পোষা প্রাণী থেকে ফার্নিচার যত্নে রাখতে যা করবেন

ঘরে পোষা প্রাণী রাখার বিষয়ে অনেকেই বেশ আগ্রহী থাকেন। পোষা প্রাণীদের মধ্যে বিড়াল, কুকুর, কিংবা পাখি পোষ মানাতেই বেশিরভাগ সময়ে দেখা যায়। কখনো মায়ার বশে, কখনো নিতান্তই শখের কারণে ঘরে মায়াময়ী এ ধরনের প্রাণীদের রাখা হয়। যার কারণে মানুষের মতো এদেরও সুস্থতা, খাওয়াদাওয়া, বিশ্রাম এ সকল বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়া অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়ে। অন্যদিকে ঘরে পোষা প্রাণী রাখলে তা ঘরের সম্পূর্ণ আবহকেই পাল্টে দেয়। ঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা এবং ঘরে যে সকল ফার্নিচার আছে তা প্রাণীদের আঁচড় এবং কামড় থেকে যত্নে রাখার বিষয়টিও খেয়াল রাখতে হয়। 

 

ঘরে পোষা প্রাণী এবং ফার্নিচার সবই যেন সুরক্ষিত থাকে, এক্ষেত্রে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন, চলুন সে বিষয়ে কিছু ধারণা নেওয়া যাক। 

 

নিয়মিত ফার্নিচার পরিষ্কার করা 

ফার্নিচার যে নিয়মিত পরিষ্কার রাখা জরুরি, অনেক সময়ই ব্যস্ততা কিংবা অবহেলাবশত আমরা তা ভুলে যাই। সাধারণভাবেই ঘরের ফার্নিচারে ধুলোবালি জমে তা নোংরা হয়ে ওঠে। এছাড়া ঘরে পোষা প্রাণী থাকলে, এর পশম, লালা কিংবা যেখানে-সেখানে মূত্র ত্যাগের কারণে তা ময়লা, দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে ওঠে। এ কারণে নিয়মিত ফার্নিচার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার মধ্যে রাখা প্রয়োজন। কেননা, অনেক সময়ই তাৎক্ষণিকভাবে দাগ বা ময়লা পরিষ্কার না করলে তা স্থায়ীভাবে রয়ে যায়। আর তাই, শখের ফার্নিচারটি যেন অল্প সময়ের মধ্যেই নষ্ট না হয়ে যায় সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। এক্ষেত্রে সোফা, বেড সহ যেকোনো কিছু ফার্নিচার ক্লিনার ব্যবহার করে শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে নিতে হবে। আর সোফার সাথে সংযুক্ত কাপড় হালকা ডিটারজেন্ট দিয়ে অথবা ভ্যাকুয়াম ক্লিনার বা ড্রাই ক্লিনিং মেশিন দিয়ে যত্নের সাথে পরিষ্কার করতে হবে।

পোষা প্রাণীকে যথাযথ ট্রেইনিং দেওয়া

পোষা পাখি কিংবা প্রাণীকে আপনি যেভাবে শেখাবেন একটা সময় পরে গিয়ে তারা তাতেই অভ্যস্ত হয়ে যাবে। অনেক বাসাতেই একের অধিক পোষা প্রাণী থাকে। যারা তাদের খাবারের জায়গা, ঘুমানোর জায়গা, কিংবা বাথরুম ব্যবহারের বিষয়ে ট্রেইনিং প্রাপ্ত হয়ে ওঠে। ফলে পোষা প্রাণীর সংখ্যা যতই হোক না কেন, ঘরের ফার্নিচার থেকে শুরু করে সব কিছুই সঠিকভাবে যত্নে রাখা সম্ভব হয়। এক্ষেত্রে, নিষ্পাপ এই প্রাণীগুলো পুরোপুরিভাবে ট্রেইনিং প্রাপ্ত হলেও ঘরের ফার্নিচার থেকে শুরু করে যেকোনো কিছুই নষ্ট হওয়া বা নোংরা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর তাই, সপ্তাহে অন্তত দুইবার ফার্নিচার ভালোভাবে চেক করে দেখা এবং পোষা প্রাণীদের যথাযথ ট্রেইনিং নিশ্চিত করা জরুরি। 

ফার্নিচার কাভার করে রাখা 

ঘরের প্রতিটি রুমেই যেহেতু ফার্নিচার ব্যবহার করা হয়, তাই সব ফার্নিচার হয়তো কাভার করে রাখা সম্ভব হবে না। তবে সোফা, ইজি চেয়ার, কেবিনেটের উপর পোষা প্রাণীদের চলাচল যেহেতু প্রতিনিয়তই হয়, তাই এই জায়গাগুলোতে কাভার ব্যবহার করা গেলে তা পোষা প্রাণীর আঁচড়, মূত্র থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা পাবে। কেননা, কোন ময়লা বা দাগ পড়লে তা সহজেই চোখে পড়বে এবং তৎক্ষণাৎ কাভার খুলে তা পরিষ্কারও করা যাবে। এতে করে ফার্নিচারে সরাসরি কোন ক্ষতি হবে না, বরং কাভারের কারণে ফার্নিচার নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা করা যাবে।

নখ ছোট করে রাখা এবং স্ক্র্যাচিং প্যাডের ব্যবস্থা করা

পোষা প্রাণীদের নখ বড় থাকলে তা দিয়ে তারা ফার্নিচার, দেয়াল সহ বিভিন্ন জায়গায় স্ক্র্যাচ করে আঁচড় ফেলে দেয়। এতে করে ফার্নিচারের বিভিন্ন জায়গায় দাগ পড়ে। রং উঠে যায়, এমনকি বার্নিশও নষ্ট হয়ে যায়। এ ধরনের অবস্থায় ঘরে স্ক্র্যাচিং প্যাড রাখতে পারেন। আর সে সাথে পোষা প্রাণীকে সেভাবে ট্রেইনিং-ও দেওয়া প্রয়োজন। যদিও অবুঝ এই প্রাণীদেরকে তা বোঝানো কিছুটা কঠিন। তাই এর পাশাপাশি নিয়মিত নখ কেটে রাখতে হবে, যেন বাসার শিশুদের আঁচড় দেওয়া এবং ফার্নিচারে স্ক্র্যাচ করার অভ্যাস কিছুটা হলেও কমানো যায়।      

product image

পোষা প্রাণীদের থাকার জন্য আরামদায়ক জায়গার ব্যবস্থা করা

বিড়াল বা কুকুরের বিশ্রাম নেওয়া কিংবা ঘুমানোর জন্য ঘরে আরামদায়ক জায়গা করে দিলে তারা সোফা বা বেডে না ঘুরে বরং আরামদায়ক জায়গাটিতেই গিয়ে বিশ্রাম করবে। যেহেতু জায়গাটি লোম, ময়লা এবং গন্ধযুক্ত হয়ে থাকবে, তাই, ঘরের অন্যান্য জায়গার মতো পোষা প্রাণীর বেডটিও নিয়মিত পরিষ্কারের মধ্যে রাখতে হবে। 

 

ঘরে পোষা প্রাণী থাকলে ঘর কিছুটা এলোমেলো হবে এমনটাই স্বাভাবিক। তবে সহজ কিছু উপায় মেনে চললে ফার্নিচার সহ ঘরের প্রতিটি জিনিসই যত্নে রাখা সম্ভব। 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।