টি টেবিল মডেল টি টেবিল মডেল

হাতিলের সেরা ৩টি টি টেবিল মডেল; যা আপনার ড্রয়িং রুমের সৌর্ন্দয্যকে বাড়িয়ে তুলবে বহুগুণ

কথায় আছে, “প্রথমে দর্শনধারী, তারপর গুণবিচারী।” বাসায় প্রবেশের পর প্রথম যে স্থানটির দর্শন হয়, তা হলো বসার ঘর। তাই এই ঘরের প্রতিটি বস্তু এমনকি প্রতিটি কোণায় আপনার সুরুচি ও পটুতার ছাপ থাকা অপরিহার্য বৈকি!  এক্ষেত্রে ফার্নিচারের ভূমিকা সর্বাধিক এবং আধুনিক ফার্নিচারের কথা বলতে গেলে টি টেবিল মডেল এর আলাপ না করলেই নয়! একটি মানানসই সেন্টার টেবিল কেবল সৌন্দর্য বর্ধন নয়, বরং সকালের চা থেকে শুরু করে বিকেলের নাস্তা এবং পরিবারের আড্ডা পর্যন্ত সবই সামাল দেবে। তাই আজ আমরা হাতিলের সেরা ৩টি টি টেবিল মডেল নিয়ে কথা বলবো।

হাতিলের সেরা ৩টি টি টেবিল মডেল

ঐতিহ্যগত কারণে কাঠের ফার্নিচারের প্রতি আমাদের সবারই কমবেশি দুর্বলতা রয়েছে। তবে আধুনিক প্রযুক্তির বদৌলতে এখন কাঁচ এবং কাঠের সম্মীলনেও দারুণ সব সেন্টার টেবিল পাওয়া যায়। হাতিল এর ডাইনিং টেবিল গুলো এর দুর্দান্ত উদাহরণ। হাতিলের কিছু বিখ্যাত সেন্টার টেবিল সম্পর্কে চলুন ধারণা নেওয়া যাক –

১। Dove-143

Center Table Dove 143

Check Price

আধুনিক এবং স্টাইলিশ এই সেন্টার টেবিল প্রথম দেখাতেই আপনার নজর কাড়বে! বিচ উড এবং ভিনিয়ার্ড ইঞ্জিনিয়াড উডের ফার্নিচার অর্ডার করতে পারবেন হাতিল ডট কম থেকে।

স্বচ্ছ কাঁচের টপ বিশিষ্ট এই টেবিল অফিস এবং লিভিং রুম দু’জায়গাতেই মানানসই। টেবিলের নিচে কাঠের পাদানিতে বই বা যেকোনো ফুলদানি কিংবা গাছের ছোট টব সৌন্দর্যে অন্য মাত্রা যোগ করবে।

২। Wren-141

Center Table Wren 141

Check Price

এই সেন্টার টেবিলের স্বকীয় স্টাইল আপনার ইন্টেরিয়রের চেহারাই পালটে দেবে! মসৃণ ফিনিশিং এবং নিখুঁত টেক্সচার এই টেবিলকে করেছে আভিজাত্যের আদর্শ নিদর্শন।

টেবিলে অতিরিক্ত জায়গা বা স্টোরেজ সুবিধা তো থাকছেই; প্রশস্ত টেবিল টপে অতিথি আপ্যায়নের যাবতীয় অনুষঙ্গও রাখতে পারবেন অনায়াসে।

৩। Condor-151

Center Table Condor 151

Check Price

ছিমছাম ডিজাইনের এই সেন্টার টেবিল ঘরের মাঝে অথবা একপাশে যেকোনো স্থানে রাখতে পারবেন। ম্যাগাজিন, ফুলদানি এবং অতিথি আপ্যায়নের কাপ, গ্লাস ইত্যাদি সহজেই জায়গা করে নেবে এই টেবিলে। টেবিল টপে কাঠের শৈল্পিক কারুকাজ এবং কাঁচের টপিং একে একইসাথে আধুনিক এবং ক্লাসিক আমেজ দিয়েছে।

সেন্টার টেবিলেই কেন এত উপকারিতা?

আমাদের অধিকাংশেরই বসার ঘরে কফি টেবিল আছে। সেন্টার টেবিল এবং কফি টেবিল দেখতে প্রায় একইরকম হলেও দু’টোর মাঝে রয়েছে সূক্ষ্ম তফাৎ।

সেন্টার টেবিল এমনভাবে তৈরি করা হয় যেন এর চারপাশ ঘিরে, অর্থাৎ একে সেন্টারে রেখে সবাই বসতে পারে। সুতরাং আপনার সোফার সাইজ আর শেপের সাথে সেন্টার টেবিলের সাইজ আর শেপ মেলানো জরুরি।

যেমন ধরুন, আপনার সোফাটি যদি হয় লম্বাটে কিংবা আয়তাকার, তবে সেন্টার টেবিলটিও লম্বা বা আয়তাকার হওয়া উচিৎ।

এক্ষেত্রে ম্যাগাজিন, টিভি রিমোট, শৌখিন টবসহ একটি গাছের চারা, ফুলসহ ফুলদানি, একটি ছোট অ্যাকুয়ারিয়াম ইত্যাদি সেন্টার টেবিলের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিতে পারে বহুগুণ।

অন্যদিকে, কফি টেবিলগুলো অধিকাংশই গোলাকার কিংবা ডিম্বাকৃতি হয়। এই টেবিলগুলোর উচ্চতা হয় সোফার উচ্চতার সমানুপাতিক, কারণ এগুলো সোফার ঠিক পাশেই থাকে। গ্লাস বা কাপ প্রভৃতি রাখার উপযুক্ত করে তৈরি করা হয় এসব টেবিল।

তবে সেন্টার টেবিল ব্যবহারের বিশেষ কোন বাঁধাধরা নিয়ম নেই। কেবল ডিজাইন এবং সাইজের দিক থেকে আপনার প্রয়োজনীয় যেকোনো কাজে মানানসই হওয়া চাই।

আরো পড়ুন: টি-ট্রলি সমাচার

কী কী বিষয় বিবেচনা করা উচিৎ?

Center Table jacobin 174

একটি ফার্নিচার মানে যুগ-যুগের সঙ্গী। তাই হাতে যথেষ্ট সময় নিয়ে, কিছুটা হোমওয়ার্ক বা গবেষণা করে এবং অবশ্যই কেনার সময় যাচাই বাছাই করে ফার্নিচার কেনা খুব জরুরি। নতুবা অসচেতনতায় কেনা ফার্নিচারটি কিছুদিনের মাঝেই আপনার চক্ষুশূল হতে পারে!

চলুন চটজলদি দেখে নেই সেন্টার টেবিল কেনার খুঁটিনাটি –

স্টেপ ১ঃ কাঠের ধরণ এবং স্থায়িত্ব দেখুন

একেক ফার্নিচারের জন্য একেকধরণের কাঠ উপযোগী। আবার একেক কাঠের স্থায়িত্বও একেকরকম। চলুন, বিভিন্ন কাঠের বৈশিষ্ট্য ও স্থায়িত্ব নিয়ে আলাপ করা যাক – 

সলিড কাঠ

অত্যন্ত টেকসই এই কাঠের স্থায়িত্ব বেশ দীর্ঘ। কাঠে লিগনিন পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকায় এসবের তক্তাও টেকসই হয়। সঠিকভাবে রক্ষণাবক্ষেণ করলে কয়েক দশক অনায়াসে চালিয়ে নেয়া যায়। তবে এগুলো খুব একটা আর্দ্রতা প্রতিরোধী হয় না। 

শীশ কাঠ

এই কাঠ তক্তার মান এবং রঙের জন্য খ্যাতি অর্জন করেছে, শীশ কাঠ প্রাকৃতিক ক্ষয় প্রতিরোধী হওয়ায় অত্যন্ত টেকসই। 

এমডিএফ

ফাইবার, রজন এবং মোম দিয়ে তৈরি এই উপাদানটিকে ঠিক প্রকৃত কাঠের অন্তর্ভূক্ত করা যায় না। এটি বাহ্যিক আঘাত প্রতিরোধী নয় এবং শক্ত হলেও কাঠের মতো টেকসই নয়। 

তবে সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ বা মেইনটেনেন্সের মাধ্যমে কয়েক বছর চালানো যেতে পারে। 

আম কাঠ

বাংলাদেশে আম গাছের কাঠ বরাবরই জনপ্রিয়। এই কাঠগুলো মজবুত, টেকসই এবং পরিবেশবান্ধব; আবার সাশ্রয়ীও বটে! তবে এগুলো শীশ কাঠের মতো আর্দ্রতা প্রতিরোধী এবং টেকসই নয়। 

বিচ উড

স্থায়িত্ব এবং উপাদান এই কাঠের সুনাম অর্জনে সহযোগিতা করেছে। এই কাঠের উপর নকশার কারুকাজ নিখুঁত হয়। পাশাপাশি, এটি উচ্চমানের আর্দ্রতা প্রতিরোধী এবং মজবুত।  

বাবলা কাঠ

এই কাঠকে আসবাবের জন্য আদর্শ বলা যেতে পারে। এর ঘনত্ব এবং সেলুলোজের কারণে অত্যন্ত টেকসই। যত্ন সহকারে রাখলে ৪০ বছর পর্যন্তও স্থায়ী হতে পারে!

পার্টিকল বোর্ড

এটি অর্থনৈতিক দিক দিয়ে সাশ্রয়ী। তবে এটি এমডিএফের মতো, টেকসই নয়।

আরো পড়ুন: কম জায়গায় ঘর সাজাতে সোফা কাম বেড

স্টেপ ২ঃ রুমের সাইজ এবং ইন্টেরিয়র দেখুন

সেন্টার টেবিলের নকশা হওয়া উচিৎ ইন্টেরিয়রের সাথে মানানসই। এছাড়াও দেয়ালের রঙ, রুমের মাপ ইত্যাদির সাথে সামঞ্জস্য না থাকলে কোনোভাবেই নান্দনিকতা ফুটে উঠবে না। ইন্টেরিয়র যদি হয় মিনিমালিস্ট বা সাদামাটা, তাহলে টেবিল এবং অন্যান্য ফার্নিচারও সাদামাটা হওয়ায়ই ভালো।

এসবের পাশাপাশি আরো কিছু বিষয় বিবেচনায় রাখা দরকার। যেমন: লিভিং রুম বড়সড় হলে সেন্টার টেবিলও প্রশস্ত হওয়া উচিৎ। সোফার স্টাইল এবং ডিজাইনের সাথেও মিল থাকা জরুরি।

ছোট লিভিং রুমে ছোট সেন্টার টেবিলই মানাবে। অন্যান্য বাড়তি ফার্নিচারও রুম থেকে সরিয়ে ফেললে ভালো হয়। এতে ঘরের পরিবেশটি খোলামেলা হবে এবং হাঁটাচলাতেও সুবিধা হবে। মনে রাখবেন, আপনি আপ্যায়ন এবং অবসরযাপনের জায়গা গড়ছেন, ফার্নিচারের গোডাউন না!

তবে ঘরে একেবারেই জায়গা না থাকা সত্ত্বেও যদি সেন্টার টেবিলের শখ আপনাকে পেয়েই বসে, তবে বারান্দায় কয়েকটি সাধারণ চেয়ারের সাথে নান্দনিক ডিজাইনের একটি সেন্টার টেবিল রাখতে পারেন। অবসরযাপন এবং অতিথি আপ্যায়নের জন্য এটি হবে ব্যতিক্রমধর্মী এক পন্থা!

স্টেপ ৪ঃ পলিশ কেমন পরখ করে নিন

ফার্নিচারের দীর্ঘস্থায়িত্ব এবং উজ্জ্বলতা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে ভালো ফিনিশিংয়ের গুরুত্ব অপরিসীম। হাতিলের অন্যান্য পণ্যের মতোই প্রতিটি সেন্টার টেবিলে ইউরেথেন-এর প্রলেপ দেয়া হয়। ফলে ফার্নিচারগুলো দেখতেই কেবল অভিজাত হয় না, পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকেও রক্ষা পায় বছরের পর বছর।

আরো পড়ুন: ফার্নিচারে মিনিমালিজমঃ কি কি রাখবেন?

পলিশ

কাঠের প্রাকৃতিক রঙ, মান এবং প্যাটার্ন ফুটিয়ে তোলার জন্য পলিশিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হাতিলের প্রতিটি ফার্নিচারের তক্তায় সতর্কতার সাথে রজনের প্রলেপ দেওয়া হয়। ফলে কাঠের জৌলুশ বাড়ে এবং ফার্নিচার স্থায়ী হয়।

স্টেপ ৫ঃ ইউভি ফিনিশিং আছে কিনা যাচাই করুন

এটি ফার্নিচারে স্ক্র্যাচ বা ঘর্ষণজনিত দাগ পড়ার এবং নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি কমায়। কাঠের স্থায়িত্ব বৃদ্ধি করে এবং ফার্নিচারকে মজবুত করে।

আরো পড়ুন: মাল্টিটাস্কিং সোফা: একই সাথে চমৎকার সোফা ও ডিভান

স্টেপ ৬ঃ পেইন্ট চেক করে নিন

পেইন্ট ফিনিশিং হলো কাঠের টুকরোর বাইরের রঙ। এটি ফার্নিচারকে বৃষ্টিপাত এবং প্রখর রোদের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে

টি টেবিল কেনা ও পরিচর্যা নিয়ে কিছু বহুল আলোচিত প্রশ্নোত্তর লিখুন

টি টেবিলের উপকরণ কীভাবে নির্বাচন করা উচিত?

কাঠের টেবিল খুবই টেকসই এবং ক্লাসিক, তবে এর উপরের অংশে স্ক্র্যাচ হতে পারে। গ্লাস টেবিল মর্ডান লুক দেয় এবং পরিষ্কার করা সহজ, তবে সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। মেটাল টেবিল শক্তিশালী, আধুনিক এবং দীর্ঘস্থায়ী, তবে এটি ভারী হতে পারে। MDF বা লেমিনেট টেবিল কম খরচে এবং ভালো ফিনিশিং দেয়, তবে কাঠের তুলনায় কম টেকসই।

টি টেবিলের উপরের অংশে কী ধরনের ডেকোর রাখা উচিত?

ফুলদানী বা সজ্জিত বালিশ ছোট বা মাঝারি আকারে ভালো লাগে। ক্যান্ডেলস বা লাইটিং একটি সুন্দর পরিবেশ তৈরি করতে পারে। বই বা ডেকোরেটিভ পিস রাখা যায়, তবে কম পরিমাণে রাখলে টেবিল গোছানো এবং পরিপাটি থাকে।

টি টেবিলের নীচে কি স্টোরেজ থাকা উচিত?

হ্যাঁ, টি টেবিলের নিচে স্টোরেজ স্পেস থাকা খুবই কার্যকর। আপনি বই, ম্যাগাজিন, রিমোট কন্ট্রোল বা অন্য কোনো ছোট জিনিস এখানে রাখতে পারেন। যদি টেবিলটি ড্রয়ারসহ হয়, তবে আরও বেশি জায়গা পাওয়া যাবে যা ঘরের অগোছালো অংশগুলো গুছিয়ে রাখতে সাহায্য করবে।

পরিশেষে, হাতিলের এই ব্যতিক্রমধর্মী সেন্টার টেবিলগুলো আপনার মন জয় করে নেবে এক পলকেই! তবে ফার্নিচারের মডেল যেটিই হোক না কেন, সঠিক যত্নই একে দীর্ঘস্থায়িত্ব দেয়। আপনার লিভিং রুমটি হোক আপনার ব্যক্তিত্বের বহিঃপ্রকাশ এবং আপনার ফার্নিচার হোক সুদীর্ঘ পথচলার সঙ্গী।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।