লিভিং রুমে সবচেয়ে বেশী ব্যবহার হওয়া ফার্নিচারের নাম হচ্ছে সোফা। আত্মীয়-স্বজনের সাথে আলাপচারিতা অথবা বন্ধু-বান্ধবের সাথে বসে নেটফ্লিক্সে সিরিজ বা প্রিয় দলের খেলা দেখা, সবই কিন্তু হয় এই সোফাতে বসেই! যেহেতু লিভিং রুমে এই সোফার ব্যবহার সবচেয়ে বেশী, তাই সোফাতে দাগ লাগা বা ময়লা হয়ে যাওয়ার বিষয়টা খুবই স্বাভাবিক। সোফা ময়লা দেখালে সোফা যেমন দেখতে ভালো লাগে না, তেমনি লিভিং রুমের সৌন্দর্যও নষ্ট হয় এই কারণে। আজকের এই ব্লগে আমরা আপনাদের সাথে শেয়ার করব কিভাবে আপনি আপনার রুমে থাকা সোফাটিকে খুব সহজেই পরিষ্কার করতে পারবেন। তাহলে আর দেরী নয়, চলুন জেনে নেওয়া যাক-
সোফা পরিষ্কার করার উপায়ঃ
-
ব্রাশ
সোফার ফেব্রিকের ধুলা-ময়লা পরিষ্কার করতে শলার ঝাড়ুর ব্যবহার খুবই কমন। ধুলা-ময়লা পরিষ্কারে শলার ঝারুর পরিবর্তে সফট ব্রিসলের ব্রাশ ব্যবহার করুন। যদি সফট ব্রিসলের ব্রাশ ব্যবস্থা না করা যায় তবে শলার ঝারু সফটলি ব্যবহার করুন।
-
কটন কাপড়
সোফাতে বসে যেহেতু চা-কফি পান করা হয় তাই সোফাতে চা- কফি পড়ে যাওয়া খুবই স্বাভাবিক। তাই চা-কফি পড়ে গেলে সাথে সাথেই তা সাদা সফট কটন কাপড় দিয়ে ঐ জায়গাটি দ্রুত মুছে নিন। প্রয়োজনে কাপড়টি অল্প পানিতে ভিজিয়ে ঐ জায়গাটি মুছে ফেলুন। তাছাড়া সোফার কাঠের অংশের ধুলা-ময়লা পরিষ্কারে কটন কাপড় ব্যবহার করুন।
-
ভ্যাকুয়াম ক্লিনার
সোফা পরিষ্কার করার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দিয়ে সোফা পরিষ্কার করা। এতে সোফাতে থাকা ধুলা ময়লা ডিপ ক্লিন হয় যা হয়ত ঝাড়ু বা ব্রাশ দিয়ে করা যায় না। সোফা লিকুইড জাতীয় কিছু দিয়ে পরিষ্কার করা হলে অবশ্যই ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহার করা উচিৎ। ভ্যাকুয়াম ক্লিনার সোফাতে থাকা মইশ্চার খুব ভালোভাবে শুষে নেয় এবং ডিপ ক্লিনে সাহায্য করে।
-
বেকিং সোডা
বেকিং সোডা সাধারণত বেকিং এর জন্য ব্যবহার হলেও সোফার ফেব্রিক পরিস্কারেও এটি বেশ কার্যকরী। এক টেবিল চামচ ডিসওয়াশিং লিকুইড, এক টেবিল চামচ ভিনেগার, এক কাপ কুসুম গরম পানি একটি স্প্রে বোতলে ভালভাবে মিশিয়ে নিন। তারপর ঐ মিশ্রণে ১ টেবিল চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে নিন। সোফার ফেব্রিকে যে জায়গায় দাগ আছে মিশ্রণটি অল্প করে স্প্রে করুন এবং ১৫-২০ মিনিট পর সফট কটন কাপড় দিয়ে মুছে নিন। দুই থেকে তিন বার এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সোফাতে ঝোল জাতীয় কিছু বা চা-কফির দাগ রিমুভ করা সম্ভব।
-
অ্যালকোহল
দাগ রিমুভ করার ক্ষেত্রে অ্যালকোহল খুব কার্যকরী। সোফায় কোন দাগ লাগলে যত দ্রুত সম্ভব তুলা অ্যালকোহলে ভিজিয়ে নিয়ে যে জায়গায় দাগ লেগেছে সে জায়গায় আলতো করে ঘষে দাগ রিমুভ করার চেষ্টা করুন। তবে অ্যালকোহল দিয়ে বেশিক্ষণ ভিজিয়ে রাখবেন না।
-
রিকোমেন্ডেড স্প্রে
এখন অনেক ফার্নিচার প্রস্তুতকারক সোফার সাথে সোফার ফেব্রিকের দাগ রিমুভ করার জন্য স্প্রে সরবারহ করে থাকে। তাই ফেব্রিকে লাগা যেকোন দাগ রিমুভ করতে সেই স্প্রে ব্যবহার করুন।
-
এক্সপার্ট
যদি সোফাতে অনেক ময়লা থাকে তবে তা নিজে পরিষ্কার না করে এক্সপার্টের সাহায্য নেওয়া উচিৎ। তাছাড়া ফেব্রিকের বুনন যদি কিছুটা পেঁচানো থাকে সেক্ষেত্রেও এক্সপার্টের সাহায্য নিয়ে সোফা পরিষ্কার করবেন। অন্যথায়, নিজ চেষ্টায় সোফার ফেব্রিক একেবারে নষ্ট হয়ে যাওয়ারও সম্ভবনা থাকে।
সোফা ভাল রাখতে কিছু করণীয়-
- সরাসরি রোদের আলো পড়ে এমন জায়গায় সোফা রাখবেন না। এতে সোফার উজ্জ্বলতা খুব দ্রুত নষ্ট হয়।
- প্রয়োজনে সোফাতে সোফা কভার ব্যবহার করতে পারেন। এতে সোফার ফেব্রিক অনাকাঙ্ক্ষিত দাগ বা ময়লা হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা পাবে।
- সোফার কুশনগুলো প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে একবার ভালোভাবে নাড়াচাড়া দিয়ে নিন এতে কুশনগুলো সবসময় ফ্লাফি থাকবে।
- কুকিং এরিয়ার আশে পাশে সোফা রাখবেন না। কুকিং এর সময় যে স্মেল বা ধোঁয়া তৈরী তা আটকে যেতে পারে সোফায় এবং পরে যা থেকে বাজে স্মেল তৈরী হতে পারে।
- পোষা প্রাণী যেমন বিড়াল বা কুকুরের নখের আঁচড়ে সোফার ফেব্রিক ও রঙ নষ্ট হয়ে থাকে। বাসায় পোষা প্রাণী থাকলে সেগুলোর নখ ছোট রাখুন।
- প্রতি এক বা দুই মাস পর পর ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দিয়ে সোফা পরিষ্কার করুন। এটি নিশ্চিত করা গেলে সোফার ফেব্রিক সবসময় নতুনের মতই দেখাবে।