‘কমই শ্রেয়’ কথাটির সাথে কমবেশি আমরা সবাই পরিচিত। মিনিমালিস্ট জীবনযাপন করেন যাঁরা তাঁরা মূলত এই নীতিবাক্যে বিশ্বাসী। কিন্তু এই মিনিমালিজম আসলে কী? মিনিমালিজম হলো স্বল্প দখলদারিত্ব। সহজ অর্থে এর মানে প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত সবকিছু দূর করে বসবাসে শুধু যতটুকু প্রয়োজন, তা নিয়ে জীবনযাপন করা এবং তাতে অভ্যস্ত হওয়া। ‘দ্য মিনিমালিস্ট হোম’ বইয়ের লেখক জসুয়া বেকার মিনিমালিজমের এমন সংজ্ঞাই দিয়েছেন। বর্তমানে অনেকেই মিনিমাল লিভিংয়ের দিকে ঝুঁকছেন। শুধু জীবনযাপনে নয়, ইদানীং গৃহসজ্জায় স্মার্টফিটের মতো পরিমিত ফার্নিচার ব্যবহারের মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে মিনিমালিজমের চর্চা। পশ্চিমা বিশ্বে এমন ধারার জীবনযাপনের প্রচলন অনেক আগে থেকে শুরু হলেও বর্তমানে বাংলাদেশেও এটি ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা লাভ করছে।
এখন প্রশ্ন আসতেই পারে, দৈনন্দিন জীবনে কেন প্রয়োজন এই মিনিমালিজম? এককথায় এর উত্তর দিতে গেলে বলা যেতে পারে, মিলিমালিজম আপনার জীবনে আনবে সরলতা, স্পষ্টতা ও প্রশান্তি। বাঁচাবে মূল্যবান সময়, সেই সঙ্গে অনেক ক্ষেত্রে বেঁচে যাবে আপনার কষ্টে অর্জিত অর্থ। জীবনের যত অহেতুক বাড়তি চিন্তায় সময় অপচয়ের হাত থেকে রক্ষা করে, যা আপনার জন্য প্রয়োজনীয় ও মূল্যবান শুধু সেইটুকুতে ফোকাস করতে সাহায্য করে এই মিনিমালিজম। মিনিমালিজমের উদ্দেশ্য আপনাকে জীবনের মূল্য সম্পর্কে দ্বিধান্বিত হতে শেখানো। আধুনিক বিশ্বের বিভিন্ন তারকারাও নিজেদের জন্য এই মিনিমালিস্ট জীবনধারাকে বেছে নিয়েছেন। বিশ্বের একসময়কার অন্যতম ধনী, জনপ্রিয় কোম্পানি অ্যাপলের সহ- প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবসও এর ব্যতিক্রম ছিলেন না। নিজের গৃহসজ্জার ক্ষেত্রে তিনি জোর দিয়েছিলেন মিনিমালিজমে। ফলে আইনস্টাইনের একটি ছবি, একটি ল্যাম্প, একটি চেয়ার ও একটি বিছানা ছাড়া আর তেমন কোনো ফার্নিচার জায়গা করে নিতে পারেনি তাঁর ঘরে।
শিল্পের মাধ্যমে মিনিমালিজমের চর্চার শুরু হলেও আধুনিক জীবনব্যবস্থায় এর চর্চা শুরু হয় বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিক থেকে। তবে ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে এই মিনিমালিজমের চর্চা শুরু হয়েছিল আড়াই হাজার বছর আগে গ্রিক দার্শনিক ডায়োজিনিসকে দিয়ে। কীভাবে? তার উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে ডায়োজিনিস কোনো কুঁড়েঘরে বাস করতেন না, বরং তিনি বাস করতেন বৃষ্টির পানি সংগ্রহের জন্য যে ব্যারেল ব্যবহার করা হতো, সে রকম ফেলে দেওয়া একটি ব্যারেলে।
জীবনধারার পাশাপাশি মানুষ যেহেতু গৃহসজ্জাতেও মিনিমালিজমের দিকে ঝুঁকছে, এর পেছনেও বেশ কিছু কারণ রয়েছে। ঘরের সাজসজ্জার মাধ্যমে আমাদের ব্যক্তিত্ব অনেকাংশে প্রকাশ পায়। আর তাই মিনিমালিস্টরা নিজের প্রিয় ঘরটির জন্য পরিমিত সাজসজ্জা কিংবা ফার্নিচার বেছে নেবেন, এমনটাই স্বাভাবিক। অল্পতেই স্বস্তি, এমন চিন্তাধারার কারণে স্মার্টফিট ও বহু কাজে ব্যবহারযোগ্য ফার্নিচারগুলো জায়গা করে নেয় তাদের পছন্দের শীর্ষে। এমন ফার্নিচার ব্যবহারের ফলে একদিকে ঘর যেমন হবে ছিমছাম ও নান্দনিক, তেমনি অন্যদিকে হবে পরিবেশবান্ধব। নানাবিধ ব্যবহারযোগ্য ফার্নিচার ব্যবহারের ফলে বাড়তি আসবাব কিনে অর্থ অপচয়ের ঝামেলা থাকছে না। ভাবতে হচ্ছে না কোনো বাড়তি আসবাব রাখার জায়গা নিয়ে। আবার অতিরিক্ত ফার্নিচার তৈরির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাঠের জন্য বাড়তি গাছ কাটার প্রয়োজনও পড়ছে না। অর্থাৎ খুব সহজেই ঘর হচ্ছে পরিবেশবান্ধব।
এবার আসি মূল বিষয়ে। আপনিও যদি এমন মিনিমালিস্ট জীবনধারার অনুসারী হয়ে থাকেন কিংবা হতে চান তাহলে কেমন হওয়া চাই আপনার প্রিয় ঘরটি? কিংবা কী ধরনের ফার্নিচার হবে আপনার মিনিমালিস্ট ঘরের জন্য সঠিক ও সেরা? চলুন জেনে নেওয়া যাক :
যেহেতু মিনিমালিজম ধারণা মূলত এসেছে ‘দৃষ্টি মুক্তকরণ’ কথাটি থেকে, তাই মিনিমালিস্ট ঘরের সাজসজ্জার ক্ষেত্রে এমন সব ফার্নিচার বেছে নিতে হবে, যা খুব বেশি জায়গা দখল করবে না। ঘরে যেন হাঁটাচলার জন্য পর্যাপ্ত ফাঁকা জায়গার ব্যবস্থা থাকে, সে বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। হোক সেটা শোবার ঘর, বসার ঘর কিংবা রান্নাঘর।
শোবার ঘরের কথাই ধরা যাক। এখানে আমরা সারা দিনের অনেকটা সময় ব্যয় করি, তাই অন্য সব ঘরের তুলনায় এখানটা হওয়া উচিত ছিমছাম, আড়ম্বরহীন। এর জন্য স্মার্টফিট ফার্নিচার আপনাকে ব্যাপকভাবে সাহায্য করবে। যেহেতু খুব বেশি কিংবা ভারী ফার্নিচার রাখার সুযোগ নেই সেই ক্ষেত্রে আপনার মিনিমাল বেডরুমের জন্য Juvenile-198 কিংবা Fusion-302 স্মার্টফিট বেডগুলো হতে পারে সেরা ফার্নিচার। এসব সোফা বা ডিভান কাম বেডে যেমন থাকছে নানাবিধ ব্যবহারের সুবিধা তেমনি, ব্যবহারের পর প্রয়োজনে ঘরের জায়গা বাঁচাতে ভাঁজ করে রাখার মতো সুযোগও থাকছে এসব আসবাবে। তার মানে বুঝতেই পারছেন অল্পতে নিজের সবটুকু চাহিদা মেটাতে স্মার্টফিট বেডের জুড়ি নেই।
ডিভান কাম বেড Juvenile-198
সোফা কাম বেড Fusion-302
এরপরেই আসা যাক ডাইনিংরুমে। ঘরের অন্দরসজ্জার ক্ষেত্রে ডাইনিংরুমের বিষয়টি বেশির ভাগ সময়ই আমাদের চোখ এড়িয়ে যায়। আপনিও যদি সেই দলের হয়ে থাকেন, তাহলে স্বল্পতে নান্দনিক ডাইনিংরুম পেতে বেছে নিতে পারেন Seasame-101 and Yogurt-101 টেবিল কাম কেবিনেটকে। যাতে থাকছে ডাইনিং টেবিল ও কেবিনেট একই সঙ্গে দুইভাবে ব্যবহারের সুযোগ। তার মানে অযথা অতিরিক্ত আসবাব দিয়ে যেমন ঘরের জায়গা নষ্ট হবে না, তেমনি বেঁচে যাবে আপনার অর্থ। অর্থাৎ মিনিমালিজমের বৈশিষ্ট্য বজায় থাকবে নিখুঁতভাবে।
স্মার্টফিট ডাইনিং টেবিল Seasame-101 and Yogurt-101
সবশেষে আসি মিনিমালিস্ট বসার ঘরে প্রয়োজনীয় আসবাবের আলোচনায়। অল্পতে বসার ঘর সাজাতে আমাদের বেশি ভাগেরই হিমশিম খেতে হয়। কেননা এক সেট সোফা রাখার পর যেন আর কোনো জায়গা ফাঁকা থাকে না ঘরটিতে। আপনার এমন সমস্যার সমাধান করতে আছে Cappuccino-105 and Espresso-105 ও Melon-260-এর মতো ছিমছাম, সাদামাটা তবে নান্দনিক সোফা সেটগুলো। এসব সেটে সোফার পাশাপাশি একই সঙ্গে থাকছে টেবিল সেট, যা প্রয়োজনে খুব সহজেই ভাঁজ করে রাখতে পারবেন। ফলে বাঁচবে জায়গা এবং অর্থ, সেই সঙ্গে পরিপূর্ণ হবে আপনার মিনিমালিস্ট বসার ঘর।
স্মার্টফিট Cappuccino-105 and Espresso-105
মিনিমালিস্ট বসার ঘরের উপযোগী Melon-260
অভ্যন্তরীণ সন্তুষ্টির জন্য বাহ্যিক জগৎকে নিয়মের মাঝে আনা মানেই মিনিমালিজম। এই জীবনধারায় নেই কোনো বাড়তি চাকচিক্য। নিজের ঘর যাঁদের কাছে মুক্ত ভুবন, জীবনধারার পাশাপাশি গৃহসজ্জায়ও তাঁরা বেছে নিতে পারেন মিনিমালিস্টিক ডেকোর স্টাইলকে। আর এতে সাহায্য করতে আপনার পাশে সব সময় আছে হাতিলের স্মার্টফিট কালেকশন।