A smart solution to small space A smart solution to small space

স্মার্ট ফার্নিচার : ছোট্ট বাসার ফার্নিচার সমাধান

স্মার্ট ফার্নিচার হতে পারে আপনার আধুনিক জীবনের সঙ্গী

অর্ণা ও সামিন দুই ভাই-বোন। সব ভাই-বোনের মতো তাদেরও ঝগড়াঝাঁটি লেগেই থাকে। বেশির ভাগ সময়ই তাদের মতের মিল হয় না। তবে তাদের মা-বাবা শফিক ও রুমা হঠাৎ টের পেল দুই ভাই-বোন এক সপ্তাহ ধরে একই অভিযোগ করছে। অভিযোগটা হলো তাদের রুমে জায়গা কম। দুজনকে আলাদা দুটো রুম দেওয়ার পরও কেন তাদের জায়গা হচ্ছে না?

মা-বাবার এমন প্রশ্নের উত্তরে দুই ভাই-বোন সব দোষ চাপিয়ে দেয় রুমভর্তি হরেক রকম ফার্নিচারের ওপর। রুম দুটোয় হাঁটার জন্য শুধু অল্প জায়গা বাকি। নানা রকম ফার্নিচারের শখ পূরণ করতে গিয়ে কখন যে পুরো বাড়ি ফার্নিচারের দখলে চলে গেছে, সেটা টেরই পায়নি শফিক-রুমা দম্পতি।

চলুন, একটু পেছনের সময় থেকে ঘুরে আসি। খুব বেশি না, মাত্র ১৫-২০ বছর। এ শতাব্দীর শুরু দিকটাতেও ঢাকা শহরের বাড়িগুলোর আকার এ সময়ের তুলনায় আলিশান বাড়ির মতোই ছিল। অল্প খরচেই সে সময় পাওয়া যেত বিশাল বারান্দাসহ বড় বড় সব বাসা। বাড়ির সামনে মিলত ছোট্ট খোলা জায়গা। ঘরে ফার্নিচারসহ অন্যান্য জিনিস রেখেও ঘরের ভেতর চলাফেরা করা যেত স্বাচ্ছন্দ্যে।

এবার বর্তমানে ফিরি। ঢাকায় দিন দিন বাড়ছে মানুষ, উঠছে দালান। কমছে জমি। জমির সঙ্গে কমছে ফ্ল্যাটের স্পেস, বাড়ছে দাম। অল্প জায়গাতেই তৈরি হচ্ছে একাধিক ফ্ল্যাট, একেক তলায় ৪ থেকে ৬টি অ্যাপার্টমেন্ট। বারান্দা বলতে মাত্র একচিলতে জায়গা। বাড়ি ভাড়ার ঊর্ধ্বগতিতে ছোট বাসা নিয়েই থাকতে হচ্ছে সন্তুষ্ট। সাধ্যের মধ্যে অনেকেরই ছোট বাসাই এখন একমাত্র উপায়। ছোট বাসাকে সঠিকভাবে সাজানো হয়ে দাঁড়িয়েছে বিশাল চ্যালেঞ্জ।

কম স্পেসের বাসায় প্রয়োজনীয় সব ফার্নিচার রাখার পর রুমের জায়গা আরও কমে যায়। ফার্নিচার ও বাসা দুটোর সৌন্দর্যই যেন হারিয়ে যায়। বাসার জায়গা স্বল্পতার কারণে অনেক সময় প্রয়োজনীয় ফার্নিচারটাও কেনা হয়ে ওঠে না। তবে সময় ও পরিবেশে সাথে স্মার্টভাবে খাপ খাইয়ে চলাটাই স্মার্টনেস। ছোট বা কম স্পেসের জায়গায় সৌন্দর্য ও প্রয়োজনীয়তা দুটোই ধরে রাখতে স্মার্ট ফার্নিচারের ব্যবহার সেরা সমাধান।

স্মার্ট ফার্নিচার কী?

স্মার্টফোন আমাদের খুব পরিচিত হলেও স্মার্ট ফার্নিচারের সাথে আমাদের পরিচয়টা কম। আমাদের দেশে এর জনপ্রিয়তা কম থাকলেও প্রতিবেশী দেশগুলোতে স্মার্ট ফার্নিচারের চাহিদা বেশ ভালো। তবে ধীরে ধীরে এ দেশের মানুষও পরিচিত হচ্ছে স্মার্ট ফার্নিচারের সঙ্গে, ব্যবহার বাড়ছে ধীরে ধীরে।

স্মার্ট ফার্নিচার মূলত ফার্নিচারের মধ্যে নতুন এক ধরন। তবে কিছু কিছু স্মার্ট ফার্নিচারের সঙ্গে আমাদের পরিচয় অনেক আগে থেকেই। আমাদের ব্যবহৃত ফোল্ডিং টেবিল ও ফোল্ডিং চেয়ারগুলোও কিন্তু স্মার্ট ফার্নিচার। তবে এসবের বাইরেও স্মার্ট ফার্নিচার আছে আরও অনেক। নতুন নতুন ফিচার ও ডিজাইনে এ সময়ের স্মার্ট ফার্নিচারগুলো যেমন জায়গা বাঁচায়, তেমনি এক ফার্নিচারের মধ্যেই দেয় দুই ফার্নিচারের সুবিধা। আরেকটু খোলাসা করে বলা যাক।

আপনার ড্রয়িংরুমের সোফাটাই হতে পারে আপনার বিছানা। সোফাকে জোর করে বিছানা বানিয়ে কষ্ট করে ঘুমাতে হবে, এমনটা ভাববেন না। আপনার সোফা যদি স্মার্ট ফার্নিচার হয়, তবে সেটা দিনের অন্যান্য সময় সোফা হিসেবে থাকলেও, রাতে ঘুমের আগে সোফার ভাঁজগুলো খুলে খুব সহজেই সোফাকে বানিয়ে নিতে পারবেন পুরোদস্তুর বিছানা।

 

HATIL Divan Juvenile-198

HATIL Divan Juvenile-198 (Frame With Mattress) Single Divan Set

প্রাইজ জানুন

আবার একই সোফাকে আপনি চাইলে অর্ধেক সোফা ও অর্ধেক বিছানা বানিয়েও ব্যবহার করতে পারবেন। সোফা ও বিছানা দুটোই ব্যবহার শেষে ভাঁজ করে ঘরে এক পাশে রেখে দিতে পারবেন। ঘরের মধ্যে অনেকটা জায়গায় খালি পেয়ে যাবেন খুব সহজে। একই ফার্নিচারে এত এত সুবিধা স্মার্ট ফার্নিচারকে করে তুলেছে জনপ্রিয়।

আরো পড়ুন: স্মার্ট ঘরের জন্য স্মার্ট সোফা

স্মার্ট ফার্নিচারের যত সুবিধা

জায়গা স্বল্পতার সহজ সমাধান

স্মার্ট ফার্নিচার ব্যবহারের সবচেয়ে বড় সুবিধাটা আমরা ইতিমধ্যে টের পেয়ে গেছি। নতুন সংসারে ছোট বাসা নেওয়ার পর বিভিন্ন ফার্নিচারের প্রয়োজনীয়তাটা দিন দিন বাড়তেই থাকে। ছোট বাসার মধ্যেই এ প্রয়োজনীয়তার মেটানোর জন্য সংসারের শুরু থেকেই স্মার্ট ফার্নিচার আপনার সঙ্গী হতে পারে। স্মার্ট ফার্নিচার ব্যবহারের অভ্যাস আপনাকে জায়গা স্বল্পতা থেকে শুরু করে আরও অনেক সমস্যার সমাধান দেবে।

ঘরেও হবে হাঁটাহাঁটি

শহুরে জীবন অনেকটাই ঘরবন্দী। এর মধ্যে আবার করোনাকাল যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন না থাকলে বাড়ির সবার এ সময় ঘরে থাকাটাই নিরাপদ। তবে ঘরের মধ্যে অল্পবিস্তর হাঁটাচলা না করলে শরীরের কলকবজায় ধরতে পারে জং।

ফার্নিচার ও ছোট বাসার কারণে ঘরের মধ্যে হাঁটাচলাটাও মাঝে মাঝে মুশকিল হয়ে যায়। ফার্নিচারগুলো ভাঁজ করে ঘরের এক কোণে রাখার ব্যবস্থা আছে স্মার্ট ফার্নিচার। বিভিন্ন রকম স্মার্ট ফার্নিচার আছে বাজারে, যা ব্যবহার শেষে ভাঁজ করে রাখা যায় ঘরের যেকোনো জায়গায়। এভাবে ঘরে আরাম করে হাঁটাচলার সমাধানটাও করবে স্মার্ট ফার্নিচার।

স্মার্ট ফার্নিচার ব্যাবহারে কমবে খরচ

নতুন কোনো ফার্নিচার কেনার জন্য অর্থনৈতিক প্রস্তুতির একটা ব্যাপার থাকে। তবে নতুন সংসারে একের পর এক ফার্নিচার কেনাটা অর্থনৈতিক দিক থেকে অনেকটা কঠিন হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রেও স্মার্ট ফার্নিচারই সহজ সমাধান। স্মার্ট ফার্নিচারের এক আসবাবেই আপনি পাবেন দুই আসবাবের সুবিধা। বেডসাইড টেবিলপড়ার টেবিল যদি এক আসবাবেই পাওয়া যায়, তবে খরচ তো কিছুটা কম হবেই। তবে স্মার্ট ফার্নিচার তৈরি কিছুটা ব্যয়বহুল ও এটাতে দুই ফার্নিচারে সুবিধা পাওয়া যায় বলে সাধারণ একটি ফার্নিচারের তুলনায় এর দাম একটু বেশি।

স্মার্ট ফার্নিচারের নতুন ও অনন্য নকশা আলাদাভাবে নজর কাড়ে। আলাদা ও ভিন্ন ফরম্যাটে স্মার্ট ফার্নিচার তৈরি হয় বলে এর নকশা অন্য সব ফার্নিচারের চেয়ে আলাদাই হয়।

হাতিলের স্মার্ট ফার্নিচার : স্মার্টফিট

আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষ কাঠের আসবাব ব্যবহারে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। তাই হাতিল ফার্নিচার কাঠের স্মার্ট ফার্নিচার তৈরি করছে বেশ কিছুদিন ধরেই। হাতিলের স্মার্ট ফার্নিচার সিরিজের নাম ‘স্মার্টফিট’

 

HATIL Dining Seasame-101 and Yogurt-101

হাতিলের স্মার্টফিট সিরিজের ফার্নিচার ‘সিসেম-১০১ ও ইয়োগার্ড-১০১’

প্রাইজ জানুন

ইতিমধ্যে ১৩টি স্মার্ট ফার্নিচার বাজারে এনেছে হাতিল। স্মার্টফিট সিরিজে সোফা ও বিছানার সমন্বয়ে তৈরি বিভিন্ন রকম স্মার্ট ফার্নিচার আছে। এক ফার্নিচারে চেয়ার ও মই দুইয়ের ব্যবহারই হবে–এমন ফার্নিচারেরও দেখা মিলবে স্মার্টফিটে।

স্মার্ট ফার্নিচার কতটা টেকসই, সেটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। কাঠের সব আসবাবেও এ ব্যাপারটা জরুরি। হাতিল এই দুইয়ের সমন্বয় ঘটিয়েছে স্মার্টফিটের সিরিজে। হাতিল ফার্নিচারের সব ফার্নিচারের মতোই স্মার্টফিটের ফার্নিচারগুলোও মজবুত ও টেকসই।

আরো পড়ুন: এ সময়ের ফার্নিচার : স্মার্টফিট

শেষ কথা

স্মার্ট ফার্নিচারের বর্তমান বাজার ও চাহিদা থেকে বোঝা যায় ভবিষ্যতের সব ফার্নিচারই হবে স্মার্ট ফার্নিচার। জীবনকে সহজ করে তুলতে মানুষ ঝুঁকছে অভিনব এই ফার্নিচারের দিকে। লেখার শুরুতে বলা শফিক-রুমা দম্পতিও অবশেষে স্মার্ট ফার্নিচারের দিকে ঝুঁকেছে। পুরোনো ফার্নিচার বিক্রির পর কেনা হয়েছে স্মার্ট ফার্নিচার।

অর্ণা ও সামিনের রুম দুটির অর্ধেক জায়গা এখন ফাঁকা। অর্ণা রুমের ফাঁকা জায়গায় প্রতিদিন সকালে ইয়োগা করে। আর সামিন তার রুমের ফাঁকা অংশে ঝুলিয়েছে পাঞ্চিং ব্যাগ। করোনাকালে দুই ভাই-বোন সারা দিন বাসায় থাকলেও, ঝগড়াঝাঁটি অনেকটা কমে গেছে। দুজন মিলে সারা দিন নতুন স্মার্ট ফার্নিচারের খুঁটিনাটি ঘাঁটতে ঘাঁটতেই দিন কেটে যায় তাদের।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।