আপনাকে যদি বলি, চোখ বন্ধ করে একটা ফার্নিচারের ফ্যাক্টরি চিন্তা করুন। কী আসছে মাথায়? অনেক অনেক কাঠের সমারোহ? যার জন্য দিন দিন বন উজাড় হচ্ছে? এর মাঝে অনেকখানি কাঠ আবার কোনো কাজে আসছে না, ফেলে দেয়া হচ্ছে। সাথে উড়ে আসছে স-ডাস্ট, মানে কাঠের মিহি গুঁড়ো। এই গুঁড়ো পুরো জায়গার বাতাসটাকে দূষিত করে ফেলছে, এই ফ্যাক্টরিতে ঢুকতেই যেন দম আটকে আসছে। এর সাথে রয়েছে রঙের কড়া গন্ধ আর প্রচুর বিদ্যুৎ আর জ্বালানী খরচ।
এবার চোখ খুলে, নিজের ড্রইং রুমে সাজিয়ে রাখা, শখ করে কেনা, সোফা সেটটার দিকে তাকান। শখ কিংবা প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে গিয়ে নিজেও কি পরোক্ষভাবে অংশ হয়ে যাচ্ছেন এই পরিবেশের প্রতি এই আগ্রাসনের?
পরিবেশের সুস্থতা নিশ্চিত করে আপনার শৌখিনতা এবং প্রয়োজনীয়তাকে পূরণ করতে হাতিল নিয়ে এসেছে পরিবেশ বান্ধব, টেকসই, এবং নান্দনিক আসবাবপত্র। চলুন এবার ঘুরে আসি আরেকটা ফার্নিচারের ফ্যাক্টরিতে, হাতিলের ফ্যাক্টরিতে।
টেকসই উপকরণ নির্বাচন: যেকোনো কিছুতেই সুন্দরভাবে বেড়ে উঠতে হলে যেমন তার ভিত্তি মজবুত হতে হয়। হাতিলের পরিবেশবান্ধব এবং টেকসই আসবাবপত্র নির্মানের শুরুটাও হয় সঠিক উপকরণ নির্বাচন থেকে। শুধুমাত্র মুখের কথায়ই নয়, বরং হাতিলের রয়েছে Forest Stewardship Council (FSC)-এর মত অনেক স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রাপ্ত সার্টিফিকেট যা নিশ্চিত করে যে হাতিলের আসবাবপত্রে ব্যবহৃত কাঠ পরিবেশবান্ধব বন থেকে আসে।
উৎপাদনে নৈতিকতা: সঠিক উপকরণের পরেই চলে আসে, তা উৎপাদনের পর্ব। এই পর্বে দরকার হয় প্রচুর মানবসম্পদের আর পরিবেশ সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি, যা অসম্পূর্ণই থেকে যায় যদি না সুষ্ঠভাবে মানবসম্পদকে ব্যবহার করা হয়। হাতিল ন্যায্য শ্রম প্রতিষ্ঠা, নিরাপদ কাজের পরিবেশ প্রদান, এবং কর্মীদের কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য নিবেদিত। পণ্যের সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করে হাতিল, কর্মীদের অন্তর্ভুক্তি, সমতা, এবং মর্যাদার সংস্কৃতিকে লালন করে।
পরিবেশ বান্ধব প্যাকেজিং: উৎপাদনের পরের ধাপ প্যাকেজিং-এর সময়ে, হাতিল পুনর্ব্যবহারযোগ্য উপকরণ ব্যবহার করে এবং দক্ষ প্যাকেজিং ডিজাইনের মাধ্যমে বর্জ্য, এবং তার পরিবেশগত প্রভাব হ্রাস করে। সাথে নিশ্চিত করে, পণ্যের নিরাপদ বিতরণ।
দক্ষ লজিস্টিকস: সুবিন্যস্ত প্রক্রিয়া, অপ্টিমাইজড ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট এবং কৌশলগত বন্টন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে হাতিল তার গ্রাহকদের কাছে আসবাবপত্রের সময়মত এবং পরিবেশবান্ধব উপায় বিতরণ নিশ্চিত করে। পরিবহন নির্গমন কমিয়ে এবং সঠিক রাস্তা নির্বাচন করার মাধ্যমে, হাতিল তার কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমিয়েছে। সাথে বজায় রেখেছে চমৎকার গ্রাহক সেবা।
শিল্প বর্জ্যের পুনর্ব্যবহার: শুরুতে যখন চোখ বন্ধ করেছিলেন, তখন কী ভেসে উঠেছিল? অনেক কাঠের মিহি গুঁড়ো এবং ব্যবহারের অযোগ্য কাঠের টুকরো? কিন্তু হাতিল এই সমস্যার একটি উদ্ভাবনী সমাধান খুঁজে পেয়েছে, হাতিল তাদের ফ্যাক্টরিতে সেন্ট্রাল ডাস্ট কালেকটর সেত-আপ করেছে যা বাতাসের সাথে মিশে যাওয়া কাঠের মিহি গুড়ো পরিবেশের ছড়িয়ে যাওয়ার আগেই কালেক্ট করে এক ধরণের মণ্ডতে রুপান্তর করে, জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এভাবে হাতিল জীবাশ্ম জ্বালানীর উপর নির্ভরতা এবং উৎপন্ন বর্জ্যের পরিমাণ কমিয়ে ফেলে।
নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার: ফার্নিচারের ফ্যাক্টরি মানেই তাতে দরকার প্রচুর বিদ্যুৎ। পরিবেশবান্ধব উৎপাদনের পাশাপাশি বিদ্যুৎ সংরক্ষণেও পিছিয়ে নেই হাতিল। হাতিল তার প্রতিটি ছাদের উপর সৌর প্যানেল স্থাপন করেছে, যাতে এই বিপুল পরিমাণ শক্তির চাহিদার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ সৌর শক্তি ব্যবহার করে, হাতিল তার কার্বন ফুটপ্রিন্ট হ্রাস করছে এবং আরও টেকসই ভবিষ্যতে অবদান রাখছে।
স্থায়িত্ব: কাঁচামাল সংগ্রহ থেকে শুরু করে গ্রাহকের কাছে পৌঁছানো পর্যন্ত, পুরো প্রক্রিয়া যত পরিবেশবান্ধবই হোক না কেন, তা বিফলে চলে যায় যদি আসবাবপত্র টেকসই না হয়, অর্থাৎ গ্রাহককে বারবার তা পরিবর্তন করতে হয় এবং ফলাফলস্বরূপ উৎপাদন বৃদ্ধি পায়, সাথে উৎপাদন পরবর্তী বর্জ্যও। তাই দক্ষ কারিগর এবং মানসম্পন্ন নির্মাণ কৌশল নিযুক্ত করার মাধ্যমে, হাতিল নিশ্চিত করে যে তাদের আসবাবপত্র গ্রাহকের সামনে স্থায়িত্বের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে।
এখন বেরিয়ে আসি হাতিলের ফ্যাক্টরি থেকে, চলে যাই ছোটবেলায়। মনে আছে, ছোটবেলায় মা যখন আমাদের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে পুষ্টিকর খাদ্য খাওয়াতে চাইতেন, অথচ আমাদের মনে গেঁথে গিয়েছিল যে খাদ্যে পুষ্টিগুণ বেশি হলেই তার স্বাদ কমে যাবে? তেমনি নিশ্চয়ই মনে হচ্ছে যে, এত পরিবেশবান্ধর আসবাবপত্র দেখতে হয়ত খুব একটা জুতসই হবে না। ছোটবেলায় মা যেমন আমাদের এই ভ্রান্ত ধারণাকে ভেঙ্গে দিতেন, সেভাবে হাতিলও এমন ধারণার উর্ধ্বে গিয়ে আপনার সামনে এনে দিচ্ছে নান্দনিক সব আসবাবপত্র। হাতিল প্রমাণ করেছে যে পরিবেশবান্ধব থেকেও গ্রাহকের মনমতো আসবাবপত্রের যোগান দেয়া সম্ভব এবং ইন্ডাস্ট্রি লিডার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে এক অনন্য উদাহরণ।