modern sofa modern sofa

রঙিন গল্পে সাজুক প্রিয় মুহূর্তগুলো

আবির (৩৬) ইশিতার (৩৪) এক মেয়ে, রাকা (৭)। এই তিনে মিলেই সংসার। ঢাকা ছেড়ে আসার সময় স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই ভীষণ দুশ্চিন্তায় ছিল, ছোট্ট মেয়েটাকে পরিবার কিংবা আত্মীয়স্বজন ছাড়া কীভাবে বড় করবে? নিজেরাই বা প্রিয়জনদের ছাড়া সময় কাটাবে কী করে! বিপদ-আপদে কে এগিয়ে আসবে? আরও হাজারো চিন্তা মাথায় লাগেজ বেঁধে রওনা দিয়েছিলো এই পরিবার। তিন বছর পর কিন্তু গল্পটা পালটে গেছে!  

নতুন বাসা সাজাতে তো হবে, পারিবারিক বাসাটাকে মিস করে গালে হাত দিয়ে বসে থাকলে কি আর জীবনটা থেমে থাকবে? অচেনা শহরে ভালো ফার্নিচার মার্কেট কোথায়, কোন দোকানে যত্ন করে বানাবে, কেমন দরদাম করা উচিত এসব ভেবে আবিরের মাথায় হাত। তখন ইশিতাই পরামর্শ দেয় এসব অপ্রয়োজনীয় ঝামেলা না করে ব্র্যান্ডেড ফার্নিচার কিনতে। ফার্নিচারের ডিজাইন খুঁজতে গিয়ে কিছু ডিজাইন তার বেশ ভালো লেগে যায়। ডিটেইলস চেক করতে গিয়ে দেখে হাতিল-এর ওয়েবসাইটে নিয়ে যাচ্ছে লিংকগুলো। দাম দেখলো, কিছু কাস্টমার রিভিউ পড়লো, মা-বাবা আর শ্বশুর-শাশুড়ির সাথে আলাপ করলো। তারপর দুইয়ে দুইয়ে চার মিলিয়ে দেখা গেলো হাতিল-এর সোফা সেট যেকোনো বানানো ফার্নিচারের চাইতে বেটার কোয়ালিটি পাওয়া যাবে, খরচ সেই একই। 

Leather Sofa

সুতরাং শুরু হলো ঘর সাজানোর অভিযান। আবিরদের ফ্ল্যাটটা নতুন হলেও ঘরগুলো বেশ বড় বড়। দুইটা আলাদা সোফা সেট অনায়াসে রাখা যায়। ইশিতা আবারও ভেটো দিলো। দুইটা আলাদা সেট কিনতে চাইলে ধীরে ধীরে বাজেট করে করা যাবে, সমস্যা নেই। আপাতত ঘর একটু ফাঁকা ফাঁকাই থাকুক না! অতএব, সোফা সেট হবে একটাই। এতে মুশকিল বাড়লো বৈ কমলো না। বাড়ির বাইরে নিজেদের প্রথম সংসারের প্রথম সোফা সেট হওয়া চাই সেইরকম ইউনিক! যে দেখবে, সে-ই বাহবা দিবে। এতগুলো ডিজাইন দেখেছে ওয়েবসাইটে, একটা দুইটা সোফা তো পছন্দ হয়েই যাবে। এই আশায় তিনজনে চললো শহরের সবচেয়ে বড় হাতিল শোরুমে। গিয়েই অবাক! একটা-দু’টা নয়, এখানে যা দেখে, তা-ই কিনে ফেলতে মন চায় এমন অবস্থা! আবির বলে, “শোরুম বিশাল, বসার জায়গা আছে। আমি মিসেসকে বললাম ধীরে ধীরে সময় নিয়ে চলো সবগুলো সোফা দেখি আর ক্রাইটেরিয়া মিলাই।” 

modern sofa

শর্টলিস্টে আসে Jubba-340, Awash-339, Glasgow-213, Niger-305 আর Anderson-279। সবগুলোর বেলাতেই কারণ একই, সোফা সেটগুলো বড় আর দারুণ ফ্লাফি। বড় সোফাতে বেশি মেহমান এলেও জায়গা হয়ে যাবে আর রাকা যেমন চঞ্চল, তাতে খেলতে খেলতে হঠাৎ পড়ে গেলে ফ্লাফি সোফায় ব্যথা পাবে না। এবার শুরু হলো ভোটাভুটি। আবির চায় Awash কিংবা Jubba, আর ওদিকে ইশিতা চায় Glasgow কিংবা Anderson। ৫০-৫০ ভোট, সুতরাং আবির মেয়েকে দলে টানার চেষ্টা করতে থাকে এবং সফলও হয়! অতঃপর বাবা-মেয়ের পছন্দে বাসায় এলো নতুন Awash-339। সাথে এলো Spoonbill-168 আর Mozart-111। এই দিয়ে শুরু লিভিং রুমের যাত্রা, তারপর ধীরে ধীরে আরও অনেককিছুই যুক্ত হয়েছে তাদের ভালোবাসার নীড়ে। কিন্তু কাকতালীয়ভাবে তিনজনেরই বাসায় ফেভরিট প্লেস হলো এই লিভিং রুম! বিশাল সোফায় হাত-পা ছড়িয়ে আড্ডা আর খুনসুটিতে মেতে ওঠে ছোট্ট পরিবারটি। 

অচেনা শহর ধীরে ধীরে চেনা হয়েছে, পরিচিতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে বহুগুণ। এখন গেস্টদের নিত্য আসা-যাওয়া লেগেই থাকে। নানা মানুষের নানা গল্প আর হাসির আওয়াজে মুখরিত থাকে আবির-ইশিতার সংসার। কত স্মৃতি যে জমেছে এই বাসার কোনায় কোনায়! বাসাটা ইউনিক স্টাইলে সাজানোর জন্য প্রচুর ঝক্কি পোহাতে হয়েছে দু’জনকে। কিন্তু বাসায় ঢুকে ইন্টেরিয়র আর ফার্নিচারের প্রশংসা করে না এমন মানুষ পাওয়া যাবে না। Awash-এর ডিজাইনটা সবারই নজর কাড়ে। যে আসে, সে-ই কথা বলে এটা নিয়ে। আবির-ইশিতার পছন্দের ছাপ লেগে আছে সোফাটায়, তাই মনে হয় যেন তাদের সংসারের জন্যই এই সোফা তৈরি হয়েছে! 

L shaped sofa

আবির অফিস থেকে ফেরার পর এখানে বসেই মেয়ের সারাদিনের গল্প শোনে। ইশিতা মা-বাবা আর শ্বশুর-শাশুড়ির সাথে রোজকার রুটিন কলগুলোও এখানে বসেই সেরে নেয়। আবার মাঝে মাঝে রাকা এখানে বসেই হোমওয়ার্ক করে। আর মাঝরাতে ফুটবল ম্যাচ থাকলে সোফা এবং টিভি থাকে আবিরের দখলে! 

এভাবেই জীবনের একেক অধ্যায়ে নতুন নতুন গল্প তৈরি হবে আর সেই গল্পগুলোতে একান্ত আপনজনের মতোই মিশে থাকবে হাতিল ফার্নিচার। 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।