বিশ্ব যেমন বিকশিত হচ্ছে, তেমনি বিকশিত হচ্ছে নতুন প্রজন্মের আসবাবপত্র ক্রেতাদের পছন্দ এবং প্রত্যাশা। আজকের যুগে ভোক্তারা কেবল কার্যকরী আসবাবপত্রই খুঁজছেন না; তারা তাদের জীবনধারা, স্বাদ এবং মূল্যবোধের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ন আসবাবপত্র বেশি পছন্দ করে। এই প্রেক্ষাপটে, হাতিল নতুন প্রজন্মের ক্রেতাদের আকাঙ্ক্ষার সাথে অনুরণিত হয়ে নতুনভাবে হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে।
তরুণ গৃহসজ্জাপ্রেমীদের কথা বলতে গেলেই শুরুতে বলা যায় নাজিয়া নাফের কথা। গৃহসজ্জা নিয়ে শুরু থেকেই বেশ আগ্রহী ছিলেন নাজিয়া নাফ। অল্প বয়স থেকেই, তিনি তাঁর ঘরটিকে সবচেয়ে সহজ এবং সবচেয়ে কম খরচে সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখেন। করোনা মহামারীর সময়ে, খুব হঠাৎ করেই, অল্প সরঞ্জাম নিয়ে নাজিয়া নাফ ডেকোর আপা অন আ বাজেট নামের একটি ফেসবুক পেজ খুলে, তাতে হোম ডেকোরের কন্টেন্ট আপলোড করা শুরু করেন। পেজটি রাতারাতি বেশ জনপ্রিয়ও হয়ে যায়। বর্তমানে দুই লাখ মানুষ এই পেজটি ফলো করছে।
নাজিয়া নাফ মনে করেন, হাতিল দিন দিন বেশ বিবর্তিত হয়েছে। তাঁর নিজ বাসায় তো হাতিলের আসবাবপত্র রয়েছেই, পাশাপাশি তাঁর কোয়ার্টারের সবগুলো বাসাই সজ্জিত হাতিলের আসবাবপত্রে। তার বাসার এই আসবাবপত্রগুলো তিন বছর ধরে আছে এবং এগুলোকে দেখতে বেশ আধুনিক মনে হলেও তুলনা করতে গেলে দেখা যায়, এই তিন বছরে হাতিলের আসবাবপত্রের ধরনই খুব পরিবর্তন হয়েছে। নাজিয়া নাফ সম্প্রতিই গিয়েছিলেন হাতিলের কাজিপাড়ার সবচেয়ে বড় শো রুমটিতে। সেখানে গিয়ে তিনি আবিষ্কার করেন, যে বর্তমানে হাতিলের প্রত্যেকটা আসবাবই খুব মিনিমালিস্টিক ডিজাইনের। যেমন, ডাইনিং সেটগুলো এতটাই কমপ্যাক্ট যে, সেগুলো আগের মত কার্যকর হলেও তা খুব কম জায়গা নিচ্ছে। এমনকি সোফা সেটগুলোর সেন্টার টেবিলটাও মাল্টিফাংশনাল। সবগুলো আসবাবই খুব ফ্লেক্সিবল এবং মিনিমালিস্টিক। নাজিয়া নাফ গত বছরও হাতিলের শো রুমে গিয়েছিলেন, এবং এক বছরের মাথায়ই গিয়ে দেখেছেন, অনেক নতুন ধরনের আসবাবের সমারোহ। একজন প্রফেশনাল রিসার্চার হিসেবে, যেই ব্যপারটা তাঁর সবচেয়ে ভালো লেগেছে, সেটা হচ্ছে হাতিল যে অবিরাম রিসার্চ করে, কোন ধরনের আসবাবপত্র বর্তমান যুগে মানুষের চাহিদা সবচেয়ে ভালো করে পূরণ করবে, কোন আসবাবপত্র বর্তমান যুগে নির্মিত বাসাগুলোর মাঝে বেশি মানাবে, এবং কমের মাঝেই কোন ধরনের আসবাবপত্র তার সেরাটা দিতে পারবে, এসব বিবেচনায় রেখে এরপরে নতুন নতুন আসবাবপত্র বাজারে আনছে। এই উদ্যোগটা খুবই প্রশংসনীয়। গত কয়েক বছর ধরে হোম ডেকোর কন্টেন্ট ক্রিয়েশনের মাধ্যমে নাজিয়া নাফ নতুন প্রজন্মের কাছে কোন ধরনের আসবাবপত্র বেশি পছন্দনীয়, তা নিয়ে ধারণা পেয়েছেন। তাঁর মতে, আগের যুগে আমাদের বাসাগুলো অনেক বড় ছিল, যে কারণে আমাদের আসবাবপত্র অনেক বেশি জায়গা নিয়ে থাকলেও আমাদের খুব একটা সমস্যা হত না। কিন্তু বর্তমানে বাসাগুলো দিন দিন ছোট হয়ে এসেছে, এখন মানুষ খোঁজে খুব মিনিমালিস্টিক ডিজাইনের আসবাবপত্র। যেটাকে নিজের মত করে কাস্টমাইজ করে নেয়া যাবে। আর তা একসাথে একাধিক কাজ করতে পারলে তো কথাই নেই! হাতিল যে খুব অল্প সময়ের মাঝেই তরুণ প্রজন্মের এই চাহিদাটা পূরণ করতে পেরেছে, এটাই সবচেয়ে ভালো লাগার বিষয়। একটা সুন্দর আসবাব তৈরির জন্য যে, খুব বেশি কাঠের প্রয়োজন নেই বরং মিনিমালিজমের মাঝেই আকর্ষনীয় আসবাব যে তৈরি করা সম্ভব, এমনটা হাতিল প্রমাণ করতে পেরেছে। এছাড়াও হাতিল বেশকিছু আনকমন রঙের আসবাবপত্র এনেছে যা সচরাচর দেখা যায় না। নাজিয়া নাফ মনে করেন, তরুণ প্রজন্ম এরকম রঙিন আসবাবের প্রতি আরো আকর্ষিত হবে।
তিন দশক ধরে ক্রেতাদের মন জয় করে আসা হাতিল কেন তরুণ প্রজন্মেরও হতে পারে প্রথম প্রজন্ম, তা বিস্তারিত বলতে গেলে বেশ কিছু বিষয়ে আলোকপাত করতে হবে।
প্রথমেই আধুনিক জীবনযাপনের জন্য আসবাবপত্রে প্রয়োজন সমসাময়িক ডিজাইন। হাতিল সমসাময়িক ডিজাইনের জন্য একটি সমার্থক শব্দ হয়ে উঠেছে যা আধুনিক জীবনযাত্রায় নান্দনিকতার চাহিদাকে পূরণ করে।
দ্বিতীয়ত, হাতিলের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল এর বহুমুখী ডিজাইন। হাতিল নতুন প্রজন্মের ক্রেতাদের মধ্যে জীবনযাত্রার বৈচিত্র্যকে বোঝে। এই বৈচিত্রের সাথে মিল রেখে হাতিল অনেক ধরনের আসবাবপত্র বাজারে এনেছে করে যা স্বল্প পরিসরে নির্মিত শহুরে অ্যাপার্টমেন্ট থেকে প্রশস্ত শহরতলির বাড়ি পর্যন্ত, যেকোনো থাকার জায়গাকে সাজানোর জন্য উপযুক্ত।
হাতিল মানসম্পন্ন কারুশিল্প এবং টেকসই উপকরণের প্রতিশ্রুতির জন্য খ্যাতি অর্জন করেছে। নতুন প্রজন্মের যারা আসবাবপত্র কেনার সময়ে স্থায়িত্বকে অগ্রাধিকার দেয়, তাদের জন্য এটি হবে একটি দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ।
নতুন প্রজন্ম শহুরে জীবনযাত্রার প্রতি বেশি আকর্ষিত হওয়াতে, তাদের মাঝে বেশিরভাগ মানুষই বসবাসের জন্য ছোট ছোট অ্যাপার্টমেন্টকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। এজন্য হাতিল সৌন্দর্যের সাথে আপস না করে, মিনিমালিস্টিক ডিজাইনের মাল্টি ফাংশনিং আসবাবপত্র নিয়ে এসেছে।
নতুন প্রজন্ম তুলনামূলকভাবে পরিবেশ নিয়ে বেশি সচেতন। হাতিল উৎপাদন প্রক্রিয়ায় পুরোপুরি পরিবেশ-বান্ধব পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে এতে একাত্বতা জানায়। টেকসই কাঁচামাল থেকে শুরু করে বর্জ্য এবং শক্তির খরচ কমানো পর্যন্ত, হাতিল তার কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সবশেষে বলা যায়, হাতিলের গ্রাহক-কেন্দ্রিক পদ্ধতির কথা। হাতিল সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তার ক্রেতাদের সাথে জড়িত থাকে এবং তাদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সরবরাহের পাশাপাশি নতুন নতুন অফারও নিয়ে আসে।
হাতিল সফলভাবে নিজেকে এমন একটি ফার্নিচার ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে যা নতুন প্রজন্মের ক্রেতাদের চাহিদা বোঝে এবং পূরণ করে। সমসাময়িক ডিজাইন, বহুমুখীতা, মানসম্পন্ন কারুশিল্প, উদ্ভাবনী সমাধান, পরিবেশ-বান্ধব উৎপাদন এবং গ্রাহক-কেন্দ্রিক পরিচালনা পদ্ধতির প্রতি অঙ্গীকারের সাথে, হাতিল তার ক্রেতাদের বাসস্থানের পাশাপাশি হৃদয়েও অবস্থান করছে।