বড়দিনে ঘরের সাজসজ্জা

শীতকাল এলেই ওমের জামাগুলো বাক্স থেকে বের করার পাশাপাশি শুরু হয় আরেকটি প্রস্তুতি। ২৫ ডিসেম্বর বিশ্বব্যাপী খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীরা তাঁদের প্রধান উৎসব বড়দিন পালন করলেও এর আমেজটা থাকে মাসজুড়ে। নভেম্বর শেষ হতে না হতেই শুরু হয় বড়দিনের প্রস্তুতি। এই প্রস্তুতিতে নতুন পোশাক কেনা থেকে শুরু করে থাকে ঘরের সাজসজ্জাও। প্রতিবছর বড়দিনে ঘর সাজাতে গিয়ে সবাই চান আগের বছরের চেয়ে ভিন্ন কিছু করতে। অন্যান্য উৎসবের সাজের চেয়ে বড়দিনে ঘরের সাজ হয় একদম আলাদা। তাই চলুন এ বছর উৎসবের আমেজে চমৎকারভাবে ঘর সাজানোর দারুণ কিছু উপায় জেনে নিই।

 

ক্রিসমাস ট্রি 

বড়দিনের আমেজ কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয় সুসজ্জিত, আলো ঝলমলে একটি ক্রিসমাস ট্রি। প্রস্তুতির শুরুতেই বাড়ি বাড়ি আনা হয় বিভিন্ন ধরনের ক্রিসমাস ট্রি। ছোট হোক বা বড় বড়দিনে দিনে ক্রিসমাস ট্রি ছাড়া চলেই না। বাসাবাড়িতে ক্রিসমাস ট্রি-টা রাখা হয় মূলত বসার ঘরেই। তাই ক্রিসমাস ট্রি কেনার আগে ঘরের আকার অনুযায়ী বুঝেশুনে কিনতে হবে। বড় বসার ঘরে একটি লম্বা বড় ক্রিসমাস ট্রি বেশ ভালো মানাবে। এটিকে আর আকর্ষণীয় করে তুলতে মেঝেতে বিছিয়ে দিতে পারেন একটি দারুণ কার্পেট। বসার ঘর ছোট হলে সে ক্ষেত্রে মাঝারি বা ছোট আকৃতির ক্রিসমাস ট্রি রাখাটাই মানানসই। চাইলে Curio-104  -এর মতো একটি চমৎকার কর্নার টেবিলে ক্রিসমাস ট্রি সাজিয়ে তৈরি করতে পারেন একটি স্টেটমেন্ট পিস। 

 

কালার থিম 

বড়দিনে ঘর সাজাতে দেশে-বিদেশে সব জায়গায়ই বেছে নেওয়া হয় চিরায়ত লাল-সাদা-সবুজ রং। সাদা পর্দা, সাদা বিছানার চাদর ঘরকে দেবে একটা স্নিগ্ধ পরিবেশ। সাথে সাজকে ফুটিয়ে তুলতে ব্যবহার করা যেতে পারে লাল রঙের বালিশ। সোফায় অনুষঙ্গ হিসেবে লাল, সবুজ রঙের কুশন দেখাবে বেশ সুন্দর। তবে যুগে যুগে বড়দিনের সাজে ও রং বাছাইয়ে এসেছে ভিন্নতা। লাল-সাদা-সবুজের বাইরে আজকাল প্রাধান্য পাচ্ছে সোনালি, রুপালি, নীল, গোলাপি, মেরুন এই ধরনের রংগুলো। সোনালি বা রুপালি ঝালরে ঘর সাজানোর চল এখন। লালের বদলে গোলাপি বা মেরুনও বেশ প্রাধান্য পায়। তবে সব রঙের ব্যবহার একসাথে না করে নির্দিষ্ট একটি থিম ঠিক করে সাজালে ঘর দেখাবে মনোরম। দেয়াল ও আসবাবের রঙের কাছাকাছি একটা কালার প্যালেট তৈরি করে নিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে নীল, গোলাপির বিভিন্ন শেডকে প্রাধান্য দিতে পারেন। এ ছাড়া বিভিন্ন নকশার ব্যবহারও বড়দিনের সাজে দেখা যায়। বাফেলো চেক, পোলকা ডট, বাস্কেট উইভ, হাউন্ড টুথ ইত্যাদি নকশার প্রচলন বড়দিনের সাজে বহুদিন ধরে ব্যবহৃত হচ্ছে। 

 

আরামদায়ক আসবাব

শীতকালে বাড়তি কুশন, বালিশ, কম্বল আরামের পাশাপাশি ঘরের শোভাও বাড়াবে

উৎসবে বাড়িতে মেহমানদের আনাগোনা থাকেই। আর বড়দিন যেহেতু শীতকালের উৎসব, তাই বিভিন্ন ক্ষেত্রে ঘর সাজানোর পাশাপাশি ঘরে আরাম নিশ্চিত করাও জরুরি। বড়দিন উপলক্ষে ঘরে নতুন আসবাব কিনতে হলে ফেব্রিকের বা কুশনিং আসবাব কেনাই ভালো হবে। হাতিলের কুশনিং আসবাবগুলো শুধু শীতকালেই নয়, সব ঋতুতেই বেশ আরামদায়ক ও ট্রেন্ডি। তা ছাড়া সোফায় বারোটি কুশন কিংবা আলাদা একটি রানার রাখা যেতে পারে। এগুলো সোফার অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি আরামও নিশ্চিত করবে। বিছানার ক্ষেত্রেও আলাদা বালিশ, আরামদায়ক কম্বল ঘরকে বাড়তি সৌন্দর্য প্রদান করবে। বিছানা বা সোফার পাশে মেঝেতে পেতে দেওয়া যেতে পারে পশমিনা কার্পেট। 

 

বড়দিনে আলোকসজ্জা

ডিসেম্বরের শুরু থেকে শুধু বাসা নয় গির্জা, শপিংমল, দোকানপাট, রাস্তাঘাট সেজে উঠে ঝলমলে আলোতে। ডিসেম্বরের শুরুতে রংবেরঙের আলোকসজ্জাই জানান দেয় বড়দিনের বেশি দিন বাকি নেই। ক্রিসমাস ট্রিতে ফেইরি লাইটস পেঁচিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ঘরের দরজা ও জানালায়ও ফেইরি লাইটস ঝুলিয়ে দেওয়া যায়। বসার ঘরের সেন্টার টেবিলে কিংবা ডাইনিং টেবিলে সুগন্ধি মোমবাতি রাখা যেতে পারে। সুন্দর কাঠের বা পিতলের নকশা করা মোমবাতির স্ট্যান্ডে জ্বলন্ত মোমবাতি ঘরে মনোরম পরিবেশ তৈরি করবে। তা ছাড়া বড় ঘরের সিলিংয়ে চাইলে ঝাড়বাতি লাগাতে পারেন একটা। সে ক্ষেত্রে ঝাড়বাতিটা হতে হবে ঘরের অন্দরসজ্জার সাথে মানানসই। আবার মিটিমিটি আলোর ছোট ছোট ঝুলন্ত বাতি ছোট বাসার সাজকে পরিপূর্ণ করবে।

 

ঘরের সাজে ডিআইওয়াই

ঘরের সাজে ব্যবহার করতে পারেন ডিআইওয়াই ঝালর

বড়দিনে ঘর সাজাতে হলে যে সব ধরনের অনুষঙ্গ কিনতেই হবে, এমন কোনো কথা নেই। ঘরে থাকা বিভিন্ন জিনিস দিয়েই বানিয়ে ফেলা যায় ‘ডিআইওয়াই’ অনুষঙ্গ। ফেইরি লাইটস কাচের বোতলে বা নকশাওয়ালা কৌটায় ভরে ঘরে করা যায় অন্য রকম আলোকসজ্জা। লাল-সাদা কাগজ কেটে ঘরের দরজা-জানালার জন্য ঝালর তৈরি করা যায়। সাদা কাগজ কিংবা কর্কশিট কেটে বেশ চমৎকার স্নো ফ্লেক্স বানানো যায়। দরজার সামনে লাগানোর গারল্যান্ডটাও নিজে নিজেই শুকনো ফুল-পাতা, ফিতে দিয়ে চমৎকারভাবে বানিয়ে ফেলা যায়।

বড়দিনের মতো মঙ্গলময় উৎসবে ঘর সাজানোর এই উপায়গুলো এ বছর আপনার জন্য কতটুকু কার্যকর, তা জানাতে পারেন কমেন্টে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।