মানসিক সুস্থতা এবং কর্মক্ষেত্রে উন্নতির জন্য একটি সুন্দর সাজানো গোছানো অফিস তৈরি করা অপরিহার্য। আপনি বাড়িতে বা অফিসে কাজ করুন না কেন, শান্তিপূর্ণ একটি জায়গা চাপ কমাতে এবং ফোকাস বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। আজকের এই ব্লগে একটি সুন্দর কর্মক্ষেত্রে তৈরিতে যা করা প্রয়োজন, তা সবকিছুই রয়েছে এখানে। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক-
গুছিয়ে রাখুন
একটি সুন্দর কর্মক্ষেত্র তৈরির প্রথম ধাপ হল আপনার জায়গায়টিতে যেসকল জিনিস রয়েছে তা সুন্দরভাবে গুছিয়ে রাখা। একটি অগোছালো ডেস্ক আপনার মনযোগ নষ্ট করবে, যা আপনার প্রডাক্টিভিটি অনেকটাই কমিয়ে দেবে। কিছু সময় নিয়ে দেখুন আপনার প্রয়োজন নেই বা ব্যবহার করেন না এমন কিছু আপনার ডেস্কে আছে কিনা; থাকলে সেগুলো বিক্রি করে দিন বা ফেলে দিন। ফাইল হোল্ডার, ড্রয়ার ইউনিট ও সাইড র্যাকে আপনার ফাইলসহ যাবতীয় জিনিসগুলো গুছিয়ে রাখুন।
প্রশান্তিদায়ক রং ব্যবহার করুন
রং আমাদের মেজাজ এবং আবেগের উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। অফ হোয়াট টোনের মতো প্রশান্তিদায়ক রং একটি শান্ত পরিবেশ তৈরি করতে পারে। উজ্জ্বল এবং গাঢ় রং ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন, কারণ এগুলো প্রায় সময়ই মনযোগ নষ্ট করে।
প্রাকৃতিক উপাদান
আপনার কর্মক্ষেত্রে প্রকৃতির ছোঁয়া তৈরী করবে একটি শান্ত পরিবেশ। গাছপালা, ফুল এবং প্রাকৃতিক আলোর মতো প্রাকৃতিক উপাদানগুলিকে অফিসে রাখতে পারেন। গাছপালা বাতাসের মান উন্নত করতে এবং স্ট্রেস এর মাত্রা কমাতে সাহায্য করে যা আপনার কর্মজীবন ও ব্যক্তিগত জীবনে যথেষ্ট প্রভাব ফেলে।
আর্গোনমিক ও আরামদায়ক ফার্নিচার
যেহেতু একজন কর্মী দিনের অনেকটা সময় অফিসে কাজ করে, তাই অফিসের জন্য আর্গোনমিক ও আরামদায়ক ফার্নিচার সিলেক্ট করুন। এ সকল ফার্নিচার বসে লম্বা সময় কাজ করলেও কোন ধরণের ব্যাক পেইন হওয়ার সম্ভবনা থাকে না। একটি আর্গোনমিক ও আরামদায়ক চেয়ার একজন কর্মীর যেমন শারীরিক নানা ধরণের সমস্যা থেকে বাঁচায় ঠিক তেমনি কাজে মনযোগী হওয়াতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাছাড়া অফিসের জন্য ফার্নিচার কেনার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখুন যে আপনি যে সকল ফার্নিচার কেনার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তা আপনার অফিস ইন্টেরিয়রের সাথে ঠিকঠাক ম্যাচ করবে কি না।
নয়েজ এড়িয়ে চলুন
নয়েজ যেকোন কাজের মনযোগ নষ্ট করে। নয়েজ এড়াতে নয়েজ–ক্যানসেলিং হেডফোন ব্যবহার করা যেতে পারে এবং অনেক অফিসে হালকা ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকও ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সবচেয়ে ভালো হয় উচ্চ ট্রাফিক এলাকা বা অনেক শব্দ আছে এমন এলাকা থেকে দূরে অফিস সেট-আপ করুন।
ইউনিকনেস আনুন
আপনার অফিসে আপনি যে জায়গাটিতে বসুন সে জায়াগাটিতে ইউনিকনেস আনতে আপনার ফ্যামিলির ছবি বা কিছু ডেকোরেটিভ আইটেম দিয়ে সাজিয়ে নিতে পারেন। এতে মনে হবে আপনি ফ্যামিলির সাথেই আছেন সব সময়। তাছাড়া কিছু ডেকোরেটিভ আইটেম অফিসে আপনার বসার জায়গাটিকে করে তুলবে ইউনিক।
অ্যারোমাথেরাপি
অ্যারোমাথেরাপি স্ট্রেস কমানোর একটি প্রাকৃতিক উপায়। একটি শান্ত পরিবেশ তৈরি করতে ডিফিউজারে ল্যাভেন্ডার, পেপারমিন্ট বা ইউক্যালিপটাসের মতো তেল ব্যবহার করুন। তাছাড়া, আপনি আপনার কর্মক্ষেত্রে এয়ার ফ্রেশনার ব্যবহার করতে পারেন।
বিরতি
ফোকাস এবং প্রডাক্টিভিটি বজায় রাখার জন্য কাজের মাঝে বিরতি নেওয়া খুবই জরুরী। ৯-১০ ঘন্টা কর্মসময়ে কমপক্ষে ৩০-৪০ মিনিটের জন্য বিরতি নিন। এই সময়টি একটু হাঁটাহাঁটি বা এমন কিছু করতে ব্যবহার করুন যা আপনি উপভোগ করেন।
মেডিটেশন
মেডিটেশন অনুশীলন করতে প্রতিদিন কয়েক মিনিট সময় নিন। এটি স্ট্রেস কমাতে, ফোকাস বাড়াতে এবং সামগ্রিক সুস্থতায় সাহায্য করে।
এই টিপসগুলি অনুসরণ করে, আপনি একটি কর্মক্ষেত্রকে তৈরি করতে পারেন যা শান্তিপূর্ণ, নির্মল এবং প্রডাক্টটিভ। মনে রাখবেন, প্রত্যেকের অফিসই আলাদা, তাই আপনার জন্য কোনটি সবচেয়ে ভাল কাজ করে তা খুঁজে বের করতে বিভিন্ন ধারণা নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে পারেন।