিপসগুলি আপনার কাজে লাগবে। যথাযথ যত্ন নেওয়ার মাধ্যমে আপনি দীর্ঘদিন কাঠের ফার্নিচারের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। কাঠ এমন এক জিনিস তা ঠিকভাবে ব্যবহার করলে শতাব্দীর পর শতাব্দীও ভাল থাকতে পারে। তাই এখন থেকে ঘরের সকল কাঠের ফার্নিচারের যত্ন নেওয়া শুরু করুন।

কিভাবে হাতিল-এর মাধ্যমে কাঠের ফার্নিচার পরিষ্কারের ঝামেলা থেকে পরিত্রাণ দেবে

HATIL-ফার্নিচারের আউটলেটে শত শত ডিজাইনের আধুনিক ফার্নিচার দেখতে পাবেন। এসব ফার্নিচারে খুব সিম্পল ও এলিগ্যান্ট কারুকাজ করা হয় যা তেমন একটা ধুলো ময়লাতে আক্রান্ত হয়না। আবার এর নির্মাণে উন্নতমানের ক্লিন ড্রাইড বীচ উড ব্যবহার করা হয় যার উপর কোটিং থাকার কারণে সারফেস এরিয়াতে বালুকণা পড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়না।

সাধ্যের মধ্যে উন্নতমানের লিভিং রুম, বেডরুম, ডাইনিং রু, কিচেন, স্টাডি রুম বা অফিসিয়াল রুমের ফার্নিচার কিনতে এখনই হাতিলের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন অথবা +88 01713441000 নম্বরে কল করে অভিজ্ঞ সেলস এক্সিকিউটিভেরর সহায়তা নিন। ওয়ারেন্টি থাকার কারণে ফার্নিচারগুলো কোনো সমস্যা ছাড়াই নিশ্চিন্তে বছরের পর বছর ব্যবহার করতে পারবেন। 

কিছু বহুল আলোচিত প্রশোত্তরঃ

সব ধরনের কাঠের ফার্নিচার একইভাবে পরিষ্কার করা যায়?

না, সব ধরনের কাঠের ফার্নিচার একইভাবে পরিষ্কার করা যায় না। যেমনঃ পলিশ করা কাঠের ফার্নিচারের জন্য আলাদা এবং পলিশ না করা কাঠের ফার্নিচারের জন্য আলাদা পরিষ্কারের পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। তাই ফার্নিচারটি কোন ধরনের কাঠ দিয়ে তৈরি তা দেখে নিতে হবে। কোনো কোনো কাঠে লিকুইড পানি বা তেল লাগিয়ে মুছতে গেলে নষ্ট হয়ে যায়।

কাঠের ফার্নিচারকে সূর্যের আলো থেকে দূরে রাখার কারণ কি?

সূর্যের আলো কাঠকে ফ্যাকাসে করে এবং এর রং নষ্ট করে। এছাড়া, সূর্যের তাপ কাঠকে শুকিয়ে ফেলতে পারে এবং ফাটল ধরাতে পারে। তাই কাঠের ফার্নিচারকে সরাসরি সূর্যের আলো থেকে দূরে রাখা উচিত। রুমের মধ্যের ফার্নিচার ভাল রাখতে জানালায় পর্দা ব্যবহার করুন। আর বাইরের ফার্নিচার বাল রাখতে ছায়া আছে এরকম স্থানে রাখুন।

বর্ষাকালে কাঠের ফার্নিচারের যত্ন কিভাবে নেবেন?

বর্ষাকালে আর্দ্রতা বেশি থাকে, যা কাঠের ফার্নিচারের জন্য ক্ষতিকর। অনেক কাঠ বর্ষাকালে ফুলে যায়। তাই বর্ষাকালে কাঠের ফার্নিচারকে শুকনো রাখতে হবে। ফার্নিচারের নিচে কিছু শুকনো কাপড় ও সিলিকা জেল রাখতে পারেন। এছাড়া, নিয়মিত ফার্নিচার পরিষ্কার করে এবং ভালোভাবে শুকিয়ে নিন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।