দেখতে দেখতে চলে এল শীতকাল। শীতের চাদরে ধীরে ধীরে জড়িয়ে পড়ছে আমাদের শহরটা। বছর ঘুরে ধুলো জমানো ট্রাঙ্কগুলো থেকে বের করা লাগছে সোয়েটার, মাফলার, জ্যাকেট, লেপ-কাঁথা আরও কত কী। নিজেদের কাপড়ে পরিবর্তন আনার সাথে সাথে ঘরের সাজগোজও একটু আরামদায়ক করা গেলে মন্দ কী? আবহাওয়ার সাথে তাল মেলাতে ঘরের আবহে কিছু পরিবর্তন আনাটা আবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে। বসার ঘরটা শীতকালের জন্য উপযুক্ত করে নেওয়ার জন্য আমরা নিয়ে এসেছি বিশেষ কিছু টিপস।
অটোমানের রাজত্ব
অটোমান রাজত্ব থেকে অনুপ্রাণিত এই আসবাবটি ঘর সাজানোর ক্ষেত্রে এখনো বেশ নতুন। ছোটখাটো জায়গার মধ্যে বসার ব্যবস্থা করার জন্য অটোমানের জুড়ি নেই। বিশেষ করে বসার ঘরের আকার ছোট হলে অতিথি আপ্যায়নের জন্য অটোমানই হবে সেরা আসবাব। হাতিলের কিংস্পোর্ট- ১০৬ বা মারিয়া- ৩১২ অটোমান বসার ঘরে রাখার জন্য স্টাইলিশ ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। এগুলো শুধু আরামদায়ক বসার জায়গাই না, এতে পাবেন কিছু অতিরিক্ত স্টোরেজের জায়গাও। ছোট কফি টেবিলের বিকল্প হিসেবেও ব্যবহার করা যায় এই আসবাবগুলো। কাঠের কফি টেবিলের তুলনায় অটোমান ঘরকে দিতে পারে আরও অভিজাত, আরামপ্রদ চেহারা। তা ছাড়া উজ্জ্বল রঙের অটোমান ঘরে আনবে বৈচিত্র্য। শুধু রংবদলই নয়, অটোমান পাওয়া যায় বিভিন্ন প্যাটার্নেও।
হাতিলের কিংস্পোর্ট- ১০৬
বড় সোফা মানেই বেশি আরাম
বসার ঘরের আকারটা একটু বড় হলেই লম্বা আকারের সোফাগুলো ব্যবহার করা উচিত। বড় সোফা বা “সেকশনাল” সোফা বসার ঘরটাকে দিতে পারে আরও আরামদায়ক ও ঘনিষ্ঠ আবহ। কিছুটা ডিভান ও সোফার মেলবন্ধনে তৈরি এই “সেকশনাল” সোফাগুলো। আমাদের দেশের বসার ঘরগুলোতে “সেকশনাল” সোফা তুলনামূলকভাবে নতুন একটি সংকলন। তবে আরামের দিক দিয়ে এগুলোর তুলনা হয় না। তা ছাড়া বড় আকারের সোফা হওয়ার সুবাদে কিছু কিছু ডিজাইনে স্টোরেজও যোগ করা হয়। এমন একটি সোফা হাতিলের সিমসবারি- ২৮৫। এই সোফাটিতে বেশ কিছু রঙের অপশনও পেয়ে যাবেন আরামদায়ক ও কার্যকর ডিজাইনের পাশাপাশি।
স্টোরেজ ব্যবস্থাসহ হাতিলের সিমসবারি-২৮৫ সোফা
তা ছাড়া ট্যানজেরিন-২৬১ বা হাস্কি-২৯৯ ও বসার ঘর সাজানোর জন্য উপযুক্ত সোফা। বসার ঘরের ফরমাল চেহারার সাথে সামান্য আমন্ত্রণের আমেজ যোগ করতে আরামদায়ক সেকশনাল সোফার জুড়ি নেই।
প্রাকৃতিক আলোর প্রাচুর্য
ছোটবেলার শীতের সকালে রোদ পোহানোর কথা মনে পড়ে? ব্যস্ত জীবনে শীতের রোদের স্বাচ্ছন্দ্যটা প্রায়ই ভুলে থাকি আমরা। বসার ঘরকে শীতের আরামে পরিপূর্ণ করতে শীতের সকালের রোদের প্রয়োজন। পর্যাপ্ত আলো আর বাতাসের চলাচল বসার ঘরে হচ্ছে কি না, তার জন্য প্রথমতই দেখতে হবে প্রতিটি জানালা যেন উন্মুক্ত রাখার ব্যবস্থা থাকে। জানালার সামনে উঁচু আলমারি বা কেবিনেট রাখা যাবে না। জানালার সামনে আসবাব যদি রাখতেই হয় তবে ছোট আকারের কেবিনেট রাখা উচিত। পর্দা সাধারণত হালকা রঙের হলেই বেশি ভালো দেখায়। হালকা রঙের পর্দার পাশাপাশি সহজেই যেন পর্দা সরিয়ে আলো ঘরে প্রবেশ করতে দেওয়া যায়, এই ব্যবস্থাও নিশ্চিত করতে হবে। পর্যাপ্ত সূর্যালোক সহজেই আপনার ঘরকে দেবে স্বাচ্ছন্দ্যময় চেহারা। বসার ঘর অন্ধকার হলে দেখতে স্বাভাবিক আকারের থেকেও বেশি ছোট লাগে। তাই ঘরের আকার বড় করার জাদুর রহস্য হলো ঘরে প্রাকৃতিক আলোর প্রাচুর্য নিশ্চিত করা।
সঙ্গী বানান বইকে
শীতের সকালের রোদ, এক কাপ কফি, হাতে প্রিয় বই౼এর থেকে আরামদায়ক কিছুর কথা তো চিন্তাই করা যায় না। প্রিয় বইগুলো রাখার জন্য শ্রেষ্ঠ জায়গা হয়ে উঠতে পারে বসার ঘরটিই। বইয়ের মাঝে অন্তর্নিহিত একটা গুণ আছে, মানুষকে নিজের করে নেওয়ার। ওয়ালের সাথে রেখে দেওয়া যায় ছোট থেকে মাঝারি আকারের কোনো বুকশেলফ। কেবিনেটের মাঝেই যদি বুকশেলফ পাওয়া যায়, তবে তো আর কথাই নেই। হাতিলের রবিনসন-১৩২-এ পাবেন কেবিনেট ও বুকশেলফ দুটিই। ঘরে শোপিস সাজিয়ে রাখার পাশাপাশি প্রিয় বইগুলো থাকবে হাতের কাছেই।
একই ফার্নিচারে পাবেন কেবিনেট ও বুকশেলফ দুইটিই
ল্যাম্পের সঠিক ব্যবহার
সাজ কি শুধু ফার্নিচারেই? আলো, বাতাস, রং౼সবকিছু দিয়েই যাচাই করতে হয় ঘরের সৌন্দর্য। কারণ ঘর সাজানোর সার্থকতা পাঁচটি ইন্দ্রিয় দিয়ে অনুভব করা যায়। দিনের বেলা যেমন প্রাকৃতিক আলোর প্রয়োজন, তেমনি রাতের জন্য দরকার লাইটিংয়ের সুব্যবস্থা। উষ্ণ টোনের আলো ঘরকে দেবে সেই আরামদায়ক আমেজটা। তাই ঘরের সাধারণ আলোর ব্যবস্থার পাশাপাশি, সাজানোর জন্য রেখে দিন টেবিল ল্যাম্প বা ফ্লোর ল্যাম্প। ঘরের পর্দা বন্ধ করার পর এই ল্যাম্পগুলোই ঘরকে দেবে পর্যাপ্ত আলো। ল্যাম্প ব্যবহারের সুবিধা হলো, এগুলো শুধু আলোর উৎসই নয়, চোখে দেখতেও বেশ ভালো লাগে। পছন্দমতো রং বা প্যাটার্নের ল্যাম্পশেড পুরো ঘরের চেহারায় সুন্দর সমতা এনে দিতে পারে। দেয়ালের আলোর উৎসগুলো নির্দিষ্ট জায়গার ওপর ফোকাস সৃষ্টি করতে পারে না। পছন্দমতো জায়গায় টেবিল বা ফ্লোর ল্যাম্প রেখে এই নির্দিষ্ট জায়গাগুলোতে ফোকাস আনাটাও বেশ সহজ। বই পড়া বা অল্প মানুষের অন্তরঙ্গ অনুষ্ঠানগুলোর জন্য ল্যাম্পের উষ্ণ টোনের আলোই উপযুক্ত।
নিজস্বতা আনার উপায়
বসার ঘরটা অন্তরঙ্গ ও আমন্ত্রণের ভাব আনতে কিছু নিজস্বতা আনা প্রয়োজন। ফরমাল সাজ বর্জন করে কিছুটা ব্যক্তিগত ছোঁয়া যোগ করলে ঘরটি হয়ে উঠবে আরও অনেক বেশি সুন্দর। পারিবারিক ছবি, প্রিয় টুকিটাকি, শোপিস, স্মৃতিফলক ইত্যাদি সাজিয়ে রাখতে পারেন বসার ঘরের কেবিনেট ও আলমারিতে। হাতিলের হ্যারিটেজ-১০১ এবং সিবিল-১৩৩ এ ক্ষেত্রে উপযুক্ত আসবাব। ছোটখাটো শোপিস প্রদর্শনের জন্য স্টাইলিশ ডিজাইনের কেবিনেট হিসেবে এই দুটি আসবাব হবে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। হ্যারিটেজ-১০১-এর কাচের আবরণের ফলে অভিজাত রূপের পাশাপাশি প্রিয় শোপিসগুলো থাকবে ধুলোমুক্ত। তবে কাচের আবরণ না চাইলে সিবিল-১৩৩ নিয়ে নিতে পারেন সহজেই।
শীতের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার পাশাপাশি, প্রস্তুত করে নিন নিজের ঘরকেও। আরামদায়ক ও আমন্ত্রণমূলক বসার ঘর সাজাতে অনুসরণ করুন আমাদের এই টিপসগুলো।