Bed Bed

দু’জনার স্মৃতিগুলো সাজিয়ে রাখুন এক ফ্রেমে 

সুমনা আর রিজভির সংসারে এক দশক পূর্ণ হলো এই কিছুদিন আগে। মা-বাবার সাথেই থাকেন ‘ওল্ড স্কুল’ এই কাপল। সুতরাং বিয়ের শুরু থেকে একটু একটু করে অসংখ্য স্মৃতি জমে উঠেছে এই ফ্ল্যাটের ভেতর। সুমনা-রিজভির প্রথম আলাপ, প্রথম খুনসুটি, প্রথম অভিমান, প্রথম মান ভাঙানো; তারপর কন্যা ঋতু আর ছেলে শুভর আগমন – স্মৃতির ভাণ্ডার শুধু বেড়েই চলেছে। 

বাসাটা পুরোপুরি নতুন করে সাজানো হয়নি ইচ্ছে করেই। মা-বাবার বানানো কিছু ফার্নিচারের সাথে নিজেদের পছন্দে কেনা কিছু ফার্নিচার মিলেমিশে সাজানো হয়েছে ইন্টেরিয়র। এই ফিউশনের মাঝে নিজেদের একান্ত স্মৃতিগুলো যাতে হারিয়ে না যায়, সেজন্য নিজেদের স্মৃতিগুলো যত্নে গুছিয়ে রাখেন সুমনা-রিজভি দম্পতি। 

এই যেমন তাদের বেডটা। বিয়ের আগেই দু’জনে পছন্দ করে কিনে আনেন হাতিল থেকে। বেড আনার পর Wimbledon-206 দেখে সুমনার মা অবাকই হয়েছিলেন! ছিমছাম ডিজাইনের একটা বেড না কিনে তার মেয়ে-জামাই এ কেমন বিদেশি ধাঁচের হেডরেস্টওয়ালা বেড নিয়ে এলো! হেসে ফেলেন সুমনা-রিজভি। Reverie-106, Spell-173, Idyll-152, Sublime-180 – এ ধরনের পপুলার এবং ক্ল্যাসিক বেডের কথা মা বলছেন দু’জনেই বুঝতে পারেন। সুমনার তখন মাস্টার্স চলছে। তিনি বেডে বসেই পড়াশোনা করতেন। আর রাতে অফিস থেকে ফিরে রিজভিও টিভি দেখতেন বেডে বসেই। সুতরাং, হেডরেস্ট থাকলে দু’জনেরই বসতে সুবিধা। সেকারণেই তাদের এমন চয়েস। 

Bed

ড্রেসিং টেবিল কেনার সময়ও একই অবস্থা। সবাই বললো Chic-145 কিনতে কিন্তু সুমনা-রিজভির মনে ধরলো Crosby-101; তারপর এক দশক ধরে নিজেদের বয়স হতে দেখছেন সেখানে। Orchid-126, মানে বেডসাইড টেবিলটা অবশ্য বেশ কয়েক বছর পর কেনা। ওয়্যারড্রোব নিয়েও তেমন বিতর্ক হয়নি। Budapest-126 এর মডার্ন ডিজাইন আর বিশাল স্পেস দেখে সবারই পছন্দ হয়েছিলো। 

dressing table

বিয়ের পরের বছর হাতিল থেকেই মা-বাবাকে Moonstone-102 উপহার দেন সুমনা-রিজভি। ছেলে-মেয়েদের রুমেও হাতিল-এর Illusion-144 ছিল এতদিন। এখন ধীরে ধীরে ওরা বড় হচ্ছে, সুতরাং আলাদা রুমের কথা ভাবছেন তারা। মেয়ের পড়াশোনার জন্য Beetle-102 কিনেছেন ঠিকই কিন্তু মেয়ের নাকি বাবার কাজের টেবিল Dennis-101 বেশি পছন্দ! ছেলে অবশ্য Opus-303’তেই খুশি। ওদের পোশাকআশাক রাখার জন্য আপাতত Ross-111 যথেষ্ট তবে আলাদা রুম হলে তো আলাদা ক্লসেটও করতে হবে। সুমনা ভাবছেন সামনের মাসে নিজেদের রুমের জন্য Limpopo-121 অর্ডার করবেন। স্টোরেজের প্রয়োজন সময়ের সাথে কমে না বরং বাড়ে। 

Hatil Reading Table

সাতাশ বছর আগে কেনা ফ্ল্যাটে জায়গা বাড়ানো তো আর সম্ভব নয়। তাই লিভিংরুমেই গেস্টদের শোয়ার ব্যবস্থা করতে সুমনা আর তার শ্বশুর একজোট হয়ে Fusion-302 কিনেছেন। এক ফার্নিচারে দুই কাজ হয়ে যাচ্ছে বেশ! সেন্টার টেবিল হিসেবে Pigeon-167 আর টিভি ক্যাবিনেট হিসেবে Fchalke-119 বেছে নেওয়ার পেছনেও একই কারণ। দু’টাতেই এক্সট্রা স্টোরেজ স্পেসটা অনেক বড়। সংসারে টুকিটাকি কত জিনিসই তো কেনা হয়। সেগুলো এখানে সেখানে ছড়িয়ে থাকলে বাসাটাই ওয়্যারহাউজের মতো দেখাবে। আর সুমনার কোনো ধরনের ক্লাটার একদম সহ্য হয় না! তাই হাজব্যান্ড ওয়াইফ মিলে প্ল্যান করে এমন ফার্নিচার কিনেছেন যেগুলো দিয়ে মাল্টিপল কাজ হবে। 

পুরনো ফ্ল্যাট, তাই ব্যালকনি বেশ বড়। বিকেলবেলার চা বউ-শাশুড়ি ব্যালকনিতেই খান। সেখানে বসেই Belgrade-101 কেনার বুদ্ধি আসে দু’জনের মাথায়। দোলনাটা এমনভাবে মানিয়ে গেছে যেন ব্যালকনিটা এভাবেই ডিজাইন করা হয়েছিলো! 

সুমনা শুরু থেকেই দেখেছেন যে, তার শ্বশুর-শাশুড়ি একদম ভোরে ঘুম থেকে উঠে পুরো সকালটা একসাথে কাটান। একসাথে হাঁটতে যাওয়া, ব্রেকফাস্ট করা, চা খেতে খেতে গল্প করা – এটা গত কয় দশকের রুটিন কে জানে! ফ্যামিলির বড়দেরকে দেখেই তিনি শিখেছেন কীভাবে সবার সাথে রিলেশনশিপ মেইনটেইন করেও হাজব্যান্ড ওয়াইফ নিজেদের জন্য সময় বের করেন। আর সেই সময়গুলোতেই তৈরি হয় যত অপরূপ স্মৃতি। কিছু স্মৃতি ফোনের গ্যালারিতে থাকলেও, আসল স্মৃতিগুলো থেকে যায় মনের গ্যালারিতে। দিনে দিনে আরও গভীর হয় সম্পর্ক। আর সেই ভালোবাসা আর কেয়ারটাই যেন প্রাণবন্ত করে রাখে পুরো বাসাকে। তাই ফার্নিচারের সাথে হোক কিংবা কোনো ঘটনার সাথে, জড়িয়ে থাকা স্মৃতিগুলোকে যত্ন করে আগলে রাখতে হয় এক ফ্রেমে। ভালোবাসা দিয়ে যত্নে সাজানো প্রতিটা বাসার চেয়ে সুন্দর ফ্রেম আর কীই বা হতে পারে! 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।