দুজনের মিলিত প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠে একটি স্বপ্নের সংসার। নতুন সংসার মানেই নতুন একজনের সঙ্গে নিজের জীবন ভাগাভাগি করে নেওয়া। কিন্তু এই নতুন সংসারে দরকার হয় সংসারের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। অনেকেই যে ভুলটা করে থাকেন তা হলো আগে থেকে বুঝতে পারেন না কেমন ফার্নিচার কিনলে সংসার অল্প জিনিসেই সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। তাই আজকের পোস্টে আমরা বলবো বিয়ের পরই প্রথম কি কি জিনিস কিনবেন এবং কিভাবে সঠিক জিনিসটা খুঁজে বের করবেন।
আসবাবপত্রের রং ও নকশা কেমন হতে হবে?
আসবাবপত্রের রং ও নকশা ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ঘরের সার্বিক থিম অনুযায়ী আসবাবপত্রের রং ও নকশা নির্বাচন করতে হবে। হালকা রঙের আসবাবপত্র ঘরকে আরও প্রশস্ত ও উজ্জ্বল করে তোলে। গাঢ় রঙের আসবাবপত্র ঘরকে আরও জমকালো করে তোলে। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে, ছোট এপার্টমেন্ট হলে গাঢ় রং বাসাকে খুব অন্ধকারাচ্ছন্ন করে তুলবে, যা মানসিক অস্বস্তির কারণ হতে পারে।
নতুন সংসার সাজানোর জন্য কি কি ফার্নিচার প্রয়োজন?
সংসার সাজানো মানেই নতুন আসবাবপত্র। নতুন আসবাবপত্র বয়ে আনে ঘরের সৌন্দর্য, নতুন সংসারকে ভরিয়ে তোলে সুখে ও স্বাচ্ছন্দ্যে। তাই নতুন সংসার সাজানোর সময় আসবাবপত্র নির্বাচনে দিতে হয় বিশেষ নজর। প্রত্যেকটা রুমের উপযোগী ফার্নিচার না থাকলে রুমগুলোকে সেই ব্যাচেলর বাসার সিংগেল রুমের মতই মনে হবে। নিচের ফার্নিচারগুলো প্রয়োজন হতে পারে—
১. বেডরুমের ফার্নিচার
- সুস্থভাবে ঘুমানোর জন্য আরামদায়ক একটি বেড বেছে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
- পোশাক ও অন্যান্য জিনিস গুছিয়ে রাখতে ওয়ার্ড্রোব প্রয়োজন।
- আয়নার সুবিধাসহ দরকারি প্রসাধনী রাখার জন্য ড্রেসিং টেবিলের বিকল্প নেই।
- বিছানার পাশে দরকারি জিনিস রাখার জন্য লাগবে বেড সাইড টেবিল।
২. ড্রইং রুমের ফার্নিচার
- অতিথিদের বসার জন্য আরামদায়ক সোফা একমাত্র ভরসা।
- খাবার বা ছোটখাটো জিনিস রাখার জন্য সেন্টার টেবিল সেরা সমাধান।
- টিভি ও অন্যান্য ডিভাইস রাখার জন্য টিভি কেবিনেট লাগবে।
- ওপেন শেলফে সাজসজ্জার উপকরণ বা বই রাখতে পারবেন।
৩. ডাইনিং রুমের ফার্নিচার
- পরিবারের সবাই একসাথে খাওয়ার জন্য লাগবে ডাইনিং টেবিল সেট।
- ডিনার ওয়াগনে থালা-বাসন সংরক্ষণ করতে পারবেন।
কিচেনের জন্য ফার্নিচার
রান্নার উপকরণ ও বাসন রাখার জন্য মডুলার কিচেন কেবিনেট প্রয়োজন।
আসবাবপত্র নির্বাচনের বিষয়গুলো
নতুন সংসার সাজানোর সময় আসবাবপত্র নির্বাচনের ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো বিবেচনায় নেওয়া উচিত:
- ঘরের আকার: ঘরের আকার অনুযায়ী আসবাবপত্র নির্বাচন করতে হবে। ছোট ঘরের জন্য বড় আসবাবপত্র নির্বাচন করা উচিত নয়।
- ব্যবহারিকতা: আসবাবপত্রের ব্যবহারিকতাও বিবেচনায় নিতে হবে। যে আসবাবপত্র কেনা হবে তা যেন সুন্দর ও ব্যবহারিক দুটোই হয়।
- বাজেট: আসবাবপত্র কেনার সময় বাজেটও বিবেচনায় নিতে হবে। বাজেট অনুযায়ী আসবাবপত্র নির্বাচন করতে হবে।
- রুচি: আসবাবপত্রের নকশা ও রঙের ক্ষেত্রে নিজের রুচিকে প্রাধান্য দিতে হবে।
আসবাবপত্রের পরিচর্যা কিভাবে করা উচিৎ?
আসবাবপত্রের দীর্ঘস্থায়িত্বের জন্য পরিচর্যা করা প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে, আসবাবপত্র নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। কাঠের আসবাবপত্রের জন্য বিশেষ ধরনের ওয়াক্স ব্যবহার করতে হবে।
১. কাঠের ফার্নিচারের যত্ন
ধুলো ময়লা ঝেড়ে বা পানি ও সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে নিরপাদ রাখলেই কাঠের ফার্নিচার টিকে যাবে বহুদিন।
- প্রতিদিন নরম কাপড় বা মাইক্রোফাইবার কাপড় দিয়ে ধুলো পরিষ্কার করুন।
- নির্দিষ্ট সময় পর পর কাঠের আসবাব পলিশ করুন যাতে উজ্জ্বলতা বজায় থাকে।
- কাঠের ফার্নিচার ভিজে গেলে দ্রুত মুছে ফেলুন, নাহলে কাঠ নরম হয়ে যেতে পারে।
- সরাসরি রোদে রাখলে কাঠ বিবর্ণ হতে পারে, তাই সঠিকভাবে অবস্থান নির্ধারণ করুন।
২. চামড়ার ফার্নিচারের যত্ন
অনেকের বাসায় চামড়ার সোফা ও অন্যান্য ফার্নিচার থাকতে পারে। সেগুলো নরম কাপড় ও কম রিয়েক্টিভ কেমিকেল দিয়ে মুছলে কোনোরকমের বিক্রিয়া হবে না।
- নরম, শুষ্ক বা হালকা ভেজা কাপড় দিয়ে নিয়মিত পরিষ্কার করুন।
- সাধারণ ডিটারজেন্ট বা সাবান ব্যবহার করবেন না, এতে চামড়া ফেটে যেতে পারে।
- অতিরিক্ত আর্দ্রতা বা রোদে রাখলে চামড়া ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
৩. ফ্যাব্রিক সোফা বা চেয়ার পরিচর্যা
ফ্যাব্রিক দিয়ে তৈরি জিনিসপত্র পরিষ্কার করতে সবচেয়ে ভালো কাজ করে ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ও মাইল্ড ক্লিনার। এগুলো ছাড়া অন্য এজেন্ট ব্যবহারে ফ্যাব্রিকের মান কমে যেতে পারে।
- ধুলো, ময়লা ও চুল পরিষ্কার করতে নিয়মিত ভ্যাকুয়াম করুন।
- স্পঞ্জ ও মাইল্ড ক্লিনার দিয়ে দাগ তুলুন, বেশি পানি ব্যবহার করবেন না।
- প্রয়োজনে ফ্যাব্রিক কভার ধুয়ে নিন বা নতুন কভার ব্যবহার করুন।
৪. মেটাল ও গ্লাস ফার্নিচারের যত্ন
শোকেস ও ডাইনিং টেবিলের মত গ্লাস সারফেস পরিষ্কার করতে গ্লাস ক্লিনার এবং মেটাল পার্টস পরিষ্কার করতে অ্রান্টি রস্ট স্প্রে হলো সবচেয়ে সহজ সলুশন।
- গ্লাস টেবিল বা শোকেস পরিষ্কার করতে বিশেষ ক্লিনার ব্যবহার করুন।
- মরিচা থেকে রক্ষা করতে বিশেষত আর্দ্র জায়গায়।
- পানির দাগ বা আঙুলের ছাপ থাকলে দ্রুত মুছুন, নাহলে স্থায়ী দাগ হতে পারে।
৫. প্লাস্টিক ও ল্যামিনেটেড ফার্নিচারের যত্ন
বিভিন্ন ফার্নিচারে প্লাস্টিকের পার্টস বা ফিনিশ থাকতে পারে। এগুলো বেশ সাবধানে নরম কাপড় ও হালকা ডিটারজেন্ট দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
- নরম কাপড় ও সাধারণ ডিটারজেন্ট ব্যবহার করুন।
- ধুলো-ময়লা জমতে দেবেন না, নিয়মিত মুছুন।
- বেশি চাপ দিলে ফার্নিচার ফেটে যেতে পারে, তাই ব্যবহার সতর্কতার সঙ্গে করুন।
নতুন সংসার সাজানোর ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস
নতুন সংসার সাজানোর জন্য বিয়ের আগে থেকেই পরিকল্পনা করতে হবে। আসবাবপত্র কেনার আগে ভালো করে দাম ও মান যাচাই করে নিতে হবে। ঘরের ডেকোরশনের জন্য আসবাবপত্র কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার পছন্দসই কোয়ালিটি, স্টাইলিশ ও মডার্ন যুগের সাথে মানানসই কিনা তারও খেয়াল রাখতে হবে। ব্র্যান্ডের দিকেও দিতে হবে কড়া নজর। বাজারে তো ব্র্যান্ডের অভাব নেই কিন্তু নতুন আসবাবপত্রের উপরেই নির্ভর করছে আপনার নতুন সংসারের স্মৃতি। এই স্মৃতি যেন দীর্ঘস্থায়ী হয় সে জন্য ঘুরে আসতে পারেন দেশের স্বনামধন্য ফার্নিচার ব্র্যান্ড হাতিল -এর নিকটস্থ শো-রুম থেকে। ১২ মাসব্যাপী ০% ইন্টারেস্ট ইএমআই সুবিধায় ঘরের নতুন সংসারটি সাজিয়ে নিন নিজ পছন্দে, নিশ্চিন্তে।
নতুন সংসার সাজানোর ক্ষেত্রে উল্লেখিত বিষয়গুলো বিবেচনায় নিলে আপনার স্বপ্নের সংসারটি হবে সুন্দর ও স্বাচ্ছন্দ্যময়!
সারকথা
বাজারে তো ব্র্যান্ডের অভাব নেই কিন্তু নতুন আসবাবপত্রের উপরেই নির্ভর করছে আপনার নতুন সংসারের স্মৃতি। এই স্মৃতি যেন দীর্ঘস্থায়ী হয় সে জন্য ঘুরে আসতে পারেন দেশের স্বনামধন্য ফার্নিচার ব্র্যান্ড হাতিল -এর নিকটস্থ শো-রুম থেকে। এখানে ১২ মাসব্যাপী ০% ইন্টারেস্ট ইএমআই সুবিধায় ঘরের নতুন সংসারটি সাজিয়ে নিন নিজ পছন্দে, নিশ্চিন্তে। নতুন সংসার সাজানোর ক্ষেত্রে উল্লেখিত বিষয়গুলো বিবেচনায় নিলে আপনার স্বপ্নের সংসারটি হবে সুন্দর ও স্বাচ্ছন্দ্যময়।