How-to-Baby-Proof-your-House How-to-Baby-Proof-your-House

ঘরকে করে তুলুন শিশুর উপযোগী

নতুন শিশু ঘরে এলে মা-বাবার পাশাপাশি অন্যরাও শিশুকে নিয়ে ব্যস্ত থাকে। শিশু ধীরে ধীরে বড় হতে থাকলে, নড়াচড়া শুরু করলে তাকে নিয়ে উদ্বিগ্নতা বাড়তেই থাকে। কখন হামাগুড়ি দিয়ে কোথায় চলে গেল, কোথায় পড়ে ব্যথা পেল౼এসব চিন্তা লেগেই থাকে। যেহেতু, শিশুকে সব সময় চোখে চোখে রাখা সম্ভব হয় না, তাই একেবারে নবজাত হোক কিংবা হাঁটতে শেখা শিশু౼সবার ক্ষেত্রেই প্রথমে ঘরের সুরক্ষা নিশ্চিত করা জরুরি। কীভাবে নিজের ঘরকে শিশুর উপযোগী করা যায়, সেগুলো জেনে নেওয়া যাক।

How to Baby Proof your House

আসবাবে সতর্কতা

নবজাতক হোক কিংবা সদ্য হাঁটতে শেখা শিশু, উভয়ের ক্ষেত্রেই সঠিক আসবাব প্রয়োজন। শিশুর জন্য আলাদা রেলিংযুক্ত খাট ব্যবহার করা সুবিধাজনক। সেটি সম্ভব না হলে খাটের পাশগুলোতে আলাদা রেলিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে যেন শিশু গড়িয়ে পড়ে না যায়।

এ ছাড়া ঘরের ভাঙা পুরোনো জিনিসগুলো মেরামত করতে হবে। কোন আসবাব অমসৃণ রাখা যাবে না। অনেক সময় ছোট ছোট জিনিস শিশুর জন্য বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়ায়। ছোট আসবাবগুলো দেয়ালের সঙ্গে ফিট করে দিলে শিশুর খেলার সময় দুর্ঘটনা হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। যেকোনো ড্রয়ার বা কেবিনেট তালাবদ্ধ করে বা এমনভাবে বন্ধ করে রাখতে হবে যেন শিশু সহজে খুলে না ফেলতে পারে।

How to Baby Proof your House
ফোম বা নরম কাপড় দিয়ে আসবাবের কোনাগুলো ঢেকে দিতে হবে

আসবাবের কোনাগুলো শিশুদের জন্য বিপজ্জনক। তাই ফোম বা নরম কাপড় দিয়ে আসবাবের কোনাগুলো ঢেকে দিতে হবে।

শিশুর নাগালের বাইরে

How to Baby Proof your House
সকেটগুলো বিশেষ ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিতে হবে

ঘরে শিশুদের নাগালে সবচেয়ে বিপজ্জনক হলো বৈদ্যুতিক তার ও সকেট। এগুলো যেহেতু সহজে স্থানান্তারযোগ্য নয় তাই শিশুদের নিরাপদ রাখতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সে ক্ষেত্রে সকেট ঢেকে দেওয়ার অনেক ধরনের ঢাকনা পাওয়া যায়, সেগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে৷ বৈদ্যুতিক তারও উঁচুতে শিশুর নাগালের বাইরে রাখতে হবে।

বিভিন্ন ওষুধ, কীটনাশক বা ছুরি, কাঁচি, সুই ইত্যাদি ধারালো বস্তু যথাসম্ভব শিশুর নাগালের বাইরে রাখতে হবে।

সতর্কতা কিচেন ও বাথরুমেও

How to Baby Proof your House
সকেটগুলো বিশেষ ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিতে হবে

অন্যান্য ঘরের তুলনায় কিচেন ও বাথরুম শিশুদের জন্য অনিরাপদ। সে জন্য সব সময় কিচেন ও বাথরুমের দরজা ভালোভাবে বন্ধ করে রাখতে হবে যেন শিশুরা সহজে খুলে ফেলতে না পারে। আবার যেহেতু খোলা কিচেনে দরজা থাকে না সে ক্ষেত্রে কিচেনের সব কেবিনেট তালাবদ্ধ করে রাখা বা বিশেষ ক্লিপের মাধ্যমে আটকে রাখাটাই নিরাপদ।

বাথরুমে কমোডের ঢাকনা আটকে রাখার বিশেষ ক্লিপ ব্যবহার করলে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা থেকে বাঁচা সম্ভব। বাথরুমের সাবান, শ্যাম্পুসহ অন্যান্য প্রসাধনসামগ্রী শিশুর নাগালের বাইরে রাখতে হবে। পানির নল খুব ভালোভাবে বন্ধ রাখতে হবে।

শিশুর উপযোগী বাড়ির আঙিনা

যাদের বাড়ির সামনে আঙিনা আছে তাদের সচেতন থাকতে হয় একটু বেশি। শিশু হামাগুড়ি দেওয়া বা হাঁটতে শুরু করলে বাড়ির আঙিনাও শিশুদের উপযোগী করে তোলা জরুরি হয়ে পড়ে৷ বাড়িতে পুকুর বা সুইমিংপুল থাকলে সেখানে রেলিং দিতে হবে। আঙিনার গাছে বেড়া দিতে হবে যেন শিশু ফুল-পাতায় সহজে হাত না দিতে পারে। গাছে কীটনাশক ব্যবহার না করাই ভালো।

বাড়িতে একাধিক তলা থাকলে সিঁড়িতে বিশেষ রেলিং দিয়ে সুরক্ষিত করতে হবে যেন শিশু সহজেই সিঁড়িতে না যেতে পারে।

পরিষ্কার ও মসৃণ মেঝে

হামাগুড়ি বা হাঁটতে শেখা শিশুর প্রথম ধাপই শুরু হয় ঘরের মেঝেতে। সে জন্য দরকার মসৃণ মেঝে। মেঝেতে কোনো ফাটল থাকলে বা অসমতল হলে সেগুলো দ্রুত মেরামত করতে হবে।

মেঝেতে নরম কার্পেট ব্যবহার করলে শিশু পড়ে গেলে মারাত্মক ব্যথা পাওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। সে ক্ষেত্রে এমন কার্পেট ব্যবহার করতে হবে যেন সেটি সহজে পিছলে না যায়।

এ ছাড়া মেঝে সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে। ঘরের ভেতরে ঢাকনাওয়ালা ময়লার ঝুড়ি ব্যবহার করতে হবে। যেন শিশু সহজেই ময়লা ধরতে না পারে।

দরজা ও জানালায় অধিক সতর্কতা

সদ্য হাঁটতে শেখা শিশুরা শুধু দরজা খোলা পেলেই বেরিয়ে যেতে চায়। সে জন্য সদর দরজা সব সময় বন্ধ রাখতে হবে। দরজায় এমন তালা ব্যবহার করতে হবে যেন শিশু সহজে খুলতে না পারে। অনেক সময় শিশুরা খেলার ছলে জানালা দিয়ে বিভিন্ন জিনিস ফেলে দেয়। সে ক্ষেত্রে জানালায় ধাতব বা কাপড়ের জাল ব্যবহার করা যেতে পারে। তা সম্ভব না হলে জানালার বাইরে কাপড় ঝুলিয়ে রাখলে জিনিসপত্র নিচে পড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা পাবে।

সর্বোচ্চ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ঘরকে শিশুর উপযোগী করে তোলার এই উপায়গুলো আপনাদের জন্য কতটা কার্যকরী তা কমেন্ট করে জানাতে পারেন।

 

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।