ইলিউশন-১৪৪ : শিশুর ‘ডুপ্লেক্স’ খাট

বাচ্চাদের ঘুমানোর খাট নিয়ে অনেকেই বিড়ম্বনায় পড়েন। কারণ বাচ্চার বয়স ৪ পার হবার পর মূল বেডে সবার একসাথে শোবার জায়গা হয়না, আর বাচ্চাও একসাথে আর থাকতে চায়না। এই সমস্যার দূর করবে শিশুদের জন্য বানানো হাতিল-এর ডুপ্লেক্স খাট। বিশেষ করে ইলিউশন-১৪৪ এমন একটি খাট যা দোতলা খাটের ডিজাইন থাকার কারণে দুজন বাচ্চাকে যার যার স্থানে একসাথে ঘুমানোর সুবিধা দেয়। চলুন আজকের ব্লগে জেনে নিই কি কি রয়েছে ইইলউশন-১৪৪ এর মত খাটে।

ইলিউশন-১৪৪ কিভাবে বাচ্চাদের ঘুমানোর সমস্যা দূর করে?

আগডুমের বয়স ৮ বা ৯। ক্লাস টুতে উঠেছে মাত্র। আগডুমের যমজ ভাই বাগডুমও একই বয়সী। বাড়িতে ওদের এমন অদ্ভুত নামে ডাকে মা-বাবা। একই রকম দেখতে দুজন। কথাবার্তাও একই রকম। দুজন একসাথে খায়, একসাথে খেলে, একসাথে ঘুমায়। দুষ্টুমিটাও করে একসাথে। আনিসা-শান্ত দম্পতি হিমশিম খায় ছেলেদের ডাবল দুষ্টুমি সামলাতে। আগডুম ও বাগডুমের রুমে পাশাপাশি দুই খাট। একটা আগডুমের, অন্যটা বাগডুমের। রুমের অর্ধেকের বেশি জায়গা দখল করে রেখেছে এই দুই খাট। দেড় বছর হলো ছেলেদের জন্য আলাদা রুম সাজিয়েছে আনিসা ও শান্ত। তবে স্কুল শুরু হওয়ার পর তারা টের পেল রুমের জায়গাস্বল্পতা। রুমে দুই সন্তানের ডাবল পড়ার টেবিল ও ডাবল খেলনা রাখার পর রুমটা যেন স্টোররুমে বদলে গেছে। আগডুম-বাগডুম সন্ধ্যার পর দুই টেবিলে পড়তে বসলে পেছনের টেবিলে বসা বাগডুমকে চেয়ার ছেড়ে বের হতে হয় আগডুমকে ডিঙিয়ে। ছোট্ট বাসায় আর কোনো খালি বেডরুমও নেই, যেখানে কিছু জিনিস রাখা যাবে।

শান্ত যখন নতুন বাসা নেওয়ার চিন্তায় ব্যস্ত, তখনই একদিন বাসায় হাজির আগডুম-বাগডুমের প্রিয় রাসেল মামা। আনিসার মুখে সব সমস্যা শুনে হো হো করে হাসতে লাগল মামা। হাসি শেষে মামা পকেট থেকে মোবাইলটা বের করে শান্ত ও আনিসাকে দেখাল হাতিলের ‘ইলিউশন-১৪৪’। হাঁফ ছেড়ে বাঁচল তারা।

ইলিউশন-১৪৪ কী?

‘ইলিউশন-১৪৪’ হলো হাতিল ফার্নিচারের দোতলা কাঠের ডিজাইন। এ ধরনের বিছানা মূলত বাঙ্ক বেড নামে পরিচিত। বাঙ্ক বেড সেট করতে আগডুম-বাগডুমের রুমের বেশির ভাগ জায়গা দখল করে থাকা খাট দুটিকে সরিয়ে ফেলাটা সবার আগে জরুরি। ‘ইলিউশিন-১৪৪’ তাদের ঘরে জায়গামতো বসিয়ে দিলেই বেরিয়ে পড়বে অনেক ফাঁকা জায়গা। এক খাটেই আরাম করে ঘুমাতে পারবে দুই ভাই। শিশুর ঘরের জায়গা বাঁচানোর জন্য দারুণ এক উপায় ‘ইলিউশন-১৪৪’।

শিশুদের জন্য তৈরি এই দোতলা খাটের নকশা করা হয়েছে শিশুদের উপযোগী করে। বিছানার পাশের রেলিংগুলোও নকশা করা হয়েছে বিশেষভাবে। কাঠখোট্টা নকশার বড়দের বাঙ্ক বেডের চেয়ে একদমই আলাদা এটি।

  • আগডুম-বাগডুমের বয়সের তুলনায় শোবার জায়গা বেশ বড়। দুজনই যার যার জায়গায় ইচ্ছেমতো জায়গা দখল করে ঘুমাতে পারবে আরামে। 
  • বিছানা ওপরের অংশে ওঠার জন্য সঙ্গে থাকা সিঁড়িটি বেশ মজবুত ও শক্তিশালী। সিঁড়িটি ব্যবহার করে ওঠানামা করা শিশুদের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ। 
  • মজবুত কাঠ দিয়ে তৈরি বলে ওপরের অংশ পড়ে যাওয়ারও ভয় নেই। ‘ইলিউশন-১৪৪’ বাঙ্ক বেডে শিশুর নিরাপত্তা নিয়ে আপনি থাকতে পারবেন নিশ্চিন্ত।

শিশুর ঘরের জায়গা বাঁচানোর জন্য দারুণ এক উপায় ‘ইলিউশন-১৪৪’

  • আগডুম-বাগডুম অতি দুষ্ট বলে এই বাঙ্ক বেডকে তারা কাজে লাগাতে পারবে আরও বিভিন্নভাবে। 
  • এই খাট হতে পারে তাদের গোপন কেবিন। অথবা লুকোচুরি খেলার সময় লুকোনোর সবচেয়ে আরামদায়ক জায়গা! 

দোতলা খাটের ডিজাইন ইলিউশন-১৪৪ এর খুঁটিনাটি

আপনার প্রিয় সন্তানের ঘুম যেন হয় নিশ্চিন্তে, সেটা নিশ্চিত করতে প্রয়োজন খাটের কাঠ, রং, নকশা ও মাপ জানা। জেনে নিই ‘ইলিউশন-১৪৪’ বাঙ্ক বেডের খুঁটিনাটি।

কাঠ ও অন্যান্য উপকরণ : আমদানিকৃত ক্লিন-ড্রাইড বিচ কাঠের ব্যবহার এই বাঙ্ক বেডের মজবুতের প্রমাণ দেয়। খাটের মজবুত্বে আস্থা হলে ম্যাট্রেসের খোঁজ শুরু করতে পারেন এখনই।

রং ও নকশা : ল্যাকার ফিনিশের অ্যান্টিক রঙের ‘ইলিউশন-১৪৪’। শুধু অ্যান্টিক কালারেই বাজারে পাওয়া যাবে বাঙ্ক বেড ‘ইলিউশন-১৪৪’। পুরো বিছানার সবচেয়ে ভালো দিক এর নকশা। এমন অদ্ভুত ও অসাধারণ নকশার জন্য এর ডিজাইনার নিশ্চয়ই ধন্যবাদ পেতে পারে।

২১২০ মিলিমিটার (৮৩ ইঞ্চি) দৈর্ঘ্য ও ১৪৬০ মিলিমিটার (৫৭ ইঞ্চি) প্রস্থের এই খাট কিছুটা বড় হলেও দুই খাটের তুলনায় আপনার রুমে বেশ কম জায়গায় দখল করবে

মাপজোখ : ১৬৩০ মিলিমিটার (৬৪ ইঞ্চি) উচ্চতার ‘ইলিউশন-১৪৪’ ঠিকঠাক মাপে তৈরি। নিচের ও ওপরের অংশে ঘুমানো কারোরই যেন উচ্চতার সমস্যা না হয়, সে বিষয় মাথায় রেখে উচ্চতা নির্ধারণ করা হয়েছে। ২১২০ মিলিমিটার (৮৩ ইঞ্চি) দৈর্ঘ্য ও ১৪৬০ মিলিমিটার (৫৭ ইঞ্চি) প্রস্থের এই খাট কিছুটা বড় হলেও দুই খাটের তুলনায় আপনার রুমে বেশ কম জায়গায় দখল করবে। 

দামদর: দারুণ এই বাঙ্ক বেডটি কিনতে হলে আপনাকে খরচ করতে হবে ৯১ হাজার ৫০০ টাকা। সাধারণ আকার, ফেব্রিক ও রঙের পরিবর্তনের ফলে দাম পরিবর্তন হয়। যেহেতু বিছানাটির একটিমাত্র রঙে বাজারে রয়েছে এই পণ্যের অন্য কোনো দাম নেই। হাতিল ফার্নিচারের ওয়েবসাইট থেকে পণ্য কিনলে ইএমআই বা কিস্তির মাধ্যমে টাকা দেওয়ার সুযোগ আছে। 

শেষ কথা

আগডুম-বাগডুমের রুমে সেট করা হয়েছে ‘ইলিউশন-১৪৪’। আগের দুটি খাট সরিয়ে দেওয়ায় বেরিয়ে বেশ অনেকটা ফাঁকা জায়গা। নতুন করে সাজানো হয়েছে তাদের ঘর। দুজনের পড়ার টেবিলে আশপাশে এখন যথেষ্ট জায়গা। এখন আর পড়ার সময় আগডুমকে ডিঙিয়ে বের হতে হয় না বাগডুমের। এখন দুজনের বেশির ভাগ সময় কাটে নতুন খাটে। প্রতি রাতেই দুজনের ঝগড়া লাগে খাটের ওপরের বিছানায় শোয়া নিয়ে। দুজনই চায় ওপরের অংশে ঘুমাতে। আপনি হলে খাটের কোন অংশ বেছে নিতেন? ওপরে, নাকি নিচে?

দোতলা খাটের ডিজাইন নিয়ে কিছু বহুল আলোচিত প্রশ্নোত্তরঃ

দোতলা খাট থেকে পড়ে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে কি?

একেবারেই না। পৃথিবীর সব দেশেই বাচ্চাদের জন্য বাঙ্ক বেড সব জনপ্রিয়। ওয়েস্টার্ন মিডিয়ার হাত ধরে এখন বাংলাদেশেও সেটা দেখা যাচ্ছে। বেডগুলির চারপাশে বেশ উচু প্রটেকশন ফেঞ্চ করা থাকে, যার কারণে ছোট বাচ্চারা ঘুমের মধ্যে পড়ে যাবার কোনো সম্বাবনা নেই। এছাড়া এই খাটে ওঠার জন্য সুন্দর একটা কাঠের সিড়ি আছে যা তেকে পা পিছলে পড়ারও কোনো সম্ভাবনা নেই।

বাঙ্ক বেড কোথায় কোথায় ব্যবহার হতে পারে?

শিশুদের দোতলা বাঙ্ক বেড বাসায়সহ বিভিন্ন বোর্ডিং স্কুল, ডর্মিটরি ও ডে কেয়ার সেন্টারে ব্যবহার করা হতে পারে। এগুলো টেনে নেওয়া বেশ সহজসাধ্য কাজ। কাঠের হবার কারণে কোনোরকম এটাচমেন্ট বা জোড়াতালি দেবার দরকার পড়বে না। 

শিশুরা কেন বাঙ্ক বেড বেশি পছন্দ করে?

সাধারণ বেডের চেয়ে বাঙ্ক বেডের স্টাইল ও ডিজাইন কিছুটা ভিন্ন হয়ে থাকে। ওঠার সিঁড়ি থাকার জন্য বাচ্চাদের কাছে এটা বেশ এডভেঞ্চারাস জিনিস মনে হয়। আবার উপরে ঘুমাতে একটু ভিন্নরকম লাগবে। এসব বেডে চাঁদ, তারাসহ বিভিন্নরকম শেপের ডিজাইন দেওয়া থাকে, তাই শিশুরা শুয়ে পড়লে সহজেই কল্পনার জগতে হারিয়ে যেতে পারে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।