পুরনো কিচেনের ডিজাইন আধুনিক প্রয়োজন মেটাতে ব্যর্থ হয়। যেমনঃ সঠিক স্টোরেজ, স্পেস ও আলো-বাতাস না থাকাতে রান্নাঘর ব্যবহারে সময় ও শ্রম বাড়ায়। তাছাড়া, আধুনিক অ্যাপ্লায়েন্স ব্যবহারের জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ বা স্থান অপর্যাপ্ত হতে পারে। কিন্তু আপনার রান্নাঘরে কিচেন কেবিনেট ডিজাইন করে সকল সমস্যার সেরা সমাধান পাওয়া যায়। চলুন জেনে নিই কিচেন কেবিনেট সেট করলে কি কি উপকার পাবেন এবং কিভাবে কেবিনেট সেট করবেন।
আরো দেখুন: কিচেন কেবিনেট ডিজাইন দেখতে এখানে ভিজিট করুন
কিচেন কেবিনেটের উপকারিতাসমূহ কি কি?
১. গোছানো স্টোরেজঃ কিচেন কেবিনেট রান্নার উপকরণ, বাসন-কোসন এবং খাদ্য সামগ্রী গুছিয়ে রাখার সুবিধা দেয়। এটি রান্নাঘরকে পরিপাটি রাখে। কেবিনেটগুলো পরপর থাকার কারণে কোথায় কোন জিনিস আছে সহজে খুঁজে পাওয়া যায়।
২. জায়গার সঠিক ব্যবহারঃ কেবিনেট দেয়ালের খালি স্থান ব্যবহার করলে মেঝেতে অনেক জায়গা বেঁচে যায়। অনেকে দেয়ালের সাথে কেবিনেট মাউন্ট করে। এতে হাতের নাগালেই সবকিছু পাওয়া যায়।
৩. নান্দনিকতা বৃদ্ধিঃ কিচেন কেবিনেট রান্নাঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। বিভিন্ন ডিজাইন, রং, এবং ফিনিশিং রান্নাঘরের জন্য আধুনিক ও আকর্ষণীয় চেহারা তৈরি করে।
৪. পরিষ্কার রাখার সহজ উপায়ঃ কেবিনেট ব্যবহারে রান্নাঘর ধুলা-ময়লা মুক্ত থাকে। এছাড়া মেঝে বা কাউন্টারটপ পরিষ্কার রাখা সহজ হয়। পোলিশ করা কাঠে থাকার কারণে হালকা ভেজা ও শুকনো কাপড় দিয়ে নিমিষেই মুছে নেওয়া যায়।
৫. দীর্ঘস্থায়িত্ব ও টেকসইতাঃ উচ্চমানের উপকরণ দিয়ে তৈরি কিচেন কেবিনেট দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহারের উপযোগী হয়। যেমন হাতিলের কিচেন কেবিনেটে হোয়াইট লেমিনেশন করা ভিনিয়ার্ড উডদ ব্যবহার করা হয়।
৬. নিরাপদ স্টোরেজঃ কেবিনেটের টাইট দরজা থাকার কারণে ক্ষতিকর উপাদান যেমন পোকামাকড় থেকে রান্নাঘরের সামগ্রী সম্পূর্ণ রক্ষা করা যায়। মানে আপনার কিচেন ১০০% স্বাস্থ্যকর থাকবে।
৭. ব্যক্তিগতকরণের সুযোগঃ কিচেন কেবিনেট বিভিন্ন আকার, স্টাইল, এবং ফিচারে কাস্টমাইজ করা যায়, যা ব্যবহারকারীর প্রয়োজন মেটায়। আবার বাসা পাল্টালে কেবিনেটগুলোও এক জায়গা থেকে আরেক জায়গাতে নেওয়া যায়।
কিচেন কেবিনেট ডিজাইন – মডিউলার কিচেনের আকার
রান্নাঘরের ইন্টেরিয়র ডিজাইনের বর্তমান ট্রেন্ড হলো “মডিউলার কিচেন।” বিভিন্ন স্টাইল ও ডিজাইনের মডিউলার কিচেন আছে বাজারে। চাইলে হাতিল থেকে নিজের চাহিদা অনুযায়ী রঙ ও সাইজে পছন্দমতো তৈরি করে নিতে পারবেন মডিউলার কিচেন। তবে মডিউলার কিচেনের প্রচলিত কিছু আকার আছে। রান্নাঘরের জায়গা ও অন্যান্য বিষয় বিবেচনা করে যথাযথ আকার বাছাই করাটা জরুরি।
১। ইউ শেপড ডিজাইন
এ ধরনের কেবিনেট গুলো আক্ষরিক অর্থেই ইংরেজি ‘U’ বর্ণের আকারে করা হয়। বিশেষ করে একটু বড় রান্নাঘরে এ আকারের ডিজাইন ব্যবহার করা হয়। বেশি স্টোরেজের প্রয়োজন থাকলে ইউ শেপের কিচেনই বেছে নেওয়া উচিত। রান্নাঘরভর্তি জিনিসপত্র ও একসাথে অনেক কাজ করা যায় খুব সহজেই।
২। স্ট্রেইট লাইন ডিজাইন
এ সময়ের অধিকাংশ ফ্ল্যাটগুলোর রান্নাঘর সাধারণত লম্বাটে হয়। চওড়ায় খুব কম জায়গা পাওয়া যায় এ ধরনের রান্নাঘরে। এ ক্ষেত্রে স্ট্রেইট কিচেন পারফেক্ট। এক সারিতেই রান্নাঘরের প্রয়োজনীয় সবকিছু থাকে এই আকারের রান্নাঘরে। ছোট রান্নাঘরের জন্য এই ছোট কিচেন কেবিনেট ডিজাইন পারফেক্ট।
৩। এল শেপড ডিজাইন
সবচেয়ে বেশি এই আকারের মডিউলার কিচেন দেখা যায়। এটিও আক্ষরিক অর্থেই ইংরেজি ‘L’ বর্ণের আকারের নকশা। বড় বা ছোট দুই ধরনের রান্নাঘরেই এই ডিজাইন উপযুক্ত। এল শেপড কিচেন ডিজাইন করলে খাওয়ার জায়গাটাও হয়ে যায় রান্নাঘরের সাথেই।
৪। আইল্যান্ড ডিজাইন
আইল্যান্ড কিচেনের অন্য নাম ওপেন কিচেন। যারা রান্নাঘরে অনেকটা সময় কাটায় ও খোলামেলা জায়গায় কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে, তাদের জন্য এই আকারের মডিউলার কিচেন উপযুক্ত। এতে দুপাশে দুটো টেবিল সারফেস বা মাঝখানে একটা অতিরিক্ত টেবিল সারফেস থাকে।
আরো পড়ুন: কাঠের কিচেন রেক: সাশ্রয়ী মূল্যে HATIL এর কিচেন রেক কিনুন
মডিউলার কিচেন কেবিনেট কেনার আগে কি কি জানা দরকার?
- মডিউলার কিচেন তৈরির আগে ভেবে নিন আপনি কোন আকারের সেট চাচ্ছেন। রান্নাঘরের জায়গা অনুযায়ী বেছে নিন আকার। কয়জন একসাথে রান্না করবে এটার উপরও ডিজাইন নির্ভর করে।
- স্টোরেজ অর্থাৎ কত বড় কেবিনেট আপনার প্রয়োজন তা ঠিক করে নিন। বাড়ির ছোট ও বয়স্ক সদস্যদের কথা ভেবে কেবিনেটের জায়গা বাছাই করুন। কেবিনেটের বদলে কিচেনের প্রতিটি কোণে ড্রয়ার তৈরি করতে পারেন। এতে অল্প জায়গাতেও অনেক জিনিস রাখতে পারবেন। তবে জায়গা বেশি থাকলে কেবিনেটও লাগাতে পারেন।
- কেবিনেটের সাথে আকার ও থিম মিলিয়ে রান্নাঘরের দেয়ালের রং বাছাই করুন। একাধিক রং ব্যবহার করলে কম্বিনেশন যেন ঠিক থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখুন। কিছুটা হালকা রঙ ব্যবহার করুন যা রান্নাঘরের আলো বাড়িয়ে দেবে। কিন্তু এমন রঙ ব্যবহার করা উচিৎ হবেনা যা অল্পতেই রান্নাঘরের ময়লা ও ধোঁয়াতে নোংরা হয়ে যাবে।
- রান্নাঘরে চলাফেরার জন্য যেন পর্যাপ্ত জায়গা থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখুন। পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে রান্নাঘরের জানালা বড় করুন। সেটা সম্ভব না হলে চিমনি বা ফ্যান লাগাতে পারেন।
আরো পড়ুন: রান্নাঘরের যত কথা
কেন হাতিল থেকে মডিউলার কিচেন কিনবেন?
আরো দেখুনঃ মডিউলার কিচেন কেবিনেট ডিজাইন এর ভিডিওগুলো।
আপনার রান্নাঘরকে নান্দনিক মডিউলার কিচেনে পাল্টে দিতে প্রয়োজন রুচিসম্মত ডিজাইন ও মানসম্মত ম্যাটেরিয়াল। মডিউলার কিচেন তৈরিতে হাতিলের ডিজাইন ও ম্যাটারিয়াল ১০০% ইকো ফ্রেন্ডলি ও মানসম্মত। এখানে সেরা ইঞ্জিনিয়ার ও ক্রাফটম্যানদের হাতে ডিজাইন, ড্রয়িং, ম্যাটেরিয়াল বাছাই ও প্রোডাকশনের সকল প্রসেস সম্পূর্ণ হয়।
হাতিল স্টোরে দাম ও মান অনুযায়ী ৬ রকমের মডিউলার কিচেন ম্যাটেরিয়ালের অপশন পাবেন হাতিলে। বড় রান্নাঘরের পাশাপাশি আপনার ছোট রান্নাঘরের ডিজাইনও পাল্টে দেবে হাতিল। আকার অনুযায়ী দাম নির্ধারণ করা হয় মডিউলার কিচেন তৈরিতে। বিস্তারিত জানার জন্য হাতিল ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।
মডিউলার কিচেন নিয়ে কিছু বহুল আলোচিত প্রশ্নোত্তরঃ
মডিউলার কিচেন কী?
মডিউলার কিচেন হলো এমন একটি রান্নাঘর ব্যবস্থা যা বিভিন্ন মডিউল বা ইউনিট দিয়ে সাজানো হয়। এটি ব্যবহারকারীর প্রয়োজন অনুযায়ী কাস্টমাইজ করা যায় এবং এতে স্টোরেজ, কার্যকারিতা ও নান্দনিকতার ভারসাম্য বজায় থাকে। সাধারণ রান্নাঘরের চেয়ে এ ধরনের কিচেন দেখতেও বেশি স্মার্ট ও ক্লিন মনে হয়।
মডিউলার কেবিনেট কোথায় ইনস্টল করা যায়?
মডিউলার কিচেন ছোট ফ্ল্যাট থেকে বড় বাড়ি পর্যন্ত যেকোনো জায়গায় ইনস্টল করা যায়। এটি অল্প জায়গাতেও জায়গার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করে। এতে একসাথে অনেক রান্নার উপকরণ রাখা যায়। বর্তমানে আধুনিক ডিজাইনের ফ্লাটগুলির সাথে এই কেবিনেট বেশ মানানসই।
মডিউলার কিচেনের খরচ কেমন?
মডিউলার কিচেনের খরচ নির্ভর করে ব্যবহৃত মেটেরিয়াল, ডিজাইন, এবং মডিউলের সংখ্যার ওপর। এটি সাধারণ কাঠের কিচেনের তুলনায় বেশি ব্যয়বহুল। হাতিল থেকে আপনি ৩৪৫০ টাকা/স্কয়ার ফিটে খুব টেকসই এবং ইকো ফ্রেন্ডলি কাঠ পাবেন। এগুলো গ্লাসি এক্রিলিক ফিনিশ ও লিকুইর ফিনিশ হবে।