আমাদের নিত্যজীবনে যেমন প্রয়োজন হয় জুতার, তেমনই জুতার জন্য প্রয়োজন হয় জুতার রেক বা তাকের। ঘর থেকে বের হওয়ার আগে এবং ঘরে ফেরার পরই যে আসবাবটি আমাদের সবার আগে ব্যবহার করতে হয়, তা হলো জুতার তাক। আবার শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষানির্বিশেষে সব ঋতুতেই অন্যান্য আসবাবের চেয়ে জুতার তাককেই মানিয়ে নিতে হয়।
কারণ, সবচেয়ে বেশি ঝঞ্ঝাট যায় এই জুতার তাকের ওপর দিয়েই। কিন্তু ছোট্ট এই জিনিসটা কেনার আগে, কেনার পরও খেয়াল রাখতে হয় প্রচুর। কেমন ঘরে কেমন তাক রাখা যায়, কীভাবে যত্ন নেওয়া যায় জুতার তাকের খুঁটিনাটি জেনে নেওয়া যাক আজ।
জুতার তাকের তুলনা
ড্রয়ার ও একাধিক তাকবিশিষ্ট জুতার রেক নিত্যব্যবহারে বেশি উপযোগী
Link: https://hatil.com/shoe-rack/helsinki-101
ঘরের অন্যান্য আসবাব কাঠের হলে জুতার তাকও কাঠের কেনা যায়। আবার সুন্দর ডিজাইনের প্লাস্টিক বা স্টিলের তাকও ব্যবহার করা যেতে পারে। প্রতিদিনের ব্যবহারের জন্য দরজাওয়ালা বদ্ধ রেক ব্যবহার করাই ভালো। এতে বাইরে থেকে এলোমেলো জুতা দেখা যাবে না। ঘরে বেশি মানুষ হলে একটু বড় ধরনের জুতা রাখার রেক কেনা উচিত। ঘরে কম মানুষ থাকলে এক বা দুই তাকবিশিষ্ট ছিমছাপ জুতার শেলফই যথেষ্ট। ড্রয়ারওয়ালা জুতার তাক কিনলে ড্রয়ারটা ব্যবহার করা যায় পরনের মোজা, জুতার কালি, ব্রাশ ইত্যাদি রাখার ক্ষেত্রে। তবে নিজের দামি ও প্রিয় জুতাগুলো সংরক্ষণের জন্য স্বচ্ছ কাচের দরজাওয়ালা তাক উপযোগী।
কোথায় রাখবেন জুতার তাক
প্রিয় জুতা সংগ্রহে ডিসপ্লে শেলফের মতো কাচের দরজাওয়ালা তাক রাখতে পারেন নিজের ঘরেই
Link- https://hatil.com/shoe-rack/edina-106g
জুতার তাক কেনার পর সেটা রাখার স্থান খুঁজে পেতে অনেকের ঝামেলা পোহাতে হয়। তাই তাক কেনার আগেই জায়গা নির্বাচন করে ফেলা ভালো। জায়গার মাপমতো জুতার তাক কিনতে হবে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমরা নিত্যব্যবহারের জুতার তাকটা দরজার বাইরেই রাখি। এতে ময়লা জুতা নিয়ে ঘরে প্রবেশ করার দরকার পড়ে না। দরজার বাইরে জায়গা না থাকলে ঘরের ভেতরে দরজার পাশেই একটি স্থানে জুতার তাক রাখা যেতে পারে। যেন ঘর নোংরা না হয়। তা ছাড়া, কারো যদি বিশাল জুতার সংগ্রহ থেকে থাকে তাহলে ডিসপ্লে শেলফের মতো জুতার তাক নিজের ঘরেই রাখতে পারেন।
গোছানো জুতার তাক
জুতা ও তাক ভালো রাখতে গোছানো তাকের বিকল্প নেই
Link- https://hatil.com/shoe-rack/chelsea-103
শুধু জুতার জন্য রেক বা তাক কিনে ফেলাটাই শেষ নয়। জুতা এবং জুতার রেক উভয়ই ভালো রাখতে গোছানো তাকের বিকল্প নেই। নিত্যব্যবহারের জুতা একটা তাকে রাখতে হবে। যে জুতাগুলো মাঝে মাঝে ব্যবহার করা হয় সেগুলো আলাদা তাকে কোনো বাক্সে ভরে অথবা কাপড়ে মুড়িয়ে রাখতে হবে। এতে তাক কম ময়লা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন ঋতুতে ব্যবহৃত জুতাগুলোকেও আলাদা গুছিয়ে রাখতে হবে। যেসব জুতা আর পরা হয় না, সেগুলো পড়ে থাকতে থাকতে ময়লা জমে, পোকামাকড় হয়। তাই পুরোনো জুতা ছাঁটাই করে সহজেই তাককে গুছিয়ে পরিপাটি করে ফেলা যায়।
জুতার তাকের যত্নআত্তি
জুতার তাকের যত্নে সবচেয়ে জরুরি হলো নিয়মিত তাকটি পরিষ্কার করা। প্লাস্টিক বা ধাতব জুতার তাক মাঝেমাঝেই ঝেড়ে মুছে ভেজা কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করা যেতে পারে। জীবাণু দূর করতে ভিনেগার, সাবান, এবং ডিটারজেন্ট ব্যবহার করা যাবে। কিন্তু কাঠের জুতার তাকের যত্নটা নিতে হবে অন্যান্য কাঠের আসবাবের মতোই। খোলা জুতার তাক হলে খেয়াল রাখতে হবে ধুলাবালি যেন জমতে না পারে। পরিষ্কার করতে হবে নিয়ম করে।
তা ছাড়া জুতায় লেগে থাকা ধুলাবালি, কাদা, এবং অন্যান্য ময়লা পরিষ্কার না করে জুতার তাকে রাখলে অন্য জুতা যেমন ময়লা হতে পারে তেমনই ক্ষতি হতে পারে তাকেরও। তাই ঘরে ঢোকার আগে পাপোশে জুতার তলাটা ভালো করে মুছে তারপর জুতা তাকে রাখতে হবে। জুতা ভেজা থাকলে ঘরে ফিরে সাথে সাথে তাকে না রেখে আগে জুতাটাকে একটু শুকিয়ে নিতে হবে। যাদের পা ঘামে, তাদেরও একই পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। দীর্ঘদিনের জন্য জুতা সংরক্ষণের আগে ভালো করে জুতা পরিষ্কার করে নিতে হবে।এতে জুতার সাথে ভালো থাকবে জুতার তাকও।
অনেক সময় জুতা থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পুরো তাককেই দুর্গন্ধযুক্ত করে ফেলতে পারে। তাই জুতার তাকে দুর্গন্ধ দূরীকরণ ওষুধ ব্যবহার করতে হবে। তা ছাড়া তাকের কোনাগুলোয় বেকিং পাউডার ছড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে। বেকিং পাউডার জীবাণু ধ্বংস করে দুর্গন্ধ দূর করে। এ ছাড়া একটি বাটিতে ভিনেগারযুক্ত পানি ৩০ মিনিট জুতার তাকে রেখে দিলেও দুর্গন্ধ দূর হয়। এগুলো ছাড়াও আরো সহজ ঘরোয়া পদ্ধতি হতে পারে শুকনো টি-ব্যাগ, কমলা অথবা লেবুর খোসা। এগুলোও বেকিং সোডা ও ভিনেগারের মতো সমান কার্যকর।
জুতার তাক নিয়ে এই পরামর্শগুলো আপনার কেমন লাগল, তা জানাতে পারেন কমেন্টে।