লিভিং রুমে বসে আমরা সময় কাটানো, কথা বলা, টিভি দেখা, খবর পড়া এসব অনেকরকম কাজ করে থাকি। তাই বাসার কোন রুম সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয় জিজ্ঞাসা করলে যে কেউ লিভিং রুমের কথাই বলবে। লিভিং রুমের ফার্নিচার ডিজাইন এমন হওয়া দরকার যেন দীর্ঘসময় বসে থেকেও বিরক্ত না হতে হয়। এক্ষেত্রে হাতিলের আধুনিক ফার্নিচার দিয়ে লিভিং রুমের ইনটেরিয়র ডিজাইন আকর্ষণীয় করা যায়। সহজে কেমন ফার্নিচার দিয়ে আপনার লিভিং রুম সাজাবেন সেসব নিয়ে আজকের গাইডে কথা বলা হবে। তাহলে আর দেরি না করে ছবিসহ দেখে নিন ৫০টিরও বেশি লিভিং রুম ডিজাইন আইডিয়া!
৫০+ লিভিং রুমের ফার্নিচার ডিজাইন আইডিয়া
১. আধুনিক ও স্টাইলিশ সোফা
লিভিং রুমে নজর কাড়া প্রথম ফার্নিচারটি হলো সোফা। এখনকার সোফাগুলো দেখতে বেশ সুন্দর হয়। মোলায়েম সীটে আরামে বসার জন্য বিভিন্নরকম ফেব্রিক সোফা ও লেদার সোফা পাবেন। যারা ট্রাডিশনাল জিনিস পছন্দ করে তাদের জন্য উডেন সোফাও রয়েছে। কিছু স্টোরেজ সোফার নিচে জিনিসপত্র রাখার জায়গা থাকে। একই সাথে সোফা ও বেডের সুবিধা পেতে চাইলে ডিভান সোফা নিতে পারেন। হাতিলের স্টোরে এলে সব ধরনের টু সীটার ও থ্রি সীটার সোফা পাবেন। বাসার সোফা আর অফিসের সোফার ডিজাইন কিছুটা আলাদা হবার জন্য আপনাকে সবধরনের সোফা দেখে ডিসিশন নিতে হবে।
২. দৃষ্টিনন্দন সেন্টার টেবিল
৩. মাল্টি ফাংশনাল টিভি কেবিনেট
কাগজপত্র থেকে শুরু করে টিভির রিমোট অথবা চায়ের ট্রে রাখার জন্য সেরা ফার্নিচার হলো সেন্টার টেবিল। বাজারে বিভিন্নরকম গ্লাস টপ ও উডেন টপের সেন্টার টেবিল রয়েছে। বাসায় জিনিসপত্র বেশি থাকলে ড্রয়ার ও শেলফসহ আধুনিক ডিজাইনের স্টোরেজ টেবিল নেওয়া ভালো হবে। এছাড়া স্বল্পের মধ্যে কিছু নিতে হলে কর্ণার টেবিল বা মডুলার সেন্টার টেবিল নিতে পারেন। আজকাল ভাল ইনটেরিয়রের জন্য এক ধরনের নেস্টেড টেবিল বের হয়েছে যা সাইজে ছোট হলেও দেখতে খুব শৈল্পিক হয়ে থাকে।
৪. নান্দনিক ডিজাইনের শেলফ
রুচির প্রকাশ করতে বই, শো পিস, ছবির অ্যালবাম এসবের জুড়ি নেই। আর এসব রাখার জন্য ওপেন শেলফ প্রয়োজন। ছোটখাট জিনিস রাখতে কর্ণার শেলফ অথবা ওপেন শেলফ নিতে পারেন। আর যদি বই, ক্রেস্ট, ফুলদানি এসবের সংখ্যা অনেক বেশি হয় তাহলে চওড়া দেখে বুক শেলফ নিতে হবে। হাতিলের স্টোরে এক ডজনের বেশি ডিজাইনের শেলফ পাবেন। কেনার আগে খেয়াল রাখতে হবে কয়টা র্যাক রয়েছে, কোনো ড্রয়ার আছে কিনা এবং দামী কিছু নিরাপদে রাখার জন্য গ্লাস ডোর আছে কিনা। আপনার প্রয়োজনের সাথে বাসার ডিজাইন, এই দুই মিলিয়ে শেলফ নিলে রুমের আভা কয়েক গুণ বেড়ে যাবে।
৫. আরামদায়ক চেয়ার
চেয়ার না থাকলে লিভিং রুম কিছুটা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। একসাথে বসে গসিপের জন্য বা বই পড়ে সময় কাটানোর জন্য চেয়ারের মত আর কিছুই হয়না। রকিং চেয়ারগুলিতে আরামে দোল খেতে খেতে ঘুমাতে পারবেন। কিছু রকিং চেয়ার ও ইজি চেয়ারে পা রাখার জন্য আলাদা ফুট টুল থাকে। এগুলোতে ঘুমানোর জন্য সোজা করে পা রাখা যায়। আর পা উপরে উঠিয়ে বসতে হলে ফোমে মোড়ানো এক্সেন্ট চেয়ার রয়েছে। অনেকক্ষেত্রে লম্বা সময় টেলিফোনে কথা বলা লাগে। এর জন্য টেলিফোন সীটার চেয়ার রয়েছে। এসব তো গেলো বাসার কথা, অফিসের লিভিং রুমে বা লাউঞ্জে বসার জন্যও ভাল বার টুল পাবেন।
৬. ফিউচারিস্টিক ডিজাইনের ডিভান
বর্তমান সময়ে ডিভান বেড বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। খুব আধুনিক কায়দায় বানানো বাড়িতে বা ব্যাচেলরদের মিনিমাল সাজসজ্জার বাড়িতে ডিভান বেড হতে পারে সেরা ফার্নিচার। এগুলো বসার পাশাপাশি ঘুমানোর কাজে তো ব্যবহার করতে পারবেনই, তাছাড়া ভেঙে টেবিল বানিয়ে পড়াশোনা করা ও সিন্দুক বানিয়ে জিনিস রাখার সুবিধাও দেয়। আর আপনি যদি ঐতিহ্যবাহী ফার্নিচার কিনতে আগ্রহী হন, তাহলে জমিদারি আমলের ডিজাইনের মত কিছু ডিভান পাবেন। এছাড়া কনভেনশন সেন্টারে বিয়ের অনুষ্ঠানের মত সামাজিক আয়োজনে ডিভান বেশ কাজে দেয়।
৭. বড় লিভিং রুমের দোলনা
বড় লিভিং রুমের জন্য একটা ভালো ফার্নিচার হলো দোলনা। এটা দিয়ে রুমের ফাকা জায়গা পূর্ণ করার পাশাপাশি অবসরে ভাল সময় কাটানো যায়। বিশেষ করে বাচ্চারা দোলনায় বসে থাকতে বেশ পছন্দ করে। দোলনার কারণে রুমের আভিজাত্য ও অনেক বেড়ে যায়। একারণে বিভিন্ন নাটক সিনেমাতে লিভিং রুমে দোলনা রাখার দৃশ্য দেখবেন।
৮. ফাইল র্যাক ও শু র্যাক
বিভিন্ন কর্মকর্তাদের বাসায় বা অফিসে প্রচুর কাগজপত্র থাকে। এগুলো সুসজ্জিতভাবে রাখার জন্য ফাইল কেবিনেটের বিকল্প নেই। র্যাকগুলিতে ফাইল, ফোল্ডার, বই, নোটবুকসহ যাবতীয় সকল কিছুই গুছিয়ে রাখা যায়। আর লিভিং রুমের ঠিক বাইরে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ফার্নিচার হলো শু র্যাক। শু র্যাক থাকলে বাসা ময়লা না করে অতিরিক্ত জুতো-মোজা রাখা যায়। কিচু শু র্যাকে বিলের কাগজপত্র বা ঘর মোছার জিনিস রাখতে ড্রয়ারও দেওয়া থাকে। লিভিং রুমের এক কর্ণারে বা দরজার বাইরে শু র্যাক রাখতে পারেন।
৯. জামাকাপড়ের হ্যাংগার স্ট্যান্ড
ঘরের সব জামাকাপড় আলমারি বা ওয়ারড্রোবে রাখা যায়না। প্রতিদিন ব্যবহার করা হবে এরকম জামাকাপড়গুলো হাতের নাগালে রাখার প্রয়োজন হয়। লিভিং রুমে হ্যাংগার স্ট্যান্ড থাকলে এভাবে জামাকাপড় রাখা অনেক সহজ হয়ে যাবে। হাতিলের স্টোরে আলনার মত ডিজাইনে বা গাছের মত শাখা-প্রশাখাসহ বিভিন্ন ডিজাইনের হ্যাংগার স্ট্যান্ড পেয় যাবেন।
১০. গসিপের জন্য লবি সেট
এতক্ষণ শহুরে অ্যাপার্টমেন্টের ফার্নিচারের কথা বলছিলাম। এবারে বলবো বাংলো বা স্টুুডিওতে কেমন ফার্নিচার ব্যবহার করবেন। এক প্রকার লবি সেট আছে সোফা ও চেয়ারের সংমিশ্রণ বলা যায়। এগুলো দেখতে সুন্দর লাগার সাথে আরামদায়ক অনুভূতিও দেয়। প্রত্যেকটা সেটে ছোট চেয়ার ও টেবিল থাকে, তাই বিভিন্ন জিনিস রাখতেও কোনো সমস্যা হয়না। খুব বিলাসবহুলভাবে ফ্ল্যাট সাজাতে চাইলে বা অফিসের লিভিং রুম ডেকোরেট করতে চাইলে এই লবি সেট গুলো কিনতে পারেন।
শেষ ভাবনা
হাতিলের স্টোরে নিত্যনতুন ডিজাইনের লিভিং রুম ফার্নিচার পাবেন। ইকো ফ্রেন্ডলি ম্যাটেরিয়েলে তৈরি ফার্নিচার শরীর ও পরিবেশের জন্য বেশ ভালো। ওয়ারেন্টি ও রিপ্লেসমেন্ট সুবিধাসহ অনলাইনে অর্ডার করেই সকল ফার্নিচার বাসায় ডেলিভারি নেওয়া সম্ভব। তাই দেরি না করে হাতিলের ওয়েবসাইট থেকে কোন কোন ফার্নিচার আপনার বাসার আবহের সাথে মিলবে দেখে নিন।
কিছু বহুল আলোচিত প্রশ্ন-উত্তর
লিভিং রুমের ফার্নিচার কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?
লিভিং রুম একটা বাসার প্রধান রুম হওয়াতে এখানে থাকা ফার্নিচার বেশ গুরুত্বপূর্ণ। যেকেউ বাসায় ঢুকে প্রথমেই লিভিং রুমে ঢুকবে। তাছাড়া বসে কথা বলা, টিভি দেখা, নাস্তা করা, খবর পড়া, সবকিছুর জন্যই লিভিং রুম ব্যবহার করা লাগে। সঠিক ফার্নিচারের কম্বিনেশন না থাকলে লিভিং রুমকে দেখতে অসুন্দর ও খাপছাড়া মনে হয়।
প্রাথমিকভাবে কি কি লিভিং রুমের ফার্নিচার কেনা উচিৎ?
নতুন বাসার লিভিং ডেকোরেট করতে সবার প্রথমে প্রয়োজন হবে সোফা, টিভি কেবিনেট, সেন্টার টেবিল এবং ওপেন শেলফ। এই চারটা ফার্নিচার থাকলেই রুমকে সম্পূর্ণ মনে হবে। এরপরে প্রয়োজনমত স্ট্যান্ড, দোলনা, হ্যাংগার স্ট্যান্ড, লবি সেট এসব নিতে পারেন। তবে মরে রাখবেন, সব বাসার সাথে সব ফার্নিচার মানানসই হবে না। তাই ভেবে চিন্তে নিজের বাসার ডিজাইনের সাথে খাপ খাইয়ে ফার্নিচার কিনতে হবে।
কিভাবে লিভিং রুম সুন্দর করা যায়?
লিভিং রুমকে সুন্দর করতে রুচিশীল রঙ ও ডিজাইনের ফার্নিচার কিনতে হবে। এমন রঙ বাছাই করতে হবে যা আপনার রুমের অ্যাক্সেন্ট কালারের সাথে ম্যাচ করে। এছাড়া বাসা নতুন নাকি পুরনো সে হিসেব করে ফার্নিচার কিনতে হবে। পুরনো বাসায় একটু বেশি নকশা করা ফার্নিচার ভালো লাগে, অপরদিকে নতুন বাসায় সিম্পল সোজা সাপ্টা ডিজাইণ ভালো লাগবে।