সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে প্রতিনিয়ত কত কিছুই না বদলে যাচ্ছে। আর সে বদলে যাওয়ার তালিকায় রয়েছে আমাদের দৈনন্দিন অভ্যাস, গতানুগতিক চিন্তাধারা, সে সাথে চাহিদা। কেননা, সময়ের সাথে তালমিলিয়ে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে নিত্য নতুন অভ্যাসগুলোই যে আমাদের কাছে ‘নিউ নরমাল’ হয়ে উঠছে। আর এ তালিকায় অন্যান্য অনেক কিছুর মতো যুক্ত হয়েছে কাজের ধারায় পরিবর্তন। বলছি হোম অফিস এর কথা।
বিগত কয়েক বছর আগেও ‘হোম অফিস’ বা বাসায় বসে অফিস করার এই কনসেপ্ট এর সাথে আমরা পরিচিত ছিলাম না। এমনকি বাসায় বসেও যে অফিসের কাজ করা সম্ভব তা মানতেও রাজি ছিলাম না। তবে পরিবেশ পরিস্থিতির কারণে নিত্য নতুন অনেক কিছুর সাথেই আমাদের মানিয়ে নিতে হয়। যদিও এক্ষেত্রে হোম অফিস কনসেপ্ট এক ধরনের আশীর্বাদই বলা যায়। কেননা, ঘুম থেকে উঠে যানজট পার না করে, বিভিন্ন ধরনের টেনশান না করেও পরিচিত পরিবেশে কমফোর্টের সাথে এখন অনেকেই বাসায় বসেই অফিসের কাজ করছেন। তবে হোম অফিস হোক কিংবা অফিস গিয়ে কাজ করা, কাজের জায়গাটি যদি গোছানো, আরামদায়ক, ফাংশানাল না হয়, সেক্ষেত্রে কাজের প্রতি মনোযোগ, কাজের গতি বাড়ানো, এবং সঠিক সময়ে কাজ সম্পন্ন করা বেশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে ওঠে।
আর তাই আপনার জন্য কাজটা কিছুটা সহজ করতে আধুনিক সময়ে হোম অফিস ডেকোরে কোন ধরনের ফার্নিচার ব্যবহার করতে পারেন এবং কিভাবে কাজের জায়গাটি পরিপাটিভাবে সাজাবেন সে বিষয়ে কিছু আইডিয়া সম্পর্কে চলুন জেনে নেওয়া যাক।
তো হোম অফিসের কথা যেহেতু বলছি, সেখানে প্রথমেই চলে আসে টেবিল বা ওয়ার্কস্টেশনের কথা। কম্পিউটারেই যেহেতু আমাদের সকল কাজ, তাই আপনি প্রথমেই পছন্দসই কোন কম্পিউটার টেবিল সিলেক্ট করতে পারেন। যাদের রুম কিছুটা বড় আকৃতির এবং যারা স্পেস নিয়ে কাজ করতে পছন্দ করেন তারা হাতিল এর Barney এবং Dexter টেবিল দুইটি দেখতে পারেন। লেকার এবং লেমিনেশন বোর্ড দিয়ে বানানো এই টেবিলগুলোতে শেলফ এবং ড্রয়ারের ব্যবস্থা রয়েছে, যেখানে সিপিউ, কিবোর্ড রাখার পাশাপাশি অন্যান্য দরকারি জিনিস রাখারও জায়গা করা আছে। এছাড়া যারা ডেস্কটপ এবং ল্যাপটপ দুটোতেই একসাথে কাজ করে থাকেন, তাদের জন্য স্পেশাস এই টেবিলগুলো হতে পারে দারুণ অপশন। তবে যারা তুলনামূলক কম স্পেসের বা লম্বা ধাঁচের টেবিল খুঁজছেন, তারা Charlie এবং Elsa থেকে যেকোনোটি সিলেক্ট করতে পারেন।
এবার আসা যাক চেয়ারের কথায়। অফিসের কাজ করা হোক কিংবা পড়াশোনা, বসার জায়গাটি যদি আরামদায়ক না হয়, সেক্ষেত্রে কাজ করা ক্লান্তিময় এবং বিরক্তিকর হয়ে উঠবে এমনটাই স্বাভাবিক। ডেস্কের সাথে মানানসই হবে এ ধরনের অসংখ্য সুইভেল চেয়ার এর অপশন রয়েছে হাতিলে। Benchley, Couplet, Clive, Rubens এর মতো চেয়ারগুলো বেশ ভাইব্রেন্ট, কোজি এবং কমফোর্টেবল স্টাইলে বানানো। ফ্লেক্সিবল এবং মুভেবল এই চেয়ারগুলোর অত্যন্ত সুন্দরভাবে করা হয়েছে। ফলে স্বস্তির সাথে কাজ করা সম্ভব হবে নিশ্চিন্তে। দারুণ এই অপশনগুলোর মধ্য থেকে আপনি টেবিলের সাথে মানানসই হবে এমন চেয়ার বেছে নিতে পারেন।
অনেক ক্ষেত্রে অফিসের কাজের জন্য জরুরি কিছু ডকুমেন্ট বা অন্যান্য ডিভাইস রাখার প্রয়োজন হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে ঘরের বাকি কেবিনেট বা স্টোরেজ ব্যবস্থাকে অফিসের কাজে না লাগিয়ে বরং রুমে কাঠের ডিজাইনের সুন্দর ড্রয়ার রাখতে পারেন। এতে করে কাজের জন্য প্রয়োজনীয় যেকোনো কিছু নির্দিষ্ট একটি জায়গায় রাখা সম্ভব হবে। তবে মডার্ন ইন্টেরিয়রে অ্যাস্থেটিক ডিজাইনের কোন ফার্নিচার দিয়ে হোম অফিসের ব্যবস্থা করতে হাতিল এর Novella টেবিলটি বেশ চমৎকার। এতে টেবিলের সাথে থাকছে এটাচড শেলফের ব্যবস্থা। যা দেখতে নিঃসন্দেহে বেশ ইউনিক এবং ক্রিয়েটিভ।
যেহেতু দীর্ঘ সময় ধরে অফিসের কাজ করতে হয়, তাই কাজের জায়গাটি আরও প্রাণবন্ত এবং সতেজ রাখতে শেলফে কিছু ইনডোর প্ল্যান্টস রাখতে পারেন। ঘরে আলো প্রবেশের ব্যবস্থা যদি পর্যাপ্ত না থাকে, সেক্ষেত্রে একটানা কাজ করা বেশ কষ্টকর হতে পারে। এর জন্য টেবিল ল্যাম্প এবং এর সাথে ষ্টেশনারী অর্গানাইজারও রাখতে পারেন টেবিলের উপরে। এছাড়া প্রতি ২০ মিনিট অন্তর অন্তর ৫-১০ মিনিটের জন্য কাজ থেকে ব্রেক নিতে পারেন। আর এ সময়ে চাইলে একটু হাঁটাহাঁটি, গাছে পানি দেওয়ার মতো টুকিটাকি কাজ করতে পারেন। আর দীর্ঘসময় একটানা বসে কাজ করাও যেহেতু স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর তাই কাজের মাঝে কিছুটা ব্রেক নেওয়া। আর তাই এভাবেই সাজিয়ে নিতে পারেন হোম অফিসের জন্য আপনার পারফেক্ট সেটআপ।