প্রায় আধপাগল একজন তরুণ হলুদ পাঞ্জাবি গায়ে খালি পায়ে সারা শহর হেঁটে বেড়াচ্ছেন, বইয়ের তাকে হাত দিলেই তার হাঁটার সঙ্গী হয়ে উঠবেন আপনিও। ব্যস্ত ক্যারিয়ার আর সংসারের দায়িত্বে কাবু হয়ে গেলেও বইয়ের তাকই আপনাকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারে কৈশোরে। যেই কৈশোরে হিমু হতে চাইতেন। কিংবা তোপশের জায়গা কল্পনা করতেন নিজেকে।
ভয়ংকর কোনো খুনের রহস্য সমাধান করতে গিয়ে এখনই খুনসুটিতে মেতে উঠবেন ফেলুদার সাথে। বইয়ের তাকেই আপনার জন্য অপেক্ষা করছে হ্যারি-রন-হারমিওনিরা। চাইলে এখনই তাদের বন্ধু হয়ে উঠতে পারবেন আপনিও।
যেই বইয়ের তাক পৃথিবীর এত গল্প, এত অনুভূতি একসাথে নিজের মধ্যে ধরে রাখে, সেই বইয়ের তাক নিয়ে তো ভাবনাচিন্তা করতে হবেই। একসময় এ দেশে বইঘর শুধু অভিজাত বাড়িতেই দেখা যেত। বই ছিল তাদের আভিজাত্যের প্রতীক। যত সময় গিয়েছে, বই ততই হয়ে উঠেছে গণমানুষের। এখন প্রায় প্রতিটি শিক্ষিত পরিবারের বাসাতেই বই রাখার একটি আলাদা জায়গার ব্যবস্থা করা হয়। কখনো বৈঠকখানার দেয়ালজুড়ে, কিংবা কখনো শোয়ার ঘরের একটি কোনায় দেখা দেয় সারি সারি বই।
বাসার কোন রুমে কেমন ধরনের বইয়ের তাক রাখতে পারেন, চলুন সেটা জেনে নেওয়া যাক:
বৈঠকখানায় বইয়ের তাক
বৈঠকখানা কিংবা লিভিংরুম সাধারণত বাসার একেবারে মাঝখানে থাকে। বেশির ভাগ বাসাতেই প্রতিটি কোনা থেকেই লিভিংরুম দেখা যায়। অতিথিরা বাসায় এলেও লিভিংরুমেই বিচরণ করেন। ফলে বইয়ের পাশাপাশি ফটোফ্রেম, পুুরস্কার, শোপিস কিংবা অন্যান্য অনেক কিছু সাজিয়ে রাখতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে বইয়ের তাক।
প্রদর্শনী এবং সজ্জাই লিভিংরুমে অগ্রাধিকার পায়। তাই লিভিংরুমে সাধারণত খোলা বইয়ের তাক ব্যবহার করারই প্রচলন বেশি। এখনকার আধুনিক সজ্জার বাসাবাড়িতে ছিমছাম নকশার বইয়ের তাকগুলোর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। আপনার লিভিংরুমে প্রাণ এনে দেবে ক্লোডিও-১২৬ বইয়ের তাকটি। আধুনিক ডিজাইনের এই বইয়ের তাকে বইয়ের পাশাপাশি ফটোফ্রেম কিংবা নানা ধরনের শোপিসও রাখা যেতে পারে। আরেকটু বড় বইয়ের তাক খুঁজতে চাইলে আপনার পছন্দ হতে পারে ভার্স-১৩ বইয়ের তাকটি।
অনেক বৈঠকখানাতেই বড় বইয়ের তাক রাখার জায়গা থাকে না। তখন দারুণ সমাধান হয়ে উঠতে পারে দেয়ালে ঝোলানো যায় এমন বইয়ের তাকগুলো। এগুলোকে হ্যাংগিং বইয়ের তাক কিংবা ওয়াল-শেলফ বলা হয়। এখন প্রায় প্রতিটি আসবাবের দোকানেই ওয়াল-শেলফ পাওয়া যায়। জায়গা কম নেয় বলে আজকাল আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ওয়াল-শেলফগুলো। এগুলো অনেক ট্রেন্ডি ডিজাইনে বানানো হয়ে থাকে। ফলে ওয়াল-শেলফ আপনার বৈঠকখানাকে স্টাইলিশ করে তুলতে পারে।
হাতিলের সাইবিল-১৩৩ চাইলে ওয়াল-শেলফ হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে
হাতিলের সাইবিল-১৩৩ এমন একটি বইয়ের তাক, যা আপনি চাইলে দেয়ালে ঝোলাতে পারবেন। খুবই স্টাইলিশ এই বইয়ের তাকটি হাতিলের সবচেয়ে জনপ্রিয় বইয়ের তাকগুলোর মাঝে একটি।
আরো পড়ুন: বুকশেলফ ডিজাইন: হাতিলের ৪টি আধুনিক বুকশেলফ ডিজাইন
শিশুদের রুমে বইয়ের তাক
পড়ালেখার জন্যই শিশুদের রুমে বইয়ের তাক রাখা প্রয়োজনীয় হয়ে দাঁড়ায়। তবে শুধু পড়ার বই নয়; গল্পের বই, ফাইলপত্র এবং অনান্য দরকারি অনুষঙ্গ গুছিয়ে রাখতেও শিশুদের রুমে বইয়ের তাক প্রয়োজন। ফলে শিশুদের রুমে বইয়ের তাক পছন্দ করার সময় ‘নকশা বা ডিজাইন’ নয়, বরং স্টোরেজ সুবিধা বা ফাংশনালিটির ব্যাপারটিই অগ্রাধিকার পায়। আবার শুধু স্টোরেজ সুবিধা নিয়ে ভাবলেই হবে না। শিশুদের ক্ষেত্রে এমন সব আসবাবই বেছে নেওয়া উচিত, যেগুলো তাদের বয়স এবং মননের সাথে মানিয়ে যায়।
হাতিলের রবিনসন-১৩২ বইয়ের তাকটিতে প্রচুর স্টোরেজ সুবিধা পাওয়া যায়। আবার বইয়ের তাকের ওপরে কাচের দরজা থাকাতে নানা কিছুর প্রদর্শনীও সম্ভব। রোজিনি-১২৮ একটি বড় ও খোলা বইয়ের তাক। এই বইয়ের তাকে বাচ্চাদের বইখাতা সহজেই গুছিয়ে রাখা যাবে। একই সাথে এটি রুমের সজ্জাতেও যোগ করবে অন্য রকম শৈলী। বইয়ের তাক পছন্দের সময় শিশুদের স্বাচ্ছন্দ্যবোধের ব্যাপারটিও মনে রাখা প্রয়োজন।
হাতিলের রবিনসন-১৩২-এ আছে অনেক স্টোরেজ স্পেস
শোবার ঘরে বইয়ের তাক
মানুষ তাদের শোবার ঘরে আরাম এবং স্বাচ্ছন্দ্য চায়। বই পড়তে পছন্দ করেন এমন মানুষদের জন্য আরাম এবং রিফ্রেশমেন্টের অংশ হয়ে ওঠে তাদের প্রিয় বইগুলো। সারা দিনের কাজের চাপ ঘাড় থেকে ঝেড়ে ফেলতে বিছানায় গা এলিয়ে বই পড়ার চেয়ে ভালো উপায় আর কীই-বা হতে পারে?
এ ছাড়া বইয়ের তাকে কাছের মানুষদের সাথে ছবি রাখা প্রিয় স্মৃতি রোমন্থনের একটি দারুণ উপায়। বই এবং অন্যান্য জিনিস সাজাতে আপনার কাজে আসতে পারে হাতিলের ওপেন শেলফ কালেকশনের বইয়ের তাকগুলো। এই সিরিজের ইলিয়াড-১০৭ এবং গালিভার-১১০ হাতিলের সবচেয়ে জনপ্রিয় বইয়ের তাকগুলোর কয়েকটি।
জনপ্রিয় বইয়ের তাকের মধ্যে রয়েছে হাতিলের গালিভার-১১০
বাসার অব্যবহৃত কোনায় বইয়ের তাক
প্রতিটি বাসাতেই কিছু খালি কর্নার থাকে। এই ছোট স্পেসগুলোতে খুব বড় কিছু রাখা সম্ভব নয়। আবার এগুলোকে কোনো কাজে ব্যবহার করাও যায় না। খালি পড়ে থাকা এসব কর্নার ছোট ছোট বইয়ের তাক দিয়ে সাজাতে পারলে পুরো বাসার আবহটাই পাল্টে যেতে পারে।
হাতিলের ক্লোডিও-১২৬ এমনই একটি বইয়ের তাক, যেটা যেকোনো কোনায় মানিয়ে যাবে। স্যুম্যান-১৩৪ বইয়ের তাকটির ডিজাইন খুবই চমৎকার। যেকোনো কোনায়ই এই ধরনের বইয়ের তাক যোগ করবে দুর্দান্ত শৈলী। এসব অব্যবহৃত কোনায় রাখতে পারেন ওয়াল-শেলফও। সে ক্ষেত্রে দেখে নিতে পারেন হাতিলের ওয়াল-শেলফের কালেকশন।
বাসার অব্যবহৃত কর্নারের জন্য হাতিলের ক্লোডিও-১২৬
বইয়ের তাকের সাহায্যে কীভাবে বাসা সাজাতে পারবেন, সে বিষয়ে তো আজকে অনেক কথা হলো। হাতিলের কোন বইয়ের তাকটি আপনার সবচেয়ে বেশি পছন্দের, তা এখনই কমেন্টে জানিয়ে দিন আমাদের।